জীবনে বহু মানুষ যুদ্ধ করে এগিয়ে যায়। বহু মানুষ যুদ্ধের কাছে হার মেনে যায়। তবে এই অভিনেত্রীর কাহিনী যুদ্ধ জয়ের গল্প।
টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। কমবেশি বহু মানুষ এখন চিনে ফেলেছেন তাঁকে। অভিনেত্রী নামের পাশে আরো একটি তকমা যুক্ত হয়েছে। ক্যান্সার বিজয়ী। তাও একবার নয় দুবার। এমন গল্প ছড়িয়ে দিতে তো হবেই।
নায়িকা দুবার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তবে অবশেষে ক্যান্সার হার মেনেছে নায়িকার অপরাজেয় উদ্দমের কাছে। নায়িকা প্রথম ধাক্কাটি খেয়েছিলেন ২০১৫ সালে নিজের জন্মদিনের দিন। হঠাৎ তিনি জানতে পারেন বোন ম্যারোতে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এমনকি যেখানে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সেখান থেকে সরাসরি বলে দেওয়া হয়েছিল তিনি আর কতদিন বাঁচতে পারেন। চমকে উঠলেন তো?
এখানেই শেষ নয়। বাকিটা পড়ুন। বলে দেওয়া হয়েছিল মেরে কেটে আর ছ মাস প্রাণ রয়েছে নায়িকার হাতে। নায়িকা বারবার একটাই কথা ভাবছিলেন যে এই যে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য হয়তো আর ফিরে নাও আসতে পারেন। সেই সময় মাত্র ক্লাস ইলেভেনে পড়ছেন ঐন্দ্রিলা।
চিকিৎসা শুরু হওয়ার প্রথম তিন দিনেই ৬০ টা ইঞ্জেকশন নিতে হয়েছিল নায়িকাকে। তারপর থেকে তিনি আর গোনেননি কটা ইনজেকশন নিয়েছেন। ওই সময় কিছু বন্ধুবান্ধব নায়িকার পাশে সব সময় ছিল যারা বারবার খোঁজ নিয়েছে নায়িকার। তবু কিছু ব্যতিক্রম তো থাকেই। এর থেকেই শিক্ষা পেয়েছেন নায়িকা।
একদিন এক বন্ধু পরীক্ষার খাতা দিতে আসে নায়িকার বাড়িতে। কিন্তু সে বাড়িতে ঢোকেনি। নায়িকার মা তাকে অনুরোধ করে বাড়িতে আসার। কিন্তু সে মুখের উপর বলে দেয় সে ধরতে পারবে না কারণ তাকে তার বাড়ি থেকে মানা করে দিয়েছে পাছে তার ক্যান্সার হয়ে যায়। এই অভিজ্ঞতা নায়িকাকে বহুদিন তাড়া করে বেরিয়েছে।
এছাড়াও নায়িকার খুব ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয় যখন তার ছোট্ট মেয়ে হয় সেই সময় ঐন্দ্রিলা ভীষণ উত্তেজিত ছিলেন কারণ তিনি মাসি হয়েছেন। তখন ঐন্দ্রিলা সবেমাত্র কেমো নিয়ে বাড়ি এসেছেন এবং আবার হাসপাতালে গিয়ে ছোট্ট বাচ্চাটিকে কোলে নিতে গিয়েছিলেন। তখন নায়িকা দেখেন তা দিদি এবং তার জামাইবাবু স্বস্তি অনুভব করছেন না বাচ্চাটিকে তার কোলে তুলে দিতে।
এই অভিজ্ঞতাগুলি তাঁকে শক্ত হতে সাহায্য করেছে। তিনি বলেছেন আসলেই আমরা দাবি করি আমরা শিক্ষিত কিন্তু আসলেই আমরা কি শিক্ষিত?