জি বাংলার ধারাবাহিক ‘জোয়ার ভাঁটা’ (Jowar Bhanta) এখন একেবারে চর্চার শীর্ষে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক পর্বের পর দর্শকদের প্রতিক্রিয়া যেন রীতিমতো ঝড় তুলেছে নেটপাড়ায়। নিছক গল্প বলেই নয়, চরিত্রগুলোর আবেগ, মানসিক ভাঙন, এবং অভিনয়ের তীব্রতাই যেন এই ধারাবাহিককে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। পর্বটিতে ‘শ্রুতি দাস’ (Shruti Das) এবং ‘আরাত্রিকা মাইতি’র (Aratrika Maity) চরিত্রের অভিনয় দর্শকদের মনে সরাসরি আঘাত করেছে বলেই দাবী। সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে শ্রুতির চরিত্র ‘নিশা’র এক ব্যতিক্রমী মুহূর্ত।
বাবার মৃ’ত্যুর পর দিদির বিয়ে ভেঙে যাওয়ার যন্ত্রণায় উজি যখন ভেঙে পড়েছে, তখন নিশার আচরণ দেখা গেল একেবারেই প্রচলিত ধারার বাইরে। মাটিতে বসে বাবার মৃ’তদেহের পাশে মাংস খেতে শুরু করে সে, যাতে বাবার টাকায় তৈরি বিয়ের ভোজ নষ্ট না হয়। কিংবা টাকার প্রতি তার আকুলতা, এসব দৃশ্য নাটকীয় মনে হলেও শ্রুতির অভিব্যক্তি এতটাই বাস্তব ছিল যে দর্শকরা চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। বাস্তব জীবনে শ্রুতির স্বামী এবং জনপ্রিয় পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারও এই অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন।
একদিকে দর্শক যেমন শ্রুতির অভিনয়ে মুগ্ধ, আরাত্রিকা সেক্ষেত্রে তেমন নজর কাড়তে পারেননি দর্শকের। বরাবরের মতো এই ধারাবাহিকেও একই ধাঁচের চরিত্রের জন্য শুরু থেকেই তাঁকে নিয়ে নানান সমালোচনা চলছে। আর এদিনের দৃশ্যে যেন সবাই আরাত্রিকার আগের ধারাবাহিক ‘মিঠিঝোরা’র সঙ্গে একাধিক মিল খুঁজে পেলেন। কেউ বলছেন, ‘মিঠিঝোরা’র রাইপূর্ণার মতো ‘জোয়ার ভাঁটা’র উজিও দয়াময়ী সেই কাঁদুনে মহিলা। একদম মানায় না মুখ্য চরিত্রে।
অন্যদিকে শ্রুতি নিজের অভিনয় দিয়ে প্রমাণ করে দিল এতদিন পরে ধারাবাহিকে ফিরেও তার ক্ষমতা একটুও কমেনি। শ্রুতিকেই প্রধান নায়িকা বানানো উচিত, আরাত্রিকাকে একদম মানাচ্ছে না।” অন্যজন আবার বলেছেন, “আরাত্রিকার কি সব সিরিয়ালেই বিয়ের দিন বাবার মৃ’ত্যুটা ম্যান্ডেটরি? কি অলক্ষণে মেয়ে রে বাবা, শুরুতেই বাবাকে খেয়ে নেয়!” যদিও আরাত্রিকার অভিনয় নিয়ে একাংশের দর্শক নানা প্রশ্ন তুলেছেন, তবে এটাও অস্বীকার করা যায় না যে তাঁর চরিত্র উজি অনেকটা ধৈর্যশীল এবং সংবেদনশীল।
আরও পড়ুনঃ পারুলকে ফাঁসিয়েছে মা আর শিরীন! রাগে শিরীনকে কষিয়ে চ’ড় বসালো রায়ান! পারুলের বিরুদ্ধে দুই ষড়য’ন্ত্রকারীকে জেলে পাঠাবে রায়ান! পর্ব ধুন্ধুমার
তবে, ‘জোয়ার ভাঁটা’র মূল শক্তি যে তার কাহিনির মোড় ঘোরানো দৃশ্য আর তাতে যুক্ত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিখুঁত পারফরম্যান্স, সেটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। ধারাবাহিকের নির্মাতারা প্রতিটি চরিত্রের আবেগের দিকটিকে এতটাই গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন যে, দৃশ্যগুলো শুধু চোখে নয়, মনে গিয়ে লাগে। শ্রুতি যেমন প্রমাণ করেছেন যে দীর্ঘ বিরতির পরেও তাঁর অভিনয়ের ধার একটুও কমেনি, তেমনই আরাত্রিকাও বারবার চেষ্টা করছেন নিজের মতো করে চরিত্রে ঢোকার।