বাংলা টেলিভিশনে এমন কিছু ধারাবাহিক তৈরি হয় যা শুধুমাত্র ধারাবাহিক বললে ভুল হবে, সেগুলি দর্শকদের একান্ত আপন হয়ে ওঠে। সে ধারাবাহিকের প্রতিটি চরিত্র দর্শকদের নিজের পরিবারের সদস্য হয়ে যায়। তবে কালের নিয়মে সব কিছুরই শেষ আছে। ধারাবাহিকও একদিন না একদিন শেষ হয়। কিন্তু এমন কিছু ধারাবাহিক থেকে যায় যা দর্শকদের মনে অবিস্মরণীয়।
এমনই এক চিরকালীন ধারাবাহিক ওগো বধূ সুন্দরী। স্টার জলসার এই ধারাবাহিক একসময় হিট হয়ে উঠেছিল বাঙালি পরিবারগুলোতে। শুধু বাঙালি পরিবার বললে ভুল হবে। তখনকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে বসে এই ধারাবাহিক দেখতো কারণ সেটা ছিল একেবারেই পারিবারিক গল্প।
ধারাবাহিকে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। আজকের এক সফল জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। পথ চলা শুরু হয়েছিল ছোট পর্দা থেকেই। এই মেঘা ধারাবাহিকের অভিনয় নায়িকার কাছে মেঘ না চাইতেই জলের মত ছিল। কারণ কোনদিনই তাঁকে কাস্ট করা হবে এমনটা ভাবাই হয়নি।
এর কারণ হলো ধারাবাহিকের সুযোগ প্রথমে গিয়েছিল অন্য এক অভিনেত্রীর কাছে। মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেই নায়িকাকে। দুর্ভাগ্যবশত সেটা তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আর তারপরেই সৌভাগ্যবশত সেটাই জুটেছিল ঋতাভরীর কপালে।
এই নায়িকা ছিলেন ত্বরিতা চক্রবর্তী। তিনি তখন বন্ধুদের সঙ্গে পুজোর সময় ম্যাডক্স স্কয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। সময়টা ছিল ২০০৮ সাল। হঠাৎ করেই এক চিত্র সাংবাদিকের চোখে পড়ে যান তিনি এবং লেন্সবন্দী হয়েছিলেন ত্বরিতা। মনে ধরে যায় প্রযোজক রবি ওঝার। সঙ্গে সঙ্গে ওগো বধূ সুন্দরী ধারাবাহিকে মূল চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন ত্বরিতা।
কিন্তু ললিতা চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব তখন ফিরিয়ে দেন ত্বরিতা। পরবর্তীতে সেই জায়গায় বেছে নেওয়া হয়েছিল ঋতাভরী চক্রবর্তীকে। অল্পদিনেই ললিতা চরিত্রে বাড়ির মেয়ে হয়ে ওঠেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। সিরিয়ালের গল্প আর অভিনেতা অভিনেত্রীদের তুখোর অভিনয় মন জিতে নিয়েছিল দর্শকদের। তাই ধারাবাহিক শেষ হবার ব্যাথা বছর পরেও তা নিয়ে কথা বলা আজও প্রাসঙ্গিক।