অমিতাভ বচ্চন। ৮০ বছরেও তিনি একতর তাজা যুবকের মতই প্রাণোচ্ছল। বিগ বি’কে ছাড়া যেমন বলিউডের বিগ স্ক্রিন জমে না তেমনই কেবিসির মঞ্চ লাগে ফাঁকা। বড় পর্দায় যতটা স্ক্রিন জুড়ে তিনি থাকেন তার থেকেও বেশি জায়গা জুড়ে তিনি রয়েছেন প্রতিটি ভারতীয়র মনে। তাদের কাছে তিনিই একপ্রকার ভগবান।
এহেন ঈশ্বরের জন্মদিনে বিশেষ আয়োজন থাকবে না এমন কী হয়? কোন বনেগা ক্রোড়পতি অনুষ্ঠানের শুটিং ফ্লোরে বিশেষ আয়োজন হল অমিতাভের জন্মদিন উপলক্ষে। সাক্ষী থাকলো গোটা ভারত বর্ষ আর সেই সঙ্গে অমিতাভের ভীষণ কাছের দুই মানুষ তার ছেলে এবং স্ত্রী অভিষেক বচ্চন এবং জয়া বচ্চন।
এই সুন্দর মুহূর্তে আরো এক ইতিহাস সৃষ্টি করল কেবিসি যেখানে বাংলা তরফে বিশেষ সম্মান জানানো হলো এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীকে। জাতীয় সেই মঞ্চ থেকে চোখের জল ফেলে সাদরে সেই উপহারকে গ্রহণ করলেন অমিতাভ বচ্চন।
বাংলার সঙ্গে অভিনেতার সম্পর্ক বহুদিনের। বলা যায় মা সন্তানের মতই সম্পর্ক কারণ একসময় এই বাংলায় থেকেছেন তিনি দিনের পর দিন কাজের জন্যে। শুধুমাত্র বাংলার মেয়েকে বিয়ে করে বাংলার জামাইবাবু তিনি নন, পাশাপাশি বাংলার ছেলেও বটে। কলকাতা থেকে আসানসোলের অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছেন কাজের জন্য। এই বাংলাকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজও চেনেন অমিতাভ বচ্চন।
সেখান থেকে যে এত সুন্দর একটা উপহার আসবে সেটা হয়তো তিনি ভাবতে পারেননি। যদিও সে উপহারের কথা স্ত্রী এবং ছেলে দুজনেই জানতেন আগে থেকে তবে সেটা সারপ্রাইজ রাখা হয়েছিল তার কাছে। জয়া তাঁর পুরনো দিনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। বললেন, ‘আপনার বাংলার সঙ্গে এক অনন্য সম্পর্ক। আপনি রবীন্দ্র সংগীত পছন্দ করেন, লোকগীতি ভালবাসেন তাহলে একটা উপহার দেওয়া যাক আপনাকে’।
পরমুহূর্তেই প্রাঞ্জল, গৌতম দাস বাউল এবং অনন্যার এক অসাধারণ উপস্থাপনার সাক্ষী থাকলো গোটা বাংলা এবং গোটা ভারত। যদি তারে নাই চিনি গো সেকি – প্রাঞ্জলের গলায় সেই গান শুনে আপ্লুত হয়ে পড়লেন বিগ বি। স্মৃতির সাগরে ডুব দিলেন ছলছল চোখে। চোখে জল, মন দিয়ে উপভোগ করছেন সেই গান। শেষ হতেই চোখের জল মুছে নিলেন। শুধু অমিতাভ একা নন, জয়া – অভিষেক দুজনেই সমানভাবে আবেগপ্রবণ হয়ে গেলেন সেই মুহূর্তে। আপ্লুত অমিতাভ বচ্চন স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করে ফেললেন এত সব আয়োজন হল কখন? উত্তরে জয়া বলেন, সবই কেবিসির তরফে করা হয়েছে।
এদিকে এত বড় মানুষের জন্য প্রথম বার গান গেয়ে কেমন লাগছে এই ছোট্ট শিল্পীর? ভাবতেই পারেনি বিগ বির জন্মদিনের জন্য বিশেষভাবে এই গান গেয়েছে প্রাঞ্জল। গতকালের অনুষ্ঠান দেখার পর থেকে খুশিতে আনন্দে এবং গর্বে আত্মহারা, ডগমগ প্রাঞ্জল এবং তার পরিবার।