আজ থেকে পাঁচ বছর আগে প্রয়াত হন বাংলার স্বনামধন্য অভিনেত্রী বাসবী নন্দী। তাঁকে ঠিক অভিনেত্রী বলা যায় না। তিনি নিজেই ছিলেন এক আস্ত প্রতিষ্ঠান। বাংলা রঙ্গমঞ্চ থেকে সিনেমা সর্বত্রই অবাধ গতি ছিল তাঁর। গান থেকে অভিনয় সব জায়গাতেই নিজের প্রতিভার দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।
বাসবী নন্দীর বাবা ছিলেন ঢাকা শহরের প্রখ্যাত চিকিৎসক। উল্লেখ্য, বাসবী নন্দীর জন্ম হয় ১৯৩৯ সালে, শহর কলকাতায়৷ প্রথমে তিনি ইউনাইটেড মিশনারি গার্লস হাই স্কুল থেকে নিজের পড়াশোনা করেন৷ এরপর তিনি আই.এ পাশ করেন আশুতোষ কলেজ থেকে৷ আর এই কলেজে পড়াকালীন সময় থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায় অভিনেত্রীর।
বাংলা রঙ্গমঞ্চের রাণী ছিলেন তিনি। তাঁর অভিনীত ‘কারাগার’, ‘সেইম-সাইড’, ‘শ্রীমতী ভয়ঙ্করী’ বিখ্যাত বিখ্যাত সব নায়ক। রঙ্গমঞ্চের প্রায় সমস্ত নাটকেই উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে এই অভিনেত্রীর অভিনয়। তবে নায়িকা হওয়ার পাশাপাশি অত্যন্ত সুগায়িকা ছিলেন তিনি। সতীনাথ মুখোপাধ্যায় আর উৎপলা সেনের কাছে তিনি বাংলা গানের তালিমও নেন৷ এমনকী বাংলি সিনেমায় প্লে-ব্ল্যাক করেছিলেন বাসবী নন্দী৷
মঞ্চের পাশাপাশি সিনেমাতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রথম ছবি ছিল ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’। আর প্রথম অভিনয়েই দর্শকদের নিজের অভিনয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করে দেন বাসবী দেবী। ‘বনপলাশীর পদাবলী’ ছবিতেও অসামান্য অভিনয় করেন তিনি। এছাড়াও ‘বাঘিনী’, ‘সেই চোখ’, ‘রাতের কুহেলি’, ‘গজমুক্তা’, ‘মৃতের মর্ত্যে আগমন’ একাধিক সফল সব সিনেমা।
এই অভিনেত্রীকে ‘রঙ্গমঞ্চের সুচিত্রা’ বলা হত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যেমন সুচিত্রা সেন স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন তেমনভাবে বাসবী দেবীও দু’দশক আগে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন। জানা যায় পারিবারিক সময় দিতে মেয়েকে সময় দিতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান তিনি। একমাত্র মেয়ে দেবাঞ্জলির সঙ্গেই থাকতেন অভিনেত্রী। আর এই অন্তরালে থাকাকালীনই চিরকালের জন্য লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যান এই অভিনেত্রী।