আজও টলিপাড়ায় কাল পাতলে শোনা যায়, মহানায়ক উত্তম কুমার নাকি কখনওই ছবির বা নিজের প্রচারে খুব একটা বিশ্বাসী ছিলেন না। ঠিক তেমনই ছিলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেনও। নিজের স্টারডম ধরে রাখতে ছবি মুক্তির আগে তেমন প্রকাশ্যে আসতেন না, তিনি চাইতেন তাঁকে যেন সবাই চরিত্রের মধ্যে দিয়েই চিনুক। আগেই দেখে ফেললে নাকি পর্দায় দেখার আগ্রহ থাকে না, তখন তাই তারকাদের নিয়ে দর্শকদের উত্তেজনাও থাকত তুঙ্গে। হ্যাঁ, তারকা মানেই তো যে আম জনতার ধরা ছোঁয়ার বাইরে! কিন্তু, আজ এই তারকা শব্দের ভার কি ততটাই আছে?
যুগ বদলেছে, ছোটপর্দা বা বড়পর্দা ছাড়াও এসেছে ওয়েব সিরিজ এই সমাজ মাধ্যম। প্রযুক্তির এই অগ্রগতি কোথায় যেন ছোট করে দিচ্ছে তারকা আর ভক্তদের দূরত্বটা! এখন দশজনের মধ্যে নয়জন অভিনেতা অভিনেত্রীরাই রিলার এবং ভ্লগার! সারাদিন তাঁরা কী খাচ্ছেন, কী করছেন বা কোথায় ও কার সঙ্গে যাচ্ছেন? সবই এখন এক ক্লিকে জানতে পারছেন সবাই। ঠিক এতটাই সহজলভ্য হয়ে উঠেছে তারকাদের জীবন। এক সময়, যেসব তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন জানার আগ্রহ পাগল করে দিত ভক্তদের।
আজ সেইসব তারকাদের বেডরুমও কেমন দেখতে, তা সবাই জানেন! কিন্তু কোথাও গিয়ে এই ভক্তদের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা, স্টারডমের মানেকে নষ্ট করছে না তো? যে অভিনেত্রীরা দর্শকদের কাছে পর্দার রাজকন্যা বা স্বপ্নের নারী, তাঁকেই পর্দার বাইরে সাধারণ জীবন যাপন করতে দেখে ফেললে কি সেই আবেগে আঘাত পড়ে না? কিন্তু, প্রশ্ন আরও একটা জায়গায় যে অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব কি মিলছে না অভিনয় করে? প্রসঙ্গত, বর্তমান দিনে পছন্দের একটা চরিত্রে সুযোগ পাওয়া মনে ভাগ্যের ব্যাপার। অনেকে দীর্ঘদিন সেই কারণে অভিনয় থেকে দূরেও রয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ শুটিং শুরু পায়েলের, অবশেষে পর্দায় আসতে চলেছে ‘রাজনন্দিনী’ চরিত্র! আর্যর অতীত কি বদলে দেবে বর্তমানের গল্প? পায়েলের চরিত্রে কি বাড়বে টিআরপি?
তাতে কি? ভ্লগার হয়ে রোজ ভক্তদের সামনে আসা যাচ্ছে আর অর্থনৈতিক স্থায়ীত্বও বজায় থাকছে। উল্লেখ্য, আজকাল নাকি অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিভা নয়, সমাজ মাধ্যমে ফলোয়ার সংখ্যা দেখে অভিনেতা অভিনেত্রী নির্বাচন হয়। অর্থাৎ, যে যত জনপ্রিয়, তাঁর তত কাজ। আর সেই ধারা থেকে পিছিয়ে পড়লে কাজও মিলবে না, অগত্যা তাই ইনফ্লুয়েন্সার বা ভ্লগিংকে বিকল্প পেশা হিসেবে রাখতে হচ্ছে তাদের! দর্শক হিসেবে, এই পরিবর্তনের ধারা নিয়ে আপনাদের কী মতামত? সত্যিই কি সমাজমাধ্যমে তারকাদের সহজলভ্যতা, খ্যাতির পথে বড় বাঁধা?
