ছোটপর্দার দর্শকদের কাছে অভিনেত্রী ‘কৌশাম্বী চক্রবর্তী’ (Kaushambi Chakraborty ) এক পরিচিত নাম। ‘মিঠাই’ (Mithai) ধারাবাহিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ হওয়ার পাশাপাশি তাঁর অভিনয় দক্ষতা আর প্রাণবন্ত উপস্থিতি তাঁকে সকলের হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছে। অভিনেতা ‘আদৃত রায়ে’র (Adrit Roy) সঙ্গে প্রেম ও বিবাহ সূত্রে এখন প্রায় সবসময়ই চর্চায় থাকেন। বর্তমানে তার জীবনে আবির্ভাব ঘটেছে আরেক আদৃতের, স্টার জলসার ‘গৃহপ্রবেশ’ ধারাবাহিকে ‘ডক্টর মোহনা সেন’ চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি এখন।
তবে লাইমলাইটের ঝলকানির আড়ালে তাঁর জীবন যে কতটা ঘাত-প্রতিঘাতে ভরা, তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। কিছুদিন আগেই তাঁর জীবনে এসেছিল এক বড় আনন্দের মুহূর্ত—অভিনেতা আদৃত রায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন কৌশাম্বী। সেই শুভদিনে হাসি, সিঁদুর, কপালে টিপ আর মা’র আশীর্বাদ ছিল তাঁর জীবনের সম্পূর্ণতা। কিন্তু সেই সুখের স্রোত যেন বেশিদিন বইলো না। বিয়ের এক মাস কাটতে না কাটতেই চিরতরে থেমে গেল তাঁর মায়ের প্রাণভোমরা।

এক নিঃশব্দ, গভীর শূন্যতা গ্রাস করল তাঁকে। এই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন ছোটপর্দায় আর দেখা যায়নি তাকে। অভিনেত্রীর কথায় বারবার উঠে এসেছে সেই সময় আদৃতের ভূমিকার কথা, আদৃত তাকে এই কঠিন সময় থেকে বেরিয়ে এসে আবার অভিনয় জগতে ফেরাতে অনুপ্রাণিত করেছেন। আজ মায়ের আবারও জন্মদিন। সমাজ মাধ্যমে এক আবেগঘন পোস্টে কৌশাম্বী লিখলেন তাঁর হৃদয়ের প্রতিটি কান্না।
গত বছরের স্মৃতিচারণা করে বললেন, কীভাবে রাত ১০টায় শ্যুটিং সেরে কেক নিয়ে ফিরে এসেছিলেন মায়ের মুখে হাসি দেখার জন্য। আজ আর সে হাসি নেই, নেই আদুরে কোলটা… তবুও তাঁর বিশ্বাস, মা আজও পাশে আছেন, দেখছেন, হাসছেন। এই এক ফাঁকা হয়ে যাওয়া জীবনের মধ্যেই তিনি খুঁজে নিচ্ছেন নিজের মা-কে—ছবিতে, স্মৃতিতে, অথবা নিজেকে জড়িয়ে ধরে রাখা প্রতিটি মুহূর্তে। “সেই “অপদার্থ মেয়ে”-টাই আজ হৃদয় উজাড় করে বলছে—”তোমাকে সবথেকে বেশি ভালোবাসি মা।” মৃত্যু হয়তো শরীরের, কিন্তু ভালোবাসা তো চিরজীবী।”
আরও পড়ুনঃ রায় পরিবারে ফিরে এলো আদৃত! পরিবারের সবাই কাছে থাকলেও স্মৃতি ফেরেনি আদৃতের, এবার কি মোহনাকে দূরে সরিয়ে শুভকে কাছে টেনে নেবে আদৃত?
মায়েরা কখনও ছেড়ে যান না বলে বিশ্বাস করেন অভিনেত্রী। একজন অভিনেত্রী, এক মেয়ে, এক নববিবাহিতা… কৌশাম্বী চক্রবর্তী যেন এক অনন্ত জীবনের গল্প লিখে চলেছেন। অভিনয় যেমন তাঁর আত্মার প্রকাশ, তেমনই এই শোকের মধ্যেও উঠে দাঁড়ানো যেন এক নতুন চরিত্রের জন্ম। এই চরিত্রে কষ্ট আছে, চোখের জল আছে, কিন্তু তার থেকেও বড় আছে—অভিনব ভালবাসা, যা শুধুই ‘মা’ বলে ডাকার মধ্যে আটকে থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত হৃদয়ে।