সাধারণ মানুষ টিভির পর্দার সাথে নিজেকে এত বেশি জড়িয়ে ফেলে কেন?এটা ভাবলে হয়তো একটা কথাই সবার প্রথম উঠে আসে তা হলো ‘নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিল’। যা একটা সাধারণ মানুষের জীবনে ঘটে, তাই সিরিয়াল বা সিনেমার লেখকলেখিকারা, টিভির পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন।
তবে আজকাল টিভির পর্দায় ভালোবাসা, প্রেম, বন্ধুত্ব, সম্পর্ক সবকিছুই জানো কেমন ভেজাল মেশানো। কিন্তু বাস্তব জীবনে তো এখনো আছে কিছু নির্ভেজাল সম্পর্ক। আর তাদের দেখেই অনুপ্রাণিত হয়ে হয়তো আজও এমন কিছু গল্প টিভির পর্দায় আসে যা অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ছাড়াই মানুষের ভালো লাগে।
যেমন করে ১৯৫৯ সালে পরিচালক সত্যজিৎ রায় দেখিয়েছিলেন তার ছবি ‘অপুর সংসারে’ এক স্বামীস্ত্রীর গল্প। যারা একে অপরকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে স্নেহ করে গোটা একটা জীবন কাটিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখে। সেখানে ছিল না তেমন কোন অন্তরঙ্গ মুহূর্ত বা দৃশ্য কিন্তু তাও মানুষের মনে আজও রয়েগেছে।তবে বর্তমান যুগে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত বা দৃশ্য ছাড়া হয়তো কোন টিভি সিরিয়াল বা সিনেমা খ্যাতি অর্জন করতে পারে না এমনটাই মনে করেন পরিচালকরা। তাই আজকাল বেশিরভাগ গল্পগুলোতেই রয়েছে এমন সব মুহূর্ত যা দেখে একবার হলেও মনে হবে যে আপনি এটা একা দেখলেই ভালো করতেন।
তবে ব্যতিক্রম তো সবকিছুতেই থাকে সেভাবেই গল্প সাজিয়েছেন ‘মিঠাইয়ের’ লেখিকা শাশ্বতী ঘোষ।বর্তমানে বাংলা টেলিভিশন জগতে একটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক হল ‘মিঠাই’। যেখানে নায়ক নায়িকার মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক তো রয়েছে কিন্তু তাদেরকে কখনোই সেভাবে অন্তরঙ্গ দৃশ্যে দেখা যায়নি।
তবে এবারের ধারাবাহিকটির একটি এপিসোডে দেখা গেল সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ ছবিটির ছোঁয়া। যেখানে দেখা গিয়েছিল অপু এবং তার স্ত্রী একে অপরকে খেতে বসার সময় তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া করছে।ঠিক সেই ভাবেই এদিন ‘মিঠাই’ তে দেখা গেল মিঠাই এবং সিদ্ধার্থ একে অপরকে ঘুমোতে যাওয়ার সময় তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া করছে।
এতগুলো বছর পর শাশ্বতী ঘোষ বাংলার ধারাবাহিকপ্রেমী দর্শকদের এমন আরেকটি জুটি দিয়েছেন যেখানে আছে শুধু ভালোবাসা, বাৎসল্য, স্নেহ, দ্বায়িত্ববোধ, বোঝাপড়া, অভিমান।
যতই চলচ্চিত্র জগৎ উন্নত হোক যতই সমাজ এগিয়ে যাক মানুষের জীবনে এই ছোট ছোট অনুভূতি উপলব্ধি গুলো বেঁচে থাকবে আজীবন। যা হয়তো সো কল্ড রোমান্টিক সিন গুলো কোনদিনই ফুটিয়ে তুলতে পারবে না।