পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখে পড়লেন জনপ্রিয় গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী। গত কুড়ি তারিখ সন্ধ্যায় সাউথ পয়েন্ট পাবলিক স্কুলে আয়োজিত স্টেজ শো চলাকালীন হঠাৎই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। গায়িকার অভিযোগ, একটি বিশেষ গান গাওয়ার পরেই দর্শকাসন থেকে এক ব্যক্তি মঞ্চে উঠে এসে তাঁকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। আচমকা ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান শিল্পী ও উপস্থিত দর্শকেরা। মুহূর্তের মধ্যেই আনন্দের পরিবেশ বদলে যায় আতঙ্কে।
লগ্নজিতার কথায়, অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল সন্ধ্যা সাতটায় এবং প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। একের পর এক গান গেয়ে দর্শকদের মন জয় করেন তিনি। প্রথম কয়েকটি গানের পর নিয়ম মেনে তাঁকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। এরপর তিনি তাঁর গানের তালিকার সপ্তম গান পরিবেশন করেন, যা ছিল সাম্প্রতিক দুর্গাপুজোয় মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি দেবী চৌধুরাণীর জনপ্রিয় গান জাগো মা। গান শেষ হওয়ার পর পরবর্তী গানে যাওয়ার আগে দর্শকদের সঙ্গে দু একটি কথা বলছিলেন গায়িকা, ঠিক সেই সময়েই অঘটন ঘটে।
হঠাৎই এক ব্যক্তি দৌড়ে মঞ্চে উঠে আসেন এবং খুব কাছ থেকে চিৎকার শুরু করেন। লগ্নজিতার দাবি, সেই ব্যক্তি এতটাই কাছে চলে এসেছিলেন যে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। তিনি মারতে উদ্যত হয়েছিলেন বলেও গায়িকার অভিযোগ। সৌভাগ্যবশত কয়েকজন অচেনা মানুষ দ্রুত এগিয়ে এসে তাঁকে ধরে ফেলেন এবং বড়সড় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়। মঞ্চ থেকে নামানোর সময় ওই ব্যক্তি উচ্চস্বরে দাবি করেন যে অনেক জাগো মা শোনা হয়েছে, এবার সেকুলার গান গাইতে হবে। মাইক্রোফোন বন্ধ থাকলেও তাঁর চিৎকার দর্শকদের কানে পৌঁছে যায়।
এই ঘটনার পর আর নিজেকে সামলে নিতে পারেননি লগ্নজিতা। শান্ত গলায় মাইক্রোফোনে তিনি দর্শকদের জানান, এমন পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি মঞ্চ ছেড়ে নেমে যান। এরপর সরাসরি ভগবানপুর থানায় গিয়ে পুরো ঘটনার বিবরণ দেন। পুলিশের পরামর্শে তিনি একটি জেনারেল ডায়েরি করেন। গায়িকার কথায়, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মেহেবুব মল্লিক এবং তিনি ওই স্কুলের মালিক পক্ষের একজন।
আরও পড়ুনঃ অরণ্য-পাখির রাজকীয় বিয়ের স্মৃতি আজও অমলিন, সেই তুলনায় আর্য-অপর্ণার বহু প্রতীক্ষিত বিয়ে কি নিতে পারল প্রত্যাশার ভার? এক দশকের ব্যবধানে দুই যুগান্তকারী বিয়ে, ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’র তৈরি করা মানদণ্ড ভাঙতে পারল ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’?
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই টলিপাড়ায় শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী মঞ্চে গান গাইতে গিয়ে এমন আক্রমণের মুখে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। শিল্পীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ এই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না, সেই দিকেই এখন নজর শিল্পীমহল ও সাধারণ মানুষের।
