জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“ভিএফএক্স দিয়ে হাসির খোরাক বানিয়ে হিন্দু ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে, মহালয়ায় বীরেন বাবুর কন্ঠস্বরই যথেষ্ট!” “এত উগ্র সাজে দেব-দেবীদের মানায় না। মা দুর্গা হবে স্নিগ্ধ!”— অতিরিক্ত চাকচিক্যর নাটকীয়তায় জি বাংলার মহালয়ায় আড়াল হল দেবী মহিমা?

সপ্তাহান্তেই মহালয়া, হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। শেষ পর্বের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে শহর জুড়ে। তারপরেই দেবীপক্ষ, উমার বাড়ি ফেরা। রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডীপাঠ যেমন বাঙালির আবেগ, তাঁকে ছাড়া আগমনীর সূচনা অসম্পূর্ণ। টেলিভিশনের মহালয়াও সেই আবেগে মিশে গেছে সমানভাবে। জি বাংলার মহালয়া (Zee Bangla Mahalaya 2025) অনুষ্ঠান নিয়ে প্রতিবছরই দর্শকের মধ্যে থাকে এক বিশেষ আগ্রহ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে ‘জাগো মা জাগো দুর্গা’র নতুন প্রোমো প্রকাশ্যে আসার পর প্রশংসার চেয়ে সমালোচনার ঢেউই বেশি!

একঝলক প্রোমো মুক্তির সময় যেটুকু উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল দর্শকদের মধ্যে, পূর্ণাঙ্গ প্রোমো দেখে তা দ্রুত মিলিয়ে গেছে। উল্লেখ্য, এই বছর মহালয়ার মূল ভাবনা হিসেবে নেওয়া হয়েছে মা দুর্গার সংহারকারি রূপদের। যেখানে এক অঙ্গে দেবীর একাধিক রূপ তুলে ধরা হয়েছে। শ্বেতা ভট্টাচার্য দুর্গার ভূমিকায়, ইশানি চট্টোপাধ্যায় ভদ্রকালী রূপে, তনিশকা তিওয়ারি গান্ধেস্বরী হিসেবে, দিব্যানি মণ্ডল ত্রিপুরাসুন্দরী, আরাত্রিকা মাইতি কৌশিকী, অণ্বেশা হাজরা জগদ্ধাত্রী এবং মোহনা মাইতি কালী রূপে অভিনয় করেছেন।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছেন অভিনেতা রুবেল দাস, যিনি এবার মহিষাসুরের চরিত্রে ধরা দিয়েছেন। কাকতালীয়ভাবে তিনি আবার দুর্গার ভূমিকায় অভিনয় করা শ্বেতার বাস্তব জীবনের স্বামী। এই কারণে অনেকের আগ্রহ বাড়লেও, দর্শকরা সমালোচনা করতে ছাড়েননি। অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, শ্বেতা-রুবেলের ব্যক্তিগত সম্পর্ককেই প্রোমোশনের হাতিয়ার করা হয়েছে। এবারের অনুষ্ঠানে আরও এক চমক আনতে দ্বৈত চরিত্রে হাজির হচ্ছেন ইধিকা পাল। পার্বতীর স্নেহময়ী রূপের পাশাপাশি মহিষাসুরমর্দিনী হয়ে দর্শকের সামনে আসছেন তিনি।

পাশাপাশি শিবের চরিত্রে থাকছেন রণজয় বিষ্ণু। অনেকে যদিও শ্বেতার সঙ্গে তাঁর জুটিকে ফের দেখতে পেয়ে খুশি, সমালোচকেরা মনে করছেন— অতিরিক্ত নাটকীয়তা আর সাজসজ্জার চাকচিক্য দেবী মহিমাকে আড়াল করে দিচ্ছে। একদিকে এই বিশাল শিল্পীসমাবেশ দর্শকের নজর কাড়লেও, অন্যদিকে চরিত্রের আড়ম্বরই বেশি। দেবীসুলভ মাধুর্য অনুপস্থিত। অতিরিক্ত ভিএফএক্স আর আধুনিক উপস্থাপনা আবহক নষ্ট হচ্ছে। সমাজ মাধ্যমে এই প্রোমো নিয়ে চলছে হাসাহাসি আর কটাক্ষ।

কেউ ব্যাঙ্গ করে বলছেন, “এসব দেখার পর মা আর মর্তে নামবে না!” আবার অন্যজনের কথায়, “উড়ন্ত দেবী প্রত্যেকবার উড়ে উড়েই অসুর বধ করেন, তার উপরে ট্রিং ব্রিং নাচ। সব থেকে বিকৃত মহালয়া করে এরাই দেখে মনে হয়।” কেউ অভিযোগে জানিয়েছেন, “এত উগ্র সাজে দেব-দেবীদের মানায় না। মা দুর্গা হবে স্নিগ্ধ, যাকে দেখে শ্রদ্ধা জাগবে। এসব না করে বীরেন্দ্র কৃষ্ণের কন্ঠে মহালয়া বানান।” কটাক্ষও এসেছে যেমন, “ধর্ম নিয়ে এসব সার্কাস বন্ধ করা উচিত। এখন এত উন্নত টেকনোলজি, ক্যামেরা ভিএফএক্স এসে গেছে বাজারে।

এরপরেও এসব লো বাজেটে হাসির খোরাক বানিয়ে হিন্দু ধর্মকে ছোট করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক। মহালয়ায় বীরেন বাবুর কন্ঠস্বরই যথেষ্ট।” “এই সকাল সকাল সার্কাস ভালো লাগে না। মানুষ বিকেলে সার্কাস দেখতে যায়, সময়সূচী সকালের পরিবর্তে বিকেলে করা হোক। মজা হবে!” সবশেষে, মহালয়ার অনুষ্ঠান নিয়ে প্রত্যাশা যেমন থাকে, তেমনই প্রতিবার নতুন করে বিতর্কও জাগে। এবারও ঠিক সেই একই চিত্র ধরা পড়ল। এবার দেখার, মূল অনুষ্ঠানটি দর্শক প্রতিক্রিয়াকে পাল্টাতে পারে কি না।

Piya Chanda