বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের Ek প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। প্রায় ৪ দশকের অভিনয় জীবনে বহু জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কখনো স্নেহময়ী মা, কখনো বা দজ্জাল খলনায়িকা- সব চরিত্রেই সাবলীল তার অভিনয়।
বুঝতে পারলেন কোন নায়িকার কথা বলছি? শিরোনাম পড়ে অনেকেই হয়তো আন্দাজ করতে পেরেছেন তিনি কে। হ্যাঁ, এই জনপ্রিয় শিল্পী হলেন অভিনেত্রী সুমিত্রা মুখার্জি। আজও বেশিরভাগ বাঙালি দর্শকদের কাছে তার পরিচয় আম্মা হিসেবেই। “এক আকাশের নীচে” সিরিয়ালের আম্মা চরিত্রটি যে তাকে গোটা কেরিয়ারের সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল সেটা অস্বীকার করা যায় না।
কিন্তু অভিনয় জীবনে যথাযোগ্য সম্মান কোনদিন পাননি সুমিত্রা। ব্যক্তিগত জীবনেও ছিলেন চরম অসুখী। সাংসারিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পে জিতে তিনি বেছে নিয়েছিলেন আত্মহত্যার পথ। আজ আপনাদের জানাবো তার সেই চরম কষ্টের গল্প।
ছোট থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ছিলো নায়িকার। ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম ছবি আজকের নায়ক। মেমসাহেব সিনেমায় উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি সুমিত্রাকে। বসন্ত বিলাপ, দেবী চৌধুরানী, রাগ অনুরাগ, দত্তা, ওগো বন্ধু সুন্দরী, প্রফুল্ল, কলঙ্কিনী নায়িকা, অমর কণ্টক প্রভৃতি জনপ্রিয় সিনেমায় বড় বড় চরিত্রে করেন কাজ। ১০০ র বেশি সিনেমায় অভিনয় করলেও তেমন পুরস্কার বা সম্মান পেলেন না।
আবার সংসার জীবনেও একফোঁটা শান্তি পাননি সুমিত্রা মুখার্জি। প্রযোজক শশধর মুখার্জিকে বিয়ে করেন। জন্ম দেন দুই সন্তানের। কিন্তু দম্পতি কলহের জন্যে অচিরেই শেষ হয়ে যায় সম্পর্ক। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর প্রযোজক রবীন্দ্রনাথ মালহোত্রার সঙ্গে তার প্রেম হয়। কিন্তু বিয়ে আর করেননি নায়িকা। লিভ ইন করেছেন। সুখ মেলেনি তবুও।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একা হয়ে যাচ্ছিলেন। চরম অর্থকষ্ট ছিল সঙ্গী। তাই যে চরিত্র পেতেন সেটাই করতেন তিনি। কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের হতাশার অঙ্গে আর লড়াই না করতে পেরে একটা সময়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। শেষজীবনে সন্তানদের কাছে থাকলেও সাংসারিক অশান্তি তাকে ক্ষতবিক্ষত করেছিল।