বর্তমানে জি বাংলায় একটা অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক হয়ে উঠেছে বোধিসত্ত্বের বোধবুদ্ধি। একজন বাচ্চা ছেলে যার অগাধ জ্ঞান সে কিভাবে বারংবার বিপদে পড়ে এবং তা কাটিয়ে বেরিয়ে ওঠে সেটাই মূলত দেখায় এই ধারাবাহিক। আর পাঁচটা ধারাবাহিকের থেকে একদম আলাদা আর তাই বোধহয় এর কপালে ধীরে ধীরে যুক্ত শুরু করেছে অনেক নিন্দে মন্দ। বস্তুত যারা শাশুড়ি বৌমার কূটকচালি বা সাংসারিক অশান্তি পছন্দ করেন তারাই বোধহয় বোধিসত্ত্বের বোধবুদ্ধিকে গাঁ’জাখুরি গল্প বলতে পারেন এরকমটাই বলছেন বোধির একনিষ্ঠ ভক্তরা।
বোধিসত্ত্বকে ক্লাস ফোর থেকে ক্লাস সেভেনে একেবারে প্রমোট করা হয়েছে তার জ্ঞানের বহর দেখে। ক্লাস ফোরের একজন বাচ্চা হ্যাকিং করে লালবাজারে সিসিটিভি ফুটেজ নিজের বাড়ির টিভিতে নিয়ে চলে এসেছে। এই নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে বিগত কয়েকদিনে কিন্তু দর্শক যদি একটু খেয়াল রাখত তাহলে সমালোচনা করতে পারতো না।
আসলে বোধিসত্ত্ব একজন প্রডিজি।এবার এই প্রডিজি কী তা জানার জন্য আপনাকে একটু google করতে হবে নয়তো ডিকশনারি খুলে বসতে হবে।
প্রডিজি শব্দের অর্থ হলো ‘পরম বিস্ময়কর ব্যক্তি’। বড় করে বলতে গেলে- A young person with exceptional qualities or abilities.
এবার এই প্রডিজিরা কীরকম হয় একটু বলা যাক। প্রডিজিরা সাধারণত ১০ বছর বয়সের আগে থেকেই তাদের বিস্ময়কর প্রতিভা দেখাতে শুরু করে। এই নিয়ে বাংলাদেশের খ্যাতনামা শিশু-সাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার এর একটি বই আছে, নাম “প্রডিজি”। সেখানে একটি ছোট মেয়ে ছিলো একজন প্রডিজি, তার ছিলো অঙ্কে বিস্ময়কর প্রতিভা।
তবে এই সিরিয়ালটা আসার পর থেকেই কিছু কিছু মানুষ বোধির অবাক করা মেধা, প্রতিভা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে তো স্রেফ গাঁজা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এবার যারা জি বাংলার অ্যাপে বোধিসত্ত্বের বোধবুদ্ধি দেখেন তারা কিন্তু দেখতে পাবেন যে, Zee5 এ ‘বোধিসত্ত্বর বোধবুদ্ধি’র Synopsis অর্থাৎ বাংলায় সংক্ষিপ্তসার পড়লেই দেখতে পারবেন, সেখানে বোধিসত্ত্বকে Prodigy বলা হয়েছে। যখন শুরুতেই তাকে প্রডিজি হিসেবে দেখানো হচ্ছে, তখন তার প্রতিভা নিয়ে হাসাহাসি করাটা বোকামি নয় কি?
‘বোধিসত্ত্বর বোধবুদ্ধি’ আসার পর থেকেই একটার পর একটা সমালোচনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে এই দারুণ সিরিয়ালটিকে। যেখানে বাংলা সিরিয়াল মাত্রই উড়ন্ত সিঁদুর, ভাড়ামো-ন্যাকামো, গ্রামের মেয়ে হঠাৎ বড়লোকের বউ হয়ে যাওয়া, গান নিয়ে পড়াশোনা করে উকিল হয়ে যাওয়া, হাস্যকর বিয়ে, ঘৃণা থেকে ভালোবাসা, ছোটবেলার প্রেম বড় হয়ে না জেনেই বিয়ে হয়ে যাওয়ার মতন (শুধু বাংলা কেন, হিন্দি সিরিয়ালেরও একই দশা) অযৌক্তিক কাকতাল, কুসংস্কার, কুপ্রথায় ঠাসা, সেখানে ‘বোধিসত্ত্বর বোধবুদ্ধি’র মতন নির্দোষ একটা সিরিয়ালের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা, খোঁচানো কতটা যৌক্তিক? হাস্যকর নয় কি? এ যেন ছুঁচ বলছে চালুনিকে, তোর পেছনে ফু্টো কেন’র মতন ছেলেমানুষী! এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় রেখেছেন বোধিসত্ত্বের এক সজাগ ভক্ত।
তাই সমালোচকরা দয়া করে “বোধিসত্ত্বর বোধবুদ্ধি”কে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে নিজেদের জ্ঞান ও বোধবুদ্ধির দীনতাকে ফাঁস করে দেবেন না! তিনি এটাও অনুরোধ করেছেন।