জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

ইন্ডাস্ট্রির দাপুটে মহানায়িকা, তুমুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ১০০১ টাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সামনে নত হলেন! জীবনে একবারই নিজের নিয়ম ভেঙেছিলেন সুচিত্রা, কিন্তু কী কারণে?

তিনি ছিলেন পর্দার আলোর মধ্যে থেকেও অন্ধকারে ঢাকা একজন কিংবদন্তি। মহানায়িকা ‘সুচিত্রা সেন’ (Suchitra Sen), নামেই যার ওজন, যাঁর ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা নিয়েই ছিল সর্বদা আগ্রহের পারদ। সাধারণ অনুষ্ঠান তো দূরের কথা, নিজের পরিচিত বৃত্তেও অনুমতি ছাড়া তাঁর সান্নিধ্যে আসা ছিল একপ্রকার অসম্ভব। তাঁর এই নিয়ম একটাই— দর্শকেরা শুধুমাত্র পর্দায়ই দেখবেন সুচিত্রাকে, বাস্তবে নয়। এমনকী তাঁকে পুজোর উদ্বোধনেও দেখা যায়নি, যা বাকি তারকাদের মধ্যে ছিল সাধারণ প্রথা।

তবে সেই সুচিত্রাই একবার ভেঙেছিলেন নিজের এই অদৃশ্য দেয়াল। সময়টা ছিল পঞ্চাশের শেষ এবং ষাটের শুরু, সেই সময়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ড. বিধানচন্দ্র রায়। দক্ষিণ কলকাতায় একটি টিবি ক্লিনিকের উদ্বোধন হতে চলেছে, সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই উদ্বোধনে সুচিত্রা সেনকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে, যদিও জানাই ছিল যে মহানায়িকা এমন প্রস্তাবে রাজি হবেন না।

এমনকি অভিনেত্রীর পরিচিত ইভেন্ট ম্যানেজার বারীন ধরই প্রথমে জানিয়েছিলেন, সুচিত্রা এসব অনুষ্ঠানে যান না! কিন্তু সেদিন হলো উলট পুরাণ, মুখ্যমন্ত্রীর নাম শোনামাত্রই বদলে গেল পরিস্থিতি। বারীন ধর যখন সুচিত্রাকে বিস্তারিত জানালেন ক্লিনিক ও মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধের কথা, তিনি একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন। এমনকি পারিশ্রমিকের প্রসঙ্গ উঠতেই বলে দিলেন, “সেটা অনুষ্ঠান শেষে দেখা যাবে।” এরপর নির্ধারিত দিনে এবং সঠিক সময়ে মহানায়িকা হাজির হলেন সেখানে।

নিজ হাতে কাটলেন ফিতে, ঘুরে দেখলেন পুরো ক্লিনিক। ড. রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করলেন তিনি। দর্শকদের মাঝে তাঁর উপস্থিতি যেন এক অভাবনীয় মুহূর্ত হয়ে উঠেছিল। ইন্ডাস্ট্রির এই দাপুটে নায়িকার সেই দিনটা ছিল বাস্তবিকই আলাদা। পারিশ্রমিক হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন ১০০১ টাকা— কিন্তু সেটা নিজের কাছে না রেখে ক্লিনিকের উন্নয়নের জন্য দান করে দিয়েছিলেন। যেন সত্যিই প্রমাণ করলেন, তাঁর তারকাখ্যাতির পেছনে হৃদয়ের গভীরতা আবশ্যক!

আরও পড়ুনঃ “ছেলেমেয়েরা আমায় ‘হঠাৎ মা’ বলে ডাকত!” “মাতৃত্ব নিয়ে ভুল সিদ্ধান্তের আক্ষেপ আছে, অনেক অপূর্ণতা রয়ে গেল সন্তানদের নিয়ে!”— মাতৃত্ব নিয়ে পাপিয়া অধিকারীর অকপট স্বীকারোক্তি! সন্তানদের প্রসঙ্গ উঠতেই, চোখের কোনে জল!

তাঁর ক্ষেত্রে হৃদয়ের গভীরতা শুধু অভিনয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বহুবার প্রমাণ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, এই একটি বারই নিজের নিয়ম ভেঙেছিলেন সুচিত্রা সেন। এরপর আর কোনও উদ্বোধনে, কোনও জনসমক্ষে এমনভাবে ধরা দেননি তিনি। সেই একমাত্রবারের ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী ছিল বাংলা, যা আজও মহানায়িকার চরিত্রের এক অনন্য দিককে তুলে ধরে— যেখানে গোপনীয়তা আর জনপ্রিয়তার বাইরেও ছিল মানবিকতা, শ্রদ্ধা এবং গভীর দায়িত্ববোধ।

Piya Chanda