জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“যারা বলতেন আমি নাকি মাধ্যমিক পর্যন্তও পৌঁছতে পারব না, এটা তাঁদের জন্য!” অভিনয়ে যেমন তুখোড়, শিক্ষার্থী হিসেবেও ততটাই দক্ষ— অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায় পেলেন নতুন খেতাব!

বাংলা টেলিভিশনের (Bengali Television) এক জনপ্রিয় মুখ ‘দিতিপ্রিয়া রায়’ (Ditipriya Roy) কেবল অভিনয়েই নয়, পড়াশোনাতেও বরাবর দিয়েছেন একের পর এক চমক। রানী রাসমণির (Rani Rashmoni) ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করে যিনি দর্শকমনে গেঁথে গিয়েছিলেন, আজ তাঁর নাম শুধু ছোট পর্দার গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়। বড়পর্দা, ওটিটি, সব মাধ্যমেই নিজের অভিনয়ের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন তিনি। বর্তমানে জি বাংলার ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar)-এ মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন, যেখানে প্রতিদিনের শুটিংয়ের ব্যস্ততার মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অভিনেত্রী হিসেবে তিনি যেমন দক্ষ, তেমনই দিতিপ্রিয়া নিজের শিক্ষাজীবনকেও একইভাবে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। দিনে শুটিং, রাতে পড়াশোনা—এই ভাবেই নিজেকে তৈরি করেছেন আরও বড় সাফল্যের জন্য। সম্প্রতি মাস্টার্স ডিগ্রির শেষ ধাপটিও সফলভাবে পার করলেন তিনি। জমা দিলেন নিজের ডিসার্টেশন পেপার, শেষ করলেন দীর্ঘ এক শিক্ষাজীবনের অধ্যায়। এই বিশেষ মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে, এদিন দিতিপ্রিয়া কিছু ছবি শেয়ার করেছেন।

দিতিপ্রিয়া রায়,Ditipriya Roy, tollywood

কলেজ ক্যাম্পাসে, হাতে নিজের ডিসার্টেশন ধরা অবস্থায় তাঁর চোখেমুখে স্পষ্ট গর্বের ছাপ। ক্যাপশনে লিখেছেন নিজের অর্জনের কথা, কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পরিবার, শিক্ষক আর কাছের মানুষদের। অভিনয়ের পাশাপাশি শিক্ষায় এমন নজরকাড়া সাফল্য নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্মের কাছে এক বড় অনুপ্রেরণা। আগে থেকে শুরু করে সহকর্মীরা শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাঁর কমেন্ট বক্স। ছবির ক্যাপশনে অভিনেত্রী লিখেছেন, “ঘুমহীন রাত, অগণিত লেখা, আর সুপারভাইজারের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে আমার গবেষণাপত্রের সফরটি শেষ হলো।

গতকাল আমি আমার থিসিস জমা দিয়েছি, আর তাতেই অফিসিয়ালি আমার মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ। আমার শিক্ষকদের, সুপারভাইজারকে, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের প্রতি আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব তাঁদের অটুট সমর্থনের জন্য। তবে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ সেই মানুষগুলোর প্রতি, যারা একদিন মনে করত আমি নাকি মাধ্যমিক পর্যন্তও পৌঁছতে পারব না, শুধু আমার পেশার জন্য! তাঁদের সেই সন্দেহই আমার জেদের আগুনে ঘি ঢেলেছিল।

আর আজ আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি—আমি একজন নিয়মিত ছাত্রী হিসেবে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেছি, আর এই অর্জন আমার জীবনের অন্যতম বড় প্রাপ্তি। এখন আমার লক্ষ্য উচ্চশিক্ষার দিকে, প্রার্থনা করবেন আমার জন্য!” দিতিপ্রিয়া এদিন তাঁর এই সাফল্যের পেছনে থাকা মানুষটিকেও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, “এই যাত্রাপথে আমার সবচেয়ে প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন আমার প্রাইভেট টিচার। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যিনি আমাকে পড়াতেন।

সে সময় তিনি নিজেও একজন স্নাতক ছাত্রী ছিলেন। গতকাল, যখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শেষ দিনটি কাটাচ্ছিলাম, তখন হঠাৎ করেই তিনি এলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক হিসেবে! সেই মুহূর্তটা ছিল আমাদের কাছে গর্বের।
একসময়ের আমার শিক্ষিকা, আর আজ আমারই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা—জীবন যেন সত্যিই বৃত্ত সম্পূর্ণ করল।”

Piya Chanda