সকাল থেকেই টলিপাড়ায় অস্বস্তির হাওয়া। কারণ, বহু দিন ধরে প্রচার চলা সত্ত্বেও হঠাৎ করেই ‘দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ (The Academy of Fine Arts) ছবির মুক্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ছবির প্রতিটি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ইতিমধ্যেই সেন্সর বোর্ডের একাধিক কাটকে উপেক্ষা করেই শেষ মুহূর্তের মুক্তির প্রস্তুতিও সেরেছেন। তা দর্শকরাও জানতেন, এবং অনেকে বিশেষ আগ্রহীও ছিলেন ছবিটি নিয়ে। অথচ নির্ধারিত দিন ১৪ নভেম্বর বড় পর্দায় ছবি পৌঁছনোর কথা থাকলেও সেই দরজা বন্ধ হয়ে গেল শেষ মুহূর্তেই!
এমন খবরে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ ছবির সঙ্গে যুক্তদের। এর মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে পরিচালক জয়ব্রত দাসের টিম একটি দীর্ঘ বিবৃতি দেন। সেখানে জানানো হয়, মুক্তির আগের দিনই ছবিটি সমস্ত হল থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। অভিযোগ আরও গুরুতর, “সেন্সর সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও রিলিজের একদিন আগে আমাদের ছবি কে সমস্ত হল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে… যাতে কোনোভাবেই রিলিজ করতে না পারি। সেজন্যে সমস্ত হল মালিকের কাছে ফোন করে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
ভাল কাজ হোক, মানুষ দেখে বিচার করুক, কিন্তু দেখার সুযোগ তো দেওয়া হোক!” ফিল্ম স্কুলের ছাত্রদের তৈরি এই ছবি চার বছরের পরিশ্রমের ফসল। তাই এই অবস্থায় তাঁদের অসহায়তাও স্পষ্ট। এদিকে প্রযোজকদের তরফেও পাওয়া গেছে প্রতিক্রিয়া। সৌম্য সরকার জানিয়েছেন, ফেডারেশনের প্রতিটি নিয়ম মেনে ছবিটি তৈরি হয়েছে। তাই যদি আরও কোনও শর্ত থাকে, সেটাও তারা মেনে নেবেন বিনা আপত্তিতে। বিতর্ক বাড়ছে এই প্রশ্নকে ঘিরে যে, নিয়মের ফাঁকফোকর দেখানো হচ্ছে, তা কি আদৌ ছবির দোষ, নাকি অন্য কোনও চাপ?
ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস অবশ্য এই বিষয়ে মন্তব্য করেননি। তবুও শোনা যাচ্ছে, ছবিটি নিয়ে একমাত্র সমস্যা নাকি গিল্ডের একজন লোকও যুক্ত ছিলেন না, সেটাই আপত্তির মূল। অন্যদিকে, পরিবেশক পঙ্কজ লাডিয়া জানিয়েছেন যে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবেন। সিদ্ধান্ত যাই হোক, তারা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তবে তাঁর কথায় হতাশার সুরও মারাত্মক, বৈঠকের পরও যদি ছবি না-ই মুক্তি পায়, তবে তাঁদের হাতে কিছুই থাকবে না। দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করা কলাকুশলীদের সামনে দাঁড়িয়ে যাবে বড় এক প্রশ্ন!
আরও পড়ুনঃ ‘এই রায়ান বড়ই অচেনা, পুরো যেন নিজের মায়েরই প্রতিচ্ছবি!’– রায়ানের স্বার্থপরতায় বাড়ছে দর্শকের অসন্তোষ! ‘পরিণীতা’র নতুন মোড়ে রায়ানের ‘কম্পিটিশন’ মানসিকতা নিয়ে তুমুল বিতর্ক! রায়ানের ‘ইগো যুদ্ধ’ কি গল্পকে ঠেলে দিচ্ছে অন্য পথে?
এত পরিশ্রম করে ছবি বানানোর পরেও যদি রিলিজ না-ই হয়, তাহলে শিল্পীদের দোষ আসলে কোথায়? পর্দার সামনের অভিনেতাদের মধ্যেও অস্বস্তি তুঙ্গে। ছবির অন্যতম মুখ সৌরভ দাসও প্রচারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। হঠাৎ করে মুক্তি স্থগিত হওয়ায় তিনিও বাকরুদ্ধ। পুরো ইন্ডাস্ট্রি এখন তাকিয়ে আছে আগামি বৈঠকের দিকে। সেখানে ঠিক কী সিদ্ধান্ত হবে, ফেডারেশন কতটা নরম হবে, আর দর্শকরা আদৌ হলে ছবিটি দেখতে পারবেন কিনা, এই সবকিছুর উত্তরই লুকিয়ে আছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে।
