টলিউডের বহু আলোচিত অভিনেতাদের তালিকায় অন্যতম নাম তিনি। বড় পর্দার শক্তিশালী উপস্থিতি আর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়ে তিনি আজও দর্শকদের মুগ্ধ করেন। তিনি বিশিষ্ট অভিনেতা ‘রজতাভ দত্ত’ (Rajatava Dutta) । এক সময়ের রক্ত গরম করা খলনায়ক থেকে কৌতুক চরিত্র, সর্বত্র নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন অভিনয়ের মাধ্যমে। আজও তিনি সবার পছন্দের তারকার মধ্যেই স্থান পান। নব্বইয়ের দশকের এই হল কাঁপানো অভিনেতার অতীতটা হয়তো অনেকেরই অজানা।
ছোট থেকেই খুব ডানপিটে স্বভাবের ছিলেন রজতাভ। বাবা-মা কখনোই খুব একটা শাসন করতে পারেননি। ছোট বয়সী বাবা মারা যাওয়ার পর মা সেই শোক কাটিয়ে উঠতেই এতটা ব্যস্ত হয়ে পড়েন, রজতাও একপ্রকার উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন শুরু করেন। এমনিতেও স্কুলে বরাবর কুখ্যাত ছিলেন তিনি। এই ডানপিটে স্বভাবের জন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে মার পর্যন্ত খেয়েছেন। স্কুলে যে কোনও গন্ডগোল বাঁধলে আগে তলব করা হতো তাঁকে।

স্কুল শেষের পর বিপথে যেতে শুরু করেন রজতাভ। সেই সময় স্কুলের বন্ধুরা অনুরোধ জানান থিয়েটারে যোগ দেওয়ার, যদিও এইসবে কোনওদিনই তেমন ইচ্ছা ছিল না তাঁর। তবুও শুরুর দিকে খাওয়ার-জল সরবরাহ করতেন আর মুগ্ধ হয়ে অভিনেতাদের অভিনয় দেখতেন। রজতাভ জানান, সেই সময় উচ্চারণ স্পষ্ট ছিল না আর মন থেকে তেমন ইচ্ছা হয়নি অভিনয় করার। ফলে থিয়েটারকে এক প্রকার উপেক্ষাই করেন তিনি।
সবকিছু ছেড়ে যোগদান চাকরিতে। প্রথম জীবনে অ্যাকাউন্টেন্ট এর চাকরি করতেন। সেখানে চাকরি করতে করতে থিয়েটার করার ইচ্ছে হয়, চাকরি ছেড়ে দিয়ে থিয়েটারে যোগ দেন। তার পাশাপাশি সেই সময়ের বিখ্যাত পত্রিকা ‘জনগন-জনমত’-এ থিয়েটারের রিভিউ লিখতেন। মাঝে মাঝে সরকারি পরীক্ষাগুলোতে গার্ড দেওয়ার কাজও করেছেন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,”নিজের যে চাকরি পাওয়া হবে না অন্যকে সেই চাকরি পেতে সাহায্য করতে যেতাম।
আরও পড়ুনঃ রাজবাড়িতে গুরুজির রূপে লুকোনো আ’সামী! ছোট রানীর চোখের সামনেই ধরা পড়ল রুদ্র! সবার সামনে গুরুজির দাঁড়ি টেনে রুদ্রর মু’খোশ ছিঁ’ড়ে ফেলল ফুলকি! ফুলকি কি নিজের বিপদ বাড়িয়ে দিল?
সম্মানও পেয়েছি অনেক, সবাই স্যার বলে ডাকত। আসলে আমার এক বন্ধুর বাবা এই কাজ আমায় এনে দিত। দু-চারশ টাকা মিলতো এই কাজ করে।” এমনকি ৫০, ১০০ টাকার বিনিময়ে অন্যের ব্যবসায়িক চুক্তির জন্য বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন। এরপর ছোট যাত্রা থেকে শুরু করে মূলধারার থিয়েটার আর পরবর্তীতে বড় পর্দায় আসা। তবে তিনি আজও কৃতজ্ঞ স্কুলের সেই বন্ধুদের কাছে। যারা আজ আর থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত নয়, তবু তাঁকে জীবনের দিশা দেখিয়ে গেছেন।