হালয়ার পর থেকেই দেবীপক্ষের শুরু হয়ে গেছে। অবাঙালিদের কাছে যেমন এই সময়ে নবরাত্রি পালিত হয় তেমনই বাঙালিদের কাছে রয়েছে দশমহাবিদ্যা। দেবীর দশটা রূপ পূজিত হয় নানাভাবে। মহালয়া আসলেই বাঙালিদের মন কেমন হয়ে ওঠে পুজোর গন্ধে। পুজোর আমেজ শুরু হয়ে যায় তার আগে থেকেই। আর এই দিনটি থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে পুজো।
বেশ কিছু বছর ধরে বাঙালিদের এই উৎসাহ কে দ্বিগুণ করে দিয়েছে বিভিন্ন বাংলা চ্যানেলে হওয়া মহালয়ার অনুষ্ঠান। এই দিনে ভোরবেলা থেকে রেডিওতে মহালয়া সোনার পাশাপাশি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলতে থাকে। বিভিন্ন জনপ্রিয় ধারাবাহিকের নায়ক ও নায়িকারা দুর্গা, অসুর বা অন্যান্য রূপে দেখা দেন এই বিশেষ এক দিনে।
তবে তা ঘোষনা হতেই সেই সময় থেকে ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকে যে কে হবে দুর্গা আর কে হবে অসুর কিংবা কোন নায়ক বা নায়িকাকে দেখা যাবে আর অন্য রূপে? তারপর সেই ঝলক প্রকাশ্যে আসলে দর্শকদের মধ্যে উৎসাহ আরও দ্বিগুণ হয়ে যায়।
কিন্তু এবার মহালয়ার পর এক জনপ্রিয় প্রথম সারির বাংলা চ্যানেলকে কেন্দ্র করে অন্যরকম বিষয় সৃষ্টি হয়েছে। ভক্তদের মন রুষ্ট হয়েছে। দর্শকদের দাবি হিন্দু সংস্কৃতি থেকে বিকৃত করে উপস্থাপিত করা হয়েছে ওই চ্যানেলে। আর আক্রমণের কেন্দ্রে রয়েছে কালার্স বাংলা। এইবার কালার্স বাংলা চ্যানেলে দেবী দশমহাবিদ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে দেবীর দশটা রূপের মধ্যে অন্যতম এক রূপ হল মা ধূমাবতী। বিতর্কটা সেই রূপকে নিয়ে তৈরি হয়েছে।
এই অনুষ্ঠান নিয়েই আপাতত হাসাহাসি চলছে। অনেকে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন যথেচ্ছভাবে হিন্দু পুরাণ বিকৃত করে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে দেবী ধূমাবতীর রূপ নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পুরাণে তাঁর রূপ বর্ণনা করা হয়েছে, দেবী ধূমাবতী সাদা বস্ত্র পরিধাণকারী বৃদ্ধা, কোনো রকম অলঙ্কার দেখা যায় না তাঁর অঙ্গে। কিন্তু কালার্সের মহালয়ার অনুষ্ঠানে দেবী ধূমাবতী গয়না পরিবৃত এক মহিলা। সাদা কাপড়ের সঙ্গে রুদ্রাক্ষের মালা ছাড়াও অলঙ্কার রয়েছে। এই ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সৈরিতী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাজ এবং নাচ নিয়ে রীতিমতো হাসাহাসি তৈরি হয়েছে। কেউ বলছে এটা ‘গেম অফ থ্রোনস’ এর বাংলা সংষ্করণ। দেবী ধূমাবতীকে অলঙ্কার পরিয়ে হিন্দু সংষ্কৃতিকে নিজের মতো বদলে ফেলাকে নিয়ে কেউ কেউ আবার চ্যানেলের বিরুদ্ধে রাগ প্রকাশ করেছে।