টেলিপর্দার গল্পে যেমন আবেগ, টানাপোড়েন আর চমক থাকে, বাস্তব জীবনেও ঠিক তেমনই নানা অনুভূতির ওঠানামা চলে শিল্পীদের। সাম্প্রতিক সময়ে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিককে ঘিরে দর্শকের উন্মাদনা তুঙ্গে। জিতু-দিতিপ্রিয়ার পুরনো বিতর্ক ভুলে নতুন জুটি আর্য-অপর্ণাকে আপন করে নিয়েছেন দর্শক। বিশেষ করে আর্য-অপর্ণার বিয়ের পর্ব ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে উচ্ছ্বাস, তা চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এই আনন্দের মাঝেই ছোটপর্দার আর্য, অর্থাৎ জিতু কমলের একটি পোস্ট নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
আর্য-অপর্ণার বিয়ের আয়োজন নিয়ে দর্শকের উচ্ছ্বাস ছিল আলাদা মাত্রার। এত বড়, জমকালো বিয়ে বাংলা ধারাবাহিকে খুব কমই দেখা যায়। অনেকেই বলছেন, এমন আয়োজন শেষ দেখা গিয়েছিল ‘বোঝে না সে বোঝে না’ ধারাবাহিকে। বিয়ের দৃশ্য, সাজসজ্জা, আবেগ—সব মিলিয়ে দর্শকের বহুদিনের অপেক্ষা যেন সার্থক হয়েছে। নতুন অপর্ণাকে ঘিরে আশাও বেড়েছে, গল্পের নতুন মোড় নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। ঠিক সেই সময়েই জিতু কমলের একটি ফেসবুক পোস্ট নজর কাড়ে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় জিতু লেখেন, “অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। না অতিরিক্ত সাহায্য করা, না সাহায্যে নেওয়া। না ভালোবাসা, না অতিরিক্ত সম্মান দেখানো” এই কথাগুলো পড়েই অনুরাগীদের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করে। তাহলে কি আবার কোনও অশান্তি? ব্যক্তিগত জীবনে কি কোনও আঘাত পেলেন অভিনেতা? যদিও পরে নিজেই পোস্টের নিচে লেখেন, এটি ‘র্যানডম থট’, অর্থাৎ কারও উদ্দেশে নয়। তবু জিতুর কথার মধ্যে যে এক ধরনের ভারী অনুভূতি আছে, তা এড়িয়ে যাওয়া যায়না।
দিতিপ্রিয়া থেকে শিরিন—সহকর্মীদের সবসময় নিজের আগে রাখতে ভালোবাসেন জিতু কমল। একাধিক বিতর্ক ও অভিযোগের মুখেও তাঁকে দেখা গেছে শান্ত, সংযত ভূমিকায়। ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকে নিজের জনপ্রিয়তাকে আড়ালে রেখে সহশিল্পীদের এগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বারবার করেছেন তিনি। এমনকি নতুন অপর্ণাকে সাহায্য করা, নিজের প্রাপ্ত পুরস্কার তুলে দেওয়া—এই ঘটনাগুলোও অনুরাগীদের চোখ এড়ায়নি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই কি তাঁর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা?
আরও পড়ুনঃ আরামবাগের অনুষ্ঠানে আবারও মঞ্চে উঠে ‘জাগো মা’ই গাইব! হেন’স্থার পরেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল লগ্নজিতা!
সম্প্রতি বর বেশে একটি ছবি পোস্ট করে জিতু লেখেন, “বোকারা প্রেমে পড়ে… আমিও সেই বোকাদের দলে।” ক্যাপশনে আবার বলেন, “বোকাদের দল শক্তিশালী, স্বার্থহীন।” ছবিতে তাঁর চোখেমুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। এই পোস্টের পর অনুরাগীদের মনে নতুন করে প্রশ্ন—আজকের সমাজে কি সত্যিই স্বার্থহীন ভালোবাসার জায়গা আছে? নাকি তার পরিণতি শুধুই কষ্ট? ধারাবাহিক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও সহকর্মীদের কথা ভেবে থেকে যাওয়া জিতু কমলের জীবনে কি নিজের প্রাপ্য সম্মান এখনও অধরা? সেই উত্তর খুঁজতেই যেন এখন তাকিয়ে রয়েছেন তাঁর অগণিত অনুরাগী।
