জি বাংলায় (Zee Bnagla) জনপ্রিয় চর্চিত এক ধারাবাহিক হল ‘ইচ্ছে পুতুল’ (Icche Putul)। আর সে ধারাবাহিকের নায়কের চরিত্র অর্থাৎ সৌরনীলের (Souraneel) চরিত্রে অভিনয় করছেন মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় (Mainak Banerjee) । খুব বেশি তাঁকে পর্দায় না দেখে থাকলে তিনি এরআগে বড় পর্দা ও ছোট পর্দা দুটোতেই কাজ করেছেন। তবে ইচ্ছে পুতুলের নায়ক হিসাবে বিষয় পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। এবার এই সংবাদ মাধ্যমকে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার একটি অন্যতম হাতিয়ারের কথা সামনে রাখলেন। রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘বরবাদ’ ছবির খলনায়ক ইমরান হিসাবে মৈনাকের প্রথম বড় পর্দায় এন্ট্রি। চরিত্রটিও বেশ চোখে পড়ার মতো ছিল। ২০১৪ সালে মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে টলিউড পেয়েছিল এক নতুন খলনায়ক।
যদিও তার অনেক আগে থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ ভালোভাবেই লড়াই শুরু মৈনাকের। সিরিয়াল, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ়- তিনটি মাধ্যমে কাজ করেও ‘নায়ক’ তকমা এখনও অধরা রয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের অনবরত সংগ্রামের গল্পই ভাগ করে নিলেন দর্শকদের সঙ্গে। তাঁর হাতেখড়ি ছিল পাড়ার মঞ্চে নাটকের মাধ্যমেই। তখন মৈনাকের বয়স অনেকটাই কম ছিল। পাড়ার সবাই মিলে বেশ মজা করেই একটা নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। কলেজে তিনি পড়তেন বাণিজ্য বিভাগে। পড়ার সাথেই অভিনয়ের প্রতি এক বিশেষ টান অনুভব করেন অভিনেতা।
২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি নিয়মিত নাটক করে গিয়েছেন। তখনই হঠাৎ ‘অসম্ভব’ নামের একটা সিরিয়ালে সুযোগ পাই। কিন্তু একটা সময় নাটক ও সিরিয়াল একসঙ্গে সামলে উঠতে পারছিলেন না অভিনেতা, তাই বাধ্য হয়েই নাটক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে অভিনয় যদি না হত, তাহলে হয়তো তিনি হতেন একজন পেশাদার পর্বতারোহী হতাম। সে ববিষয়ে কোর্সও করেছিলেন। তারপর ভাগ্যবশত অভিনয়টা ‘ক্লিক’ করে যায়। একসময় তিনি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করতেন। আর সেই কাজ করার সময়ই আচমকা রবি ওঝার প্রযোজনা সংস্থা থেকে ফোন আসে তাঁর কাছে। একটা সিরিয়ালের খুবই ছোট একটি চরিত্র করার জন্য। বলা যেতে পারে, জুনিয়র আর্টিস্টেরই কাজ ছিল সেটি। পরিচালক রবিন নাম্বিয়ার সেই সুযোগ করেদেন তাঁকে।
ওই কাজটির মাধ্যমেই অভিনয় যাত্রার পথ আরও স্পষ্ট হয়। কিন্তু তার পর প্রায় এক বছর তাঁর হাতে কোনও কাজ ছিল না। বাড়িতে বসে হতাশায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন রবিন অভিনেতাকে তাঁর সিরিয়ালে সুযোগ দেন। আর সেই কাজ হাতে আসতেই পাশাপাশি প্রথম ছবির সুযোগও আসে। খানিকটা দোটানায় পড়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা। যদিও রবিন তাঁকে সিনেমার কাজটি করতে বলেন। সেই অর্থে মৈনাকের প্রথম ছবি হয় ‘অমরসঙ্গী’। সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘ভাল কাজ পেতে ইন্ডাস্ট্রির প্রভাবশালী পরিচালক বা প্রযোজকদের ‘গোষ্ঠী’র সদস্য হওয়াটা কি খুব গুরুত্বপূর্ণ?’ সেই উত্তরে অভিনেতা বলেন, “খুবই জরুরি।
নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করতে হলে সেই গোষ্ঠীতে মাথা ঢোকাতেই হবে। যাঁরা বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত, তাঁদের সবাই কিন্তু কোনও না কোনও বড় সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পেতে বা পর পর কাজ পেতে গেলে সেটা করতেই হবে।” তবে ইন্ডাস্ট্রিতে সফলতা পাওয়ার জন্য ধৈর্য এবং কাজের প্রতি সততা দুইয়ের খুবই প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে মৈনাক বলেন, “রাজ চক্রবর্তীর ‘বরবাদ’ ছবিতে নায়কের চরিত্রে আমার অভিনয় করার কথা ছিল। প্রস্তুতি নেওয়ার পরেও আমায় সরিয়ে খলনায়ক করে দেওয়া হয়েছিল! এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে জীবনে। কিন্তু ধৈর্য আমায় টিকিয়ে রেখেছে এখনও। নতুন অভিনেতাদেরও এটাই বলতে চাই”।