দুর্গাপূজা লক্ষ্মীপূজা কাটিয়ে আজ কালীপুজো। আর কালীপুজো মানে বাঙালির কাছে একরাশ বাজির মেলা। কালীপুজো যে আলোর উৎসব তা ছোট থেকে বড় সবাই জানে। আর এই কালীপুজোর রাতে সকলেই নানারকম বাজি নিয়ে আনন্দ উপভোগ শুরু করে। বাজির মধ্যে রয়েছে নানা রকমের বাজি ফুলঝুড়ি, মশাল তুবড়ি, চরকা, হাওয়াই প্রভৃতি কিন্তু সবকিছু ছেড়ে বিশেষ আকর্ষণীয় একটি বাজে হলেও চকলেট বোমা। আর এই চকলেট বোমার বিশেষ ব্র্যান্ড যদি বাঙালি বহুদিন ধরে মনে রেখেছে তা হল বুড়িমার চকলেট বোমা।
অনেকেই বলেন বাঙালিরা ব্যবসা পারেনা কিন্তু বুড়িমা এমন একজন মানুষ যিনি সারা দেশকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে একা হাতে কিভাবে ব্যবসা করতে হয়। প্রসঙ্গত এই বুড়িমা হলেন অন্নপূর্ণা দাস যিনি বুড়িমার চকলেট বোমা তৈরি করেন। ওপার বাংলা থেকে দুই ছোট ছোট ছেলের হাত ধরে এবার বাংলায় আসেন অন্নপূর্ণা দাস। যিনি একা হাতে নিজের সংসার টেনেছিলেন। সামান্য বিড়ি বাধা বা সেলাইয়ের কাজ যখন চলছিল না তখন এক কালীপুজোর রাতে বাজির দোকান দিয়েছিলেন।
সেই সঙ্গে অনেক রকম বাজির মধ্যে একটি নতুন বাজি তিনি নিজেই বুদ্ধি খাটিয়ে তৈরি করেন। ছোট ছোট গোল গোল দেখতে বাজি যার ছোট পোল থেকে আগুন দিলেই দুম করে শব্দ করে ফেটে যায়। আরে সেই বাজি সারা বাংলায় বুড়িমার চকলেট বোম নামে পরিচিত হলো। এই বাজি ব্যবসা থেকেই নিজের সংসার গুছিয়ে তুললেন। তারপরেই হাওড়ার বেলুড়ের পিয়ারে মোহন মুখার্জী স্ট্রিটে নিজের একটি বাড়ি তৈরি করলেন।
তারপরও ১৯৯৫ সালে প্রয়াত হন বুড়িমা। তারপরে তার পরবর্তী প্রজন্ম এই বাজে ব্যবসা কি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। ১৯৯৬ সালের পর থেকে দেশে শব্দবাজি নিষিদ্ধ হওয়ার পর বুড়িমা ফায়ারওয়ারক আর শব্দবাজি তৈরি করে না। তার পরিবর্তে নতুন নতুন আতশবাজি তৈরি করেন তারা যা অন্যের না বড় বড় বাজে ব্র্যান্ডগুলো সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করছে। আজও বাঙালির কাছে বুড়িমার চকলেট বোমের মতই বুড়িমার বাজিও জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে এবং যা বাঙালির ঘরে ঘরে আনন্দ ফুটিয়ে তুলছে।