টেলিভিশনের পর্দায় একসময় ঝড় তোলা নাম ‘শ্রুতি দাস’ (Shruti Das) । ‘রাঙা বউ’ (Ranga Bou) -এর পাখি চরিত্রে তাঁকে দেখে যেমন ভালোবেসেছেন দর্শক, তেমনই সমাজমাধ্যমেও তাঁর স্টাইল স্টেটমেন্ট আর স্পষ্ট মতামতের জন্য নিয়মিত থাকেন আলোচনায়। কিন্তু সেই চেনা মুখটাই যেন হঠাৎই হারিয়ে গেল টিভির পর্দা থেকে। ফ্যানেরা যখন অপেক্ষায় দিন গুনছে পরবর্তী প্রজেক্টের জন্য, তখনই শোনা গেল শ্রুতি নাকি এবার বড় পর্দার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন।
সেই গুঞ্জনের মধ্যেই হইচই-এর ওয়েব সিরিজ ‘ডাইনি’ (Dainee) -তে ছোট্ট এক নেতিবাচক চরিত্রে ফিরে এলেন অভিনেত্রী, আর সঙ্গে সঙ্গেই প্রমাণ করলেন, ছোট চরিত্র হলেও অভিনয়ে তিনি এখনও সাবলীল, অনবদ্য। সামনে মুক্তি পেতে চলেছে ‘আমার বস’, যেখানে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন রাখি গুলজার, আর এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে শ্রুতিকেও। দীর্ঘ সময় পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে এই ছবি নিয়ে শ্রুতির আশাবাদী হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একটা প্রশ্ন থাকেই—তবে কি এবার টেলিভিশনকে বিদায়?

এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রীর জবাব একেবারেই স্পষ্ট, “টেলিভিশনই আমার জন্মস্থান। বড় পর্দা হোক বা ওয়েব, সবটাই এসেছে এই টিভি ইন্ডাস্ট্রির দয়ায়। আমি ছোট পর্দার দর্শকদের কখনও ভুলতে পারি না।” অথচ বিয়ের পর থেকেই চিত্রটা বদলাতে শুরু করে। পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে সম্পর্ক, তারপর বিয়ে—সবকিছু যেন অভিনেত্রীকে নিয়ে নতুন করে ফিসফাস শুরু করে দেয় ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে। ছোট পর্দায় একের পর এক মুখ্য চরিত্র করার পরেও, এখন তাঁকে অফার করা হয় শুধু পার্শ্বচরিত্র।
অভিনেত্রীর কথায়, এখন আর আগের মত নিয়মিত কাজ আসছে না। রোজগার বন্ধ, সংসার চলছে সঞ্চয়ে ভর করে। এমনকি বহুবার ইভেন্টে গাড়ি পাঠানো হয় না এই ভেবে যে, স্বামী যখন পরিচালক, গাড়ি তো থাকবেই! অথচ বাস্তবটা আলাদা—তিনটি মেগা সিরিয়াল করে সঞ্চয় বলতে বিশেষ কিছুই নেই, গাড়ি কেনাও হয়ে ওঠেনি। একবার কাজ চেয়ে ফোন করলে এক পরিচালক তাঁকে কটাক্ষ করে বলেন, “আপনার স্বামী তো স্বনামধন্য পরিচালক, আমাদের মতো লোককে কাজ চেয়ে লজ্জা দেবেন না।” সেই মুহূর্তে শ্রুতির ভেতরটা যেন ভেঙে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ আর্য-অপর্ণার জীবনে নয়া মোড়! আর্যর স্ত্রীর কথা জেনে গেল অপু! তার ভালোবাসা কি পূর্ণতা পাবে না? কী হবে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকে?
শ্রুতি বলেন, “আমি নিজে একজন আলাদা ব্যক্তি। নিজের পরিশ্রমেই আজ এই জায়গায় পৌঁছেছি। যদি স্বামীর সাহায্যে সব পেতাম, তাহলে কাজ না পেয়ে দেড় বছর ধরে কেন অবসাদে ভুগতাম?” অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন আজকের দিনে একটা মেয়ে যত স্বাধীন থাকবে, ততটাই সে আত্মবিশ্বাসী হতে পারে। তাই কোনও সাহায্য ছাড়াই একা হাতে মায়ের-বাবার দায়িত্বও সামলাচ্ছেন। নিজের অস্তিত্বকে বড় করতে তিনি আপস করতে রাজি নন—এই লড়াই চলবে যতদিন না তাঁর পরিচয় আবার গর্জে ওঠে পর্দায়, একা শ্রুতি দাস নামে।