জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার তবু নেপোটিজম শেষ করে দিল এই অভিনেতাকে! পেট চালানোর দায়ে এখন করতে হচ্ছে এই কাজ! পুরোটা পড়লে কেঁদে ফেলবেন

বলিউডে এসে বহু নায়ক নায়িকার ভাগ্য যেমন ভুলে গেছে তেমনই অনেকে অন্ধকার দুনিয়ায় তলিয়ে গেছেন। এত রঙিন দুনিয়া দেখে বাইরে থেকে অনেকেই মনে করেন একবার যদি এই দুনিয়ায় প্রবেশ করা যায় তাহলে জীবনটা পাল্টে যাবে, রঙিন হয়ে যাবে স্বপ্নের মত। কিন্তু বাস্তব সত্যিটা এটাই যে সবসময় সেটা বাস্তবে পরিণত হয় না।

১৯৮৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল মীরা নায়ার পরিচালিত ‘সালাম বম্বে!’। এই ছবিতে নানা পটেকর, ইরফান খান, রঘুবীর যাদবের মতো নামী তারকারা অভিনয় করেছিলেন।

শিরোনাম পড়ে আশা করছি কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছেন। এই অভিনেতার জীবনের যুদ্ধ বহু কষ্টের। বলিউডে যোগ্য সম্মান পেয়েও কাজ পাননি তিনি। কাজ না পেলে পেট চলবে না। তাই পেট চালাতে বেছে নিয়েছেন অন্য পথ। এখন তিনি এই বিনোদন দুনিয়া থেকে অনেক দূরে।

যে অভিনেতার কথা বললাম তিনি হলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা শফিক সাঈদ। নেপোটিজমের দুনিয়ায় প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। বহু শিল্পী। শফিক তাদের মতো একজন। একসময় তিনি অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বই যান। তখন ছিল খুবই কম বয়স। মীরা নায়ার পরিচালিত ‘সালাম বম্বে’ ছবিতে ১২ বছরের শিশুশিল্পীর ভূমিকায় তার অভিনয় দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।

শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার কারণে শফিক ভাল বেতনের চাকরিও খুঁজে পাননি।

শিশুশিল্পীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শফিক সাঈদ। বেঙ্গালুরুতে খুব সাধারন একটি বস্তিতে থাকতেন তিনি। বাস্তবে মুম্বাই শহরটা ঠিক কীরকম তা জানার জন্য তিনি কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে মুম্বইতে চলে আসেন। এখানে আসার পর খুলে গেল তার ভাগ্য। ১৯৮৮ সালে পরিচালিত ‘সালাম বম্বে’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর নানা পাটেকার, ইরফান খান, রঘুবীর যাদবদের পাশাপাশি নজর কেড়েছিলেন ছোট্ট শফিক। মুম্বাইয়ের বস্তির একটি ১২ বছরের শিশুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

জীবনের প্রথম কাজ আর তাতেই মিলেছিল জাতীয় পুরস্কার। ৫২ দিন শুটিং করে তিনি ১৫০০০ টাকা উপার্জন করেছিলেন। তার থেকেও বড় মানুষের প্রশংসা এবং জাতীয় সম্মান। তাতে ডুবে গিয়ে ভেবেছিলেন এবার এই পেশাই বেছে নেবেন তিনি। দুর্ভাগ্যবশত তারপরে আর একটা কাজও মেলেনি। অবশেষে অন্য পথে যেতে হল তাকে।

বিভিন্ন কন্নড় টেলিভিশন ধারাবাহিকেও ক্যামেরার পিছনে কাজ করেছেন তিনি।

১৯৯৪ সালের গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পতঙ্গ’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি বেঙ্গালুরুতে ফিরে যান এবং সেখানে গিয়ে কন্নড় ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতে থাকেন। ভাগ্য সহায় ছিল না তার। কেবল ক্যামেরার পেছনেই কখনও লাইটম্যান, কখনও প্রযোজনার কাজে সহকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন পয়সার জন্য। শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার জন্য ভাল বেতনের চাকরি জোটেনি তার।

বেঙ্গালুরু থেকে ৩০ কিলোমিটার ভিতরের শহরতলি এলাকায় স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ের সঙ্গে থাকেন শফিক।

অবশেষে জীবনকে দাঁড় করাতে সংসার চালাতে তাই বাধ্য হয়ে বেঙ্গালুরু শহরেই অটোরিকশা নিয়ে নেমে পড়লেন রাস্তায়। বেঙ্গালুরু থেকে ৩০ কিলোমিটার এর ভিতরে শহরতলী এলাকাতে স্ত্রী এবং তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে শফিক এখন করেকম্মে খাচ্ছেন। এর ফাকে আবার নিজের জীবন নিয়ে ১৮০ পাতার একটা গল্প লিখে ফেলেছেন তিনি। শফিক মনে করেন সেই গল্প কোন না কোন প্রযোজকের ঠিক পছন্দ হবে কোন না কোনদিন।
তিনি গল্পটির নামকরণও করেছেন ‘সালাম বম্বে’। শফিক এখনও স্বপ্ন দেখেন, এই গল্প কোনও প্রযোজকের পছন্দ হবে এবং এর উপর ছবি তৈরি হবে এক দিন।

Nira