ছোট পর্দার ধারাবাহিকের নায়ক-নায়িকার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে দর্শকের কৌতূহল বড় পর্দার চেয়ে অনেক বেশি। সম্প্রতি জীতু কমল এবং দিতিপ্রিয়া রায়ের মধ্যে যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তা শুধুই স্টুডিওর ভেতরের আলোচনার বিষয় নয়, দর্শকের মাঝেও বড় ধরনের আগ্রহ তৈরি করেছে। ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ পর্যন্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। কিন্তু বাস্তবে পর্দার সমীকরণ ঠিক রাখতে বন্ধুত্বের প্রয়োজন কতটা, তা নিয়ে টলিপাড়ায় চলছে তুমুল আলোচনা।
একজন কাস্টিং ডিরেক্টরের মতে, “ক্যামেরার পেছনের সমীকরণের উপর সাময়িকভাবে নির্ভর করা যায়, কিন্তু মূলত পেশাদারিত্বই সব।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, নায়ক-নায়িকার বন্ধুত্ব বা তিক্ততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠার দরকার নেই। এই প্রেক্ষাপটে বাংলা ধারাবাহিকের অন্য জুটিদের মতামতও চোখে পড়ে। তারা জানান, শুধুমাত্র পেশাদারিত্ব থাকলেই কাজের সমীকরণ বজায় রাখা সম্ভব।
‘চিরসখা’ ধারাবাহিকের সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও অপরাজিতা ঘোষ শুটিং সেটে বন্ধুত্বের চেয়ে পেশাদারিত্বকেই গুরুত্ব দেন। তারা বলেন, “যেমন অফিসে সবকিছু ব্যক্তিগত নয়, তেমনই শুটিং সেটেও মূলত কাজ করতে হয়।” অন্যদিকে ‘কথা’ ধারাবাহিকের এভি ও গোবরদেবী শুটিংয়ের বাইরে হাত ধরে চলাফেরা করেন, ব্যক্তিগত বন্ধুত্বকেও গুরুত্ব দেন। দর্শকের জন্য তাদের সমীকরণ আরও প্রাকৃতিক এবং আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
এভি বা সাহেবের মতে, দর্শক চরিত্রের সমীকরণকে নায়ক-নায়িকার বন্ধুত্বের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। বন্ধুত্ব থাকলে অভিনয় আরও সহজ হয় এবং চরিত্রের গভীরতা পর্দায় ফুটে ওঠে। আবার ‘গৃহপ্রবেশ’ ধারাবাহিকের আদৃত ও শুভলক্ষ্মীও ব্যক্তিগত বন্ধুত্বকেই কাজে সহায়ক মনে করেন। দীর্ঘ সময় একসাথে কাজ করার ফলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয় এবং সেটের পরিবেশও সুস্থ থাকে।
আরও পড়ুনঃ “কম কাজ করলেও গল্পে নায়িকা আমিই” — নিজের জীবনের মঞ্চে কোন ভূমিকায় নিজেকে দেখতে চাই অভিনেত্রী দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়??
যদিও অনেক ধারাবাহিকের নায়ক-নায়িকার মধ্যে তীব্র মতবিরোধ থাকলেও, গল্পের মেলবন্ধন দর্শকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। টিআরপি তালিকার শীর্ষে থাকা ধারাবাহিক প্রমাণ করে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের চেয়ে মূল গল্পের ধারাবাহিকতা ও পেশাদারিত্ব বেশি প্রভাবশালী। শেষমেষ, টেলিপাড়ার নায়ক-নায়িকারা সব জুটি একমত—পরিচ্ছন্ন পেশাদারিত্ব ও চরিত্রের সমীকরণই ধারাবাহিককে সফল করে তোলে, বন্ধুত্ব থাকল বা না থাকল তাতেই দর্শক প্রভাবিত হন।