গত সোমবার পরলোকে চলে গেলেন বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্র (Dharmendra)। ৯০ এর দোর গোড়ায় এসে, ৮৯ বছর বয়সে চিরবিদায় নিলেন ঠিকই কিন্তু চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি চিরকাল এক কিংবদন্তি হয়েই থাকবেন। ঝলমলে পর্দার রাজপুত্র, যিনি তার অভিনয় থেকে শুরু করে লুক এবং স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের কারণে দর্শকদের মনে গভীর ছাপ রেখেছেন বরাবর। ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে দীর্ঘ কেরিয়ার জুড়ে তিনি শুধু অ্যাকশন দৃশ্যে নয়, রোমান্টিক দৃশ্যেও পারদর্শী ছিলেন। পর্দার প্রেমকাহিনিতে তার অবদান আজও নতুন প্রজন্মকে মুগ্ধ করে।
প্রসঙ্গত, একই ভাবে ১৯৭৫ সালের ‘শোলে’ (Sholay) ছবির শুটিংয়ের সময় ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর (Hema Malini) সম্পর্কের একটি মজার ঘটনা বিশেষভাবে স্মরণীয়। ধর্মেন্দ্র নাকি প্রতিটি দৃশ্য রিটেক বা বাড়ানোর জন্য ছোটখাট কৌশল অবলম্বন করতেন। একটি বিশেষ দৃশ্যে, যেখানে তার চরিত্র ভীরু হেমার চরিত্র বাসন্তীকে রিভলভার চালাতে শেখাচ্ছিল। সেই মুহূর্তেই তিনি একটি অভিনব পরিকল্পনা করেন হেমাকে কাছে পেতে। তিনি নাকি স্পটবয়দের প্রতি টেকের জন্য ২০ টাকা করে দিতেন!
যাতে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করে বা রিফ্লেক্টর ফেলে দেয় এবং দৃশ্যটি পুনরায় করতে হয়। এতে করে ধর্মেন্দ্র বারবার হেমাকে আলিঙ্গন করার সুযোগ পেতেন। এই কৌশলের খরচ বাড়তে বাড়তে ধীরে ধীরে প্রায় দুই হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়! কিন্তু মজার ব্যাপার হলো হেমা মালিনীর প্রতিক্রিয়া। বিরক্ত হওয়ার বদলে তিনি নাকি ধর্মেন্দ্রের শিশুসুলভ দুষ্টুমি এবং একগুয়ে নিষ্ঠায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেটে ছোটখাট এই ‘দুষ্টুমি’ থেকেই তাদের অফ-স্ক্রিন সম্পর্কের সূচনা।
সেদিন শুটিং সেটে সকলেই জানতেন এই ছোট ছোট প্রলোভন একটি রোমান্টিক দৃশ্যের জন্য করা হচ্ছে। এভাবেই পর্দার রসায়ন থেকে বাস্তব জীবনের বন্ধনে রূপান্তর ঘটে হেমা-ধর্মেন্দ্রর। কিন্তু তাদের প্রেম পথ সহজ ছিল না। ধর্মেন্দ্র তখন বিবাহিত ছিলেন প্রকাশ কৌরের সঙ্গে, যিনি হেমার কথা জানতে পেরে ডিভোর্স দিতে অস্বীকার করেছিলেন। এই বাধা সত্ত্বেও, হেমার প্রতি গভীর ভালোবাসা ধর্মেন্দ্রকে নতুন পথ খুঁজতে বাধ্য করেছিল।
আরও পড়ুনঃ ক্যা’ন্সার আক্রান্ত অভিনেত্রী শ্রাবণী বণিক! মায়ের প্রা’ণ বাঁচাতে সবার কাছে অসহায় আবেদন ছেলের
তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে হেমাকে আইনত বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর নিকাহ সম্পন্ন হয় এবং হেমার পরিবারের আয়েঙ্গার ঐতিহ্য অনুযায়ী আরও একটি পূর্ণাঙ্গ বিবাহ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আজ ধর্মেন্দ্র আমাদের মাঝে নেই, তবে তার জীবন ও প্রেমের গল্প চিরকাল বলিউডে জীবন্ত থাকবে। তার সাহস, প্রেমের প্রতি একনিষ্ঠতা এবং পর্দার জাদু মিলিয়ে তিনি চিরকালই ‘ড্রিম বয়’ এবং রোমান্টিক কিংবদন্তি হিসেবে স্মরণীয় থাকবেন।
