টেলিপাড়ার বাতাসে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল নানান গুঞ্জন, জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’এ (Chirodini Tumi Je Amar) আর্য সিংহ রায় চরিত্রে ঠিক কে থাকছেন, তাই নিয়ে যেন রহস্যের কুয়াশা দিনের পর দিন আরও ঘন হচ্ছিল। সেটের ভেতরের মতবিরোধ, দুই প্রধান শিল্পীর ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য আর সমাজ মাধ্যম জুড়ে তীব্র আলোচনা মিলিয়ে পরিস্থিতি এতটাই ঘোলা হয়ে উঠেছিল যে দর্শকেরা গল্প ভুলে নেপথ্যের করণের বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছিলেন। কারও দাবি ছিল পুরোনো অস্বস্তির রেশ, আবার কেউ বলছিলেন এই সবই নাকি শুরুতেই তৈরি হওয়া তিক্ততার ফল।
দিতিপ্রিয়া এবং জিতুর (Jeetu Kamal) মন্তব্য যেন আরও একবার আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছিল। আর তারই সঙ্গে নতুন নতুন অভিনেতা নাম আর্য চরিত্রের জন্য ওঠায়, আলোচনার তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছিল চূড়ান্ত সীমা! তবু বহু জল্পনা-কল্পনার পর শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার হয়েছে, আর্য চরিত্রে ফিরেছেন জিতু কমলই। দর্শকদের জোর দাবি, দলীয় আলাপ-আলোচনা আর চরিত্রটির প্রতি জিতুর নিজস্ব দায়বদ্ধতা মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত ফের তিনিই চিত্রনাট্যে জায়গা পেয়েছেন। সেটেও নাকি এখন আর কোনও সমস্যার ছায়া নেই, সবকিছু আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে।
কাল থেকেই তিনি আবার শুটিং ফ্লোরে দাঁড়িয়েছেন আর্য সিংহ রায় হয়ে আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই উচ্ছ্বাসে ভরে উঠেছে দর্শকমহল। মনে হচ্ছে, বিরতির পর আরও দৃঢ়ভাবেই ফিরে এসেছে জনপ্রিয় এই চরিত্রের ছন্দ। কিন্তু অভিনেতার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল আবার শুটিং ফ্লোরে দাঁড়িয়ে? এদিন কাজ সেরে বাড়ি ফিরতেই সমাজ মাধ্যমে লাইভে এসেছিলেন জিতু, সেখানেই জানালেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বললেন, “অনেক টাল-মাটাল অবস্থার মধ্যে থেকে তো আপনারাও যাচ্ছেন আমার মতোই, কিন্তু ঘটনাটা হচ্ছে তার মধ্যে থেকেই ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারটা।
সত্যি কথা বলতে, এক প্রকার বীতশ্রদ্ধ হয়েই ছেড়ে দিয়েছিলাম কাজটা। ফের আবার কাজটায় ফিরে আসা শুধুমাত্র দর্শকের এবং টেকনিশিয়ানদের কথা ভেবে। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ, আমার পাশে সব সময় থাকার জন্য আর সঠিক পথ দেখানোর জন্য। হ্যাঁ জানি, কখনও কখনও কোনও মানুষের খারাপ লেগে যায় অনেক কথা। কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদের কষ্ট হলেও আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত এবং শালীনতা বজায় রেখেই কথা বলা উচিৎ। ইতিবাচক হোক বা নেতিবাচক হোক, যে সেই চরিত্রে অভিনয় করছেন, তাঁকে কিছু না বলেই ভালো।
তার বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটে, যেগুলো দর্শকের কানে যায় বলেই তারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। আর আমি অবাক হয়ে ভাবি, তারা কিভাবে সব জানতে পারছে। সমাজ মাধ্যমের যুগে যে কিছুই লুকিয়ে থাকে না, এটা তো মানতেই হবে। এই যে আমি আজকে থেকে আবার কাজটায় যোগ দিলাম। কিন্তু সিন কিভাবে হবে, সেটা আমার কাছে ধোঁয়াশা। শুধুমাত্র শুরু করেছি আমার টেকনিশিয়ান আর দর্শক, যারা এই চরিত্রটাকে এতদিন আর এত দূর পর্যন্ত ভালোবাসা দিয়ে নিয়ে গেছে। এমন দর্শকদের আমি শুধু নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দায় সেরে চলে যেতে পারিনি।
কিন্তু কাজটা শুরু করলেও পুরোটাই যে সচ্ছল আকারে হচ্ছে বা হবে এমনটা নয়। একটা ভাঙা কাঁচ, সেটাকে জোড়া লাগানোর হাজারো চেষ্টা করলেও কতদূর যে জোড়া লাগবে জানা নেই। আমি কোনও বিতর্কে যেতে চাইছি না, শুধুমাত্র ধন্যবাদ জানাবো সবাইকে এত আশীর্বাদ আর ভালোবাসা জানানোর জন্য। দর্শকের ভালোবাসা আর আস্কারা ছাড়া জীবনের একটা অংশও চলতে পারবো না আমি। আজকে প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগছে এতদিন বাদে আবার শুটিং করে এবং এই ক্লান্তিটাতেই আমি বাঁচতে চাই।
আরও পড়ুনঃ ‘নূপুরের দাম হাজার হলেও পায়ে…টিপের দাম এক টাকা’ ফের উত্তাপ দিতিপ্রিয়া-জিতু সমীকরণে! দিতিপ্রিয়া পুরস্কার হাতে নিতেই জিতুর কাব্যিক পোস্ট! পরোক্ষ খোঁচা নাকি নিছক কাকতালীয়? দু’জনের ঠান্ডা লড়াই কি আবার প্রকাশ্যে?
আজকে কাজ করে খুব আনন্দ পেয়েছি। কিছুদিন আগে ফুসফুসের নালিতে একটা সংক্রমণ হয়েছিল, যার ফলে জ্বর অনেক দিন ধরে কম ছিল না। অনেক ওষুধ খাওয়ার পরেও কাজ করতে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে কিছুটা সুষ্ঠু হতেই আবার কাজে ফিরেছিলাম। সত্যি কথা বলতে একটুও বিশ্রামের সময় পাইনি, তারপরেই এমন একটা অনভিপ্রেত ঘটনা আবার আজকে থেকে কাজ শুরু, আশা রাখছি ভালো কিছুই হবে।” আপাতত অভিনেতা আশাবাদী ভবিষ্যৎ নিয়ে, এবার দেখা যাক এই ধারাবাহিক নতুন করে কতটা সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারে।
