নয়ের দশক থেকেই টলিউডের এক জনপ্রিয় মুখ হলেন কনীনিকা বন্দোপাধ্যায়। যাঁর অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা মন জয় করে নেয় সকলের। বাংলা ধারাবাহিকের অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি। তার শেষ ধারাবাহিক ‘আয় তবে সহচরী’ বেশ হিট করেছিল। যদিও শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি মাঝপথেই ধারাবাহিক থেকে অবসর নেন। তারপরেই বন্ধ হয়ে যায় এই ধারাবাহিক। জানা যায়, কনীনিকার শিরদাঁড়ায় অস্ত্রোপচারের পর কণ্ঠস্বরের সমস্যার জন্য তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন এই ধারাবাহিক থেকে।
শুধু ছোটপর্দা নয়, বড়পর্দাতেও একাধিক ছবিতে দেখা গেছে অভিনেত্রীকে। ‘আয় তবে সহচরী’র পর অসুস্থতাকে হারিয়ে ফের শ্যুটিং ফ্লোরে ফিরেছেন তিনি। সম্প্রতি ‘প্রজাপতি’ ছবিতে দেবের দিদির চরিত্রে অভিনয় করেছেন কনীনিকা। সিনেমাটি প্রকাশ পেতেই এতো মানুষ সিনেমা দেখতে গিয়েছে, যা দেখে খুবই খুশি কনীনিকা। তিনি চান ভবিষ্যতে তিনি এরমই সিনেমা করবেন। পাশাপাশি যদি তাঁর পছন্দমতো চরিত্র তিনি পান সাথে হিসাবের অঙ্কটাও তাঁর কাছে যথেষ্ট হয়, তবে তিনি ধারাবাহিকে কাজ করবেন। তবে এখন তিনি তাঁর সন্তানদের মানুষ করার দিকেই বেশি মন দিতে চান।
এবার ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েদের অবস্থান থেকে শুরু করে নারীকেন্দ্রিক ছবি প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেত্রী। অভিনেত্রীর কথায়, “ধারাবাহিক মানে সেখানে থাকবে মেয়েরা। তবে টলিউড জগতে সেভাবে জায়গা নেই মেয়েদের। কোন অভিনেত্রী যদি প্রযোজক সঙ্গে করে ধরে নিয়ে আসতে পারেন তাহলেই তিনি জায়গা পাবেন টলিউডে”।
তিনি আরও বলেন, “যারা প্রোডিউসার ধরে আনতে পারেন না, তারা ভালো অভিনেত্রী হলেও দিনের পর দিন পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে যেতে হয় তাদের। আমার ক্ষেত্রেও এই একই ঘটনা ঘটেছে।আমি জানি আমি প্রডিউসার ধরে আনতে পারি না। নেটফ্লিক্স অ্যামাজন দেখলে বোঝা যায় মেয়েদের নিয়ে এখন কত কাজ হচ্ছে। বয়সটা এখন কোনও ম্যাটার করে না। মা দুর্গাকে দেখে আমরা বয়স দেখে পুজো করি? বাবাদের মায়েদের বয়স হয়ে গেলে কি তারা আমাদের কাছে ফালতু হয়ে যান? কখনোই না।”
পাশাপাশি তিনি এও বলেন, বর্তমানে ওটিটি প্লাটফর্মে মেয়েদের নিয়ে যেভাবে কাজ হচ্ছে, যে ধরনের চরিত্রে তাঁরা অভিনয় করছেন, তা সত্যি প্রশংসনীয়। ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে নায়িকারা বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করছেন, সেখানে বয়সটা ম্যাটার করে না। টলিউডের দিকে তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, “একজন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেই, সন্তান হয়ে গেলেই কেন সে অভিনেত্রী হওয়ার যোগ্য নয়? এটা অবশ্যই বদলানোর দরকার”। তিনি বলেন, বাংলা বা হিন্দি সিনেমাতে মেয়েদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এক্সপেরিমেন্ট করতে করতে নতুন একটা বাজার তৈরি হতে পারে এবং সেটা একজন মেয়ের হাত ধরেও হতে পারে।