জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“এখন কেউ সুপারস্টার নয়, কেউ মেগাস্টারও নয়!” “আমাদের সময়ে টিকিট ব্ল্যাকে বিক্রি হতো, প্ল্যাটিনাম জুবলি, গোল্ডেন জুবলি!”— নিজের যুগের সঙ্গে তুলনা টেনে অকপট দেবশ্রী রায়! টলিউডের মন্দার কারণ নিয়ে মন্তব্যে জোর বিতর্ক!

বাংলা চলচ্চিত্রে (Tollywood Actress) অনেক নায়িকাই এসেছেন, গিয়েছেন—কেউ জনপ্রিয় হয়েছেন, কেউ হারিয়ে গেছেন ভিড়ে। কিন্তু ‘দেবশ্রী রায়’ (Debashree Roy) ছিলেন এক অন্য ধারার নাম, যাঁকে শুধু নায়িকা বললে ভুল হবে। তাঁর মধ্যে ছিল একধরনের পরিণত সরলতা, যেটা পর্দায় খুব স্বাভাবিকভাবে ধরা দিত। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি একের পর এক বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করেছেন এবং প্রায় সব বড় তারকার সঙ্গেই তাঁর অভিনয় দর্শকের মন ছুঁয়ে গেছে।

প্রসেনজিৎ হোন বা চিরঞ্জিত, মিঠুন কিংবা প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক— সবাইয়ের সঙ্গেই তাঁর জুটি দর্শক পছন্দ করেছে। তবুও কিছু জুটি সব সময় একটু আলাদা হয়ে থাকে, আর তাপস পালের সঙ্গে তাঁর অনস্ক্রিন জুটিটা ঠিক সেরকমই ছিল। এই জুটির মধ্যে কোনও কৃত্রিমতা ছিল না। ছিল একধরনের সহজ, পরিচিত আবহ যা দর্শক নিজেদের জীবনের সঙ্গে মেলাতে পারতেন। তাপস-দেবশ্রীর একাধিক ছবি এমন এক আবেগ গড়ে তুলেছিল, যেগুলো শুধু বিনোদন দিত তাই না, বরং গল্প বলার ধরণেই একটা আত্মীয়তা তৈরি করত।

তাঁদের একসঙ্গে থাকা মানেই ছিল পারিবারিক অনুভূতিতে মোড়া গল্প, যেখানে দর্শক নিজেকে খুঁজে পেতেন। তবে দেবশ্রীর কেরিয়ার কিন্তু শুধুমাত্র তাপস পালের সঙ্গে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁর অভিনয় দক্ষতা এবং পর্দার উপস্থিতি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তিনি আলাদা ভাবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তাঁর সময়ে টলিউডে যে ধরনের বাণিজ্যিক সিনেমা তৈরি হতো, সেখানে তিনি ছিলেন অন্যতম মুখ, যিনি একইসঙ্গে বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছেন আবার দর্শকের ভালবাসাও কুড়িয়েছেন।

কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে, তাপস পালের সঙ্গে তাঁর পর্দার রসায়ন বাংলা ছবির ইতিহাসে এমন এক অধ্যায়, যেটা আজও দর্শকের মনে জায়গা করে আছে। বলা হয়, মহানায়কের মৃত্যুর পর যখন প্রেক্ষাগৃহে দরজায় তালা ঝুলতে শুরু করেছিল। বাংলার মানুষ বাংলা সিনেমার উপরেই আস্থা হারাচ্ছিলেন, তখন দেবশ্রী-তাপস জুটির মোহেই তারা আবার হলমুখী হতে শুরু করেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে শুরু হয়েছিল নতুন স্বর্ণযুগের অধ্যায়। বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্র আবার ধ্বসের মুখোমুখি হয়েছে।

কোনও ছবিই তেমন ফলাফল করতে পারছে না। সেই ছবি সুপারস্টারেরই হোক বা মেগাস্টারের, মানুষের মনে দাগ কাটতে পারছে না আর। এই নিয়ে সম্প্রতি দেবশ্রী রায় অকপটে বললেন, “শুনতে খারাপ লাগলেও আমার বলতে খারাপ লাগছে না যে, এখন কেউ সুপারস্টার নয়। আবার কেউ মেগাস্টারও নয়। আমাদের যুগের সঙ্গে তো তুলনাই করা যাবে না! তখন মিঠুন চক্রবর্তী, দেবশ্রী রায়, তাপস পালের জন্য টিকিট ব্ল্যাকে বিক্রি হতো। প্ল্যাটিনাম জুবলি, গোল্ডেন জুবলি, সিলভার জুবলি! ছবি সরানো যাচ্ছে না, এমন কাণ্ড হতো। এখন ইন্ডাস্ট্রি একটা সাংঘাতিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যেটা আমাকেও কষ্ট দেয়।”

Piya Chanda