“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।” আলোর উৎসব দীপাবলি (Diwali) একাধারে যেমন আনন্দের, তেমনই সম্পর্কের নতুন আলোয় ভরে ওঠার সময়। এই সময়েই আসে ভাই-বোনের সম্পর্ক উদযাপনের সেই বিশেষ দিন– ‘ভাইফোঁটা’ (Bhai Phonta) । এদিন এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে। স্রেফ উপহার বা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে আটকে নেই এই দিনটা, বরং এর মধ্যে থাকে ভালোবাসা, ভরসা আর পাশে থাকার অঙ্গীকার। দীপাবলি আর ভাইফোঁটার মেলবন্ধনে অনেকেই খুঁজে পান পরিবারে ফিরে আসার অনুভবও।
অভিনেতা ‘শুভ্রজিৎ দত্ত’র (Subhrajit Dutta) জীবনে যদিও এই উপলব্ধিটা একটু অন্যভাবেই ধরা দেয়। তাঁর জীবনে একটা বিশেষ মানুষ আছেন, যিনি রক্তের সম্পর্কের বাইরে থেকেও হয়ে উঠেছেন ঠিক যেন নিজের বোন। অভিনেত্রী ‘মানালি দে’ (Manali Day) ‘বউ কথা কও’ ধারাবাহিকে কাজ করতে গিয়েই যাঁর সঙ্গে তৈরি হয়েছিল এক গভীর সম্পর্ক। সেই বন্ধনটা সময়ের সঙ্গে আরও মজবুত হয়েছে। এমনটা তো সচরাচর দেখা যায় না, যেখানে কোনও সম্পর্ক শুরু হয় পর্দার আড়ালে কিন্তু বাস্তব জীবনে ছাপ ফেলে এতটা গভীরভাবে।
যদিও শুভ্রজিৎ নিজেই বলেছেন, তিনি কখনও ভাবেননি এমনভাবে কারও সঙ্গে এমন একটা বন্ধন তৈরি হবে। মানালির কাছে তিনি শুধু একজন সহ-অভিনেতা নন বরং একজন ভাই। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে তিনি জানেন, পাশে মানালি আছে আর সেটাই তাঁকে অসম্ভব ভরসা দেয়। এই ভরসা, এই নির্ভরতাই তো ভাইফোঁটার মূল কথা– যেখানে বোনেরা রক্তের সম্পর্কের না হলেও অঙ্গীকার করে সব বিপদ থেকে ভাইদের রক্ষা করার। সব বিপদ তো চোখে দেখা যায় না, কিছু বিপদ আসে মানসিক অশান্তি থেকেও।
এমন অবস্থায় মানালি বারবার রক্ষা করেন অভিনেতাকে। তার কথায় উঠে এসেছে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক সময় তাঁর নিজের বোনের থেকে কোনও ফোঁটা না পেলেও, মানালি কখনও ভুল করেননি তাঁকে ফোঁটা দিতে! কাজের ব্যস্ততা থাকলেও, শুটিংয়ের ফাঁকে গাড়িতে বসেই হোক বা অন্য কোথাও– প্রতি বছর কোনও না কোনওভাবে তাঁরা পালন করেছেন ভাইফোঁটা। এটা শুধুই একটা রীতির পালন নয়, বরং বন্ধনের একটা ছোট্ট উদযাপন যেটা কখনওই তাঁরা মিস করতে চান না।
আরও পড়ুনঃ গুঞ্জন ভুল! এক্ষুনি শেষ নয় বরং নতুন মোড়ে পা দিচ্ছে ‘ফুলকি’! নায়িকা বড়পর্দায়, তবু থামছে না ধারাবাহিক! চলবে ১০০০ পর্ব পর্যন্ত? অবশেষে মুখ খুললেন নির্মাতা, ‘ফুলকি’র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কী জানালেন তিনি?
উপহার নিয়ে প্রশ্নে শুভ্রজিৎ বলেন, “নিজের বোনকে উপহার দিতে আলাদা করে কিছু ভবি না।” কথাটা খুব সাধারণ শোনালেও, এর মধ্যে লুকিয়ে আছে আন্তরিকতা। একটা সম্পর্ক যখন এতটাই গভীর হয়, তখন সেটার প্রকাশের জন্য খুব বেশি পরিকল্পনা লাগে না। আজকে যখন নিজের বোনেদের সঙ্গে ভাইদের দূরত্ব বাড়ছে, সেটা সম্পত্তি নিয়েই হোক বা অন্য কারণ– সেখানে দাঁড়িয়ে শুভ্রজিৎ আর মানালি যেন একটা উজ্জ্বল ব্যতিক্রম।