টলিউড (Tollywood) অভিনেত্রী এবং সঞ্চালিকা ‘কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Koneenica Banerjee) সম্প্রতি ফের চর্চায় উঠে এসেছেন কলকাতা বিমানবন্দরের (Dumdum Airport) অভিজ্ঞতা ঘিরে। কয়েকদিন আগেই নিজের সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছিলেন, বিমানবন্দরে নিজের ছ’বছরের মেয়ের সঙ্গে কীভাবে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কারণ সাম্প্রতিক কোমরে সার্জারির পর তিনি অনেকটা হাঁটতে পারেন না, এমনকি চিকিৎসকের নির্দেশে ২ কেজির বেশি ওজনও তোলা বারণ। অথচ এই শারীরিক অবস্থার মধ্যেই তাঁকে স্টলার ছাড়াই দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়।
পাশে ছিলেন তাঁর ষাটোর্ধ্ব বাবা ও কাকা, যাঁরা ঘুমন্ত শিশুকে কোলে নিয়ে বিমানবন্দরের ভিতর চলাফেরা করতে বাধ্য হন। এই অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে কনীনিকা জানিয়েছিলেন, ৬ বছর ধরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে কোনওদিনই তিনি সাহায্য পাননি। বহুবার বিষয়টি জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে কিয়ারা কিছু বছরের মধ্যেই বড় হয়ে যাবে, তখন আর স্টলারের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু তিনি এই দাবি তুলছেন সকল মায়েদের হয়ে, যাঁদের একা বাচ্চা নিয়ে ট্রাভেল করতে হয়।
এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই একাংশ অভিনেত্রীকে কটাক্ষ করেন ‘পাবলিসিটি স্টান্ট’ বা ‘লাইমলাইটে আসার বাজে চেষ্টা’ বলে। এই কটাক্ষগুলি অভিনেত্রীর চোখে পড়তেই, রেগে যান তিনি। সমাজ মাধ্যমে আরও একটি ভিডিও বানিয়ে তিনি কটাক্ষকারীদের জবাবের মাধ্যমে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। আরও বিস্তারিতভাবে বলেছেন, কোনও রকমের ‘পাবলিসিটি স্টান্ট’-এ বিশ্বাসী নন তিনি। বরং তাঁর বক্তব্য, এটা একজন মা হিসেবে নয়, একজন সচেতন যাত্রী হিসেবে বলা, যিনি নিজের টিকিটের মূল্যর বিনিময় পরিকাঠামোর সঠিক ব্যবহারের অধিকার রাখেন।
যেহেতু বিমানবন্দরে দেওয়া স্টলার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয়, তাই তিনি নিজের স্টলার নিয়ে যান, যেটি বিমানে ওঠার সময় কার্গোতে যায় এবং নামার সময় ফের হাতে পান। সেই স্টলার স্প্রে করে তবেই বাচ্চাকে বসান তিনি। পাশাপাশি দাবি করেছেন, শারীরিক সমস্যার কারণে মেয়েকে কোলে নেওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব। তাঁর ভিডিও দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, ৬ বছরের শিশুর জন্য কেন এখনও স্টলার প্রয়োজন? সেই প্রশ্নের উত্তরেই কনীনিকা জানান, সমস্যা শিশুর নয়, তাঁর নিজস্ব শরীরের। আজও অস্ত্রোপচারের ধকল সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেননি তিনি।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে কনীনিকা চিহ্নিত করেছেন চাইল্ড কেয়ার রুমের পরিস্থিতি। বলেছেন, কলকাতা বিমানবন্দরে আদৌ এমন কোনও ঘর চোখে পড়ে না, আর যদি থাকে, সেখানকার অবস্থা একেবারে শোচনীয়। মা ও শিশুর প্রাথমিক প্রয়োজনের মতো স্তন্যপান, ন্যাপি চেঞ্জ — এই প্রক্রিয়াগুলির জন্য কোনও নিরাপদ, পরিষ্কার জায়গা নেই বলে অভিযোগ তাঁর। এমনকি সাধারণ বাথরুমের অবস্থাও নাকি যথেষ্ট নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। যদিও তিনি শুধুই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে দোষ দেননি। পরিষ্কার করে বলেছেন, যাত্রীরাও অনেক সময় সচেতন নন।
আরও পড়ুনঃ প্রেমের গুঞ্জনে ইতি! ‘মিঠাই’ এবার বাস্তবেও খুঁজে পেলেন নিজের সিদ্ধার্থকে! অবশেষে জীবনসঙ্গীকে সামনে আনলেন সৌমিতৃষা! এবার বিয়ের পথে টলিউডের ‘মিঠাই’? অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় ভরে উঠলো কমেন্ট বক্স!
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গাকে নোংরা করে ফেলেন অবলীলায়। শেষ পর্যন্ত তাঁর বক্তব্য একটাই, বিমানবন্দরে যাত্রীদের সুবিধা ও প্রয়োজনীয় পরিষেবার প্রতি যত্ন নেওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের। যখন একজন যাত্রী বিমানযাত্রার জন্য মূল্য দিয়ে থাকেন, তখন সেই পরিকাঠামো এবং স্বাচ্ছন্দ্য পাওয়াও তাঁর অধিকার। একা মা, বৃদ্ধ সহযাত্রী কিংবা শারীরিকভাবে অসুস্থ কারও কথা ভেবে যদি হুইল চেয়ার বা স্টলারের মত প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সহজলভ্য করা যায়, তাহলে তা পুরো ব্যবস্থারই গুণমান বাড়াবে।