টলিপাড়ার আলোচনায় অভিনেত্রী ‘স্বস্তিকা দত্ত’ (Swastika Dutta) বরাবরই একটু আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। কখনও তাঁর অভিনয়ের জন্য, কখনও আবার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নীরব থাকার সিদ্ধান্তের জন্য। সম্প্রতি সম্পর্ক থেকে মানুষ আর পরিস্থিতি নিয়ে যে দৃষ্টিভঙ্গির কথা তিনি বলেছেন, তা অনেকটাই যেন জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা! তিনি স্পষ্টভাবে বোঝাতে চেয়েছেন, মানুষকে এক কথায় ভালো বা খারাপ বলে দাগিয়ে দেওয়া সহজ হলেও বাস্তবটা অনেক বেশি জটিল।
সম্পর্ক ভাঙা বা বদলে যাওয়ার পেছনে আবেগের পাশাপাশি পরিস্থিতির বড় ভূমিকা থাকে, এই উপলব্ধিই যেন তাঁর কথায় বারবার ফিরে এসেছে। এক সময় শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্বস্তিকার সম্পর্ক টলিপাড়ায় যথেষ্ট চর্চিত ছিল। দীর্ঘ কয়েক বছরের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর নানা রকম গুঞ্জন ছড়ালেও, স্বস্তিকা কখনও প্রকাশ্যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগের পথে হাঁটেননি। বরং তিনি নিজের মতো করে পরিস্থিতিকে বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং সেখান থেকে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন।
কাজের মধ্যেই নিজেকে ব্যস্ত রেখে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েনকে প্রকাশ্যে এনে বিতর্ক তৈরি করাটা তাঁর ধাতে নেই। এই নীরবতাই অনেক সময় তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠেছে। প্রসঙ্গত, শোভনের জীবনে পরে নতুন সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় স্বস্তিকা-শোভনের অতীত নতুন করে আলোচনায় আসে ঠিকই, তবে তাতে স্বস্তিকার অবস্থান বদলায়নি। সম্পর্ক ভাঙার পর মানুষ কীভাবে নিজেকে সামলায়, সেটাই তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বিশ্বাস করেন, সব বিচ্ছেদের পেছনে এক জনকে দোষী করা যায় না। সময়, মানুষ আর পরিস্থিতির সমীকরণ বদলালেই অনেক কিছু বদলে যায়। তাই অতীতকে আঁকড়ে না ধরে তিনি সামনে এগোনোর পথটাই বেছে নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গেই সম্প্রতি তাঁর একটি মন্তব্য বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। স্বস্তিকা বলেছেন, “কেউ টক্সিক হয় না, পরিস্থিতি তাঁকে ওমন বানায়। একটা মানুষের মধ্যে যেমন গ্রে সেড থাকে, তেমন লাল-নীল-হলুদ রঙও থাকে। তাই তোমার জানা উচিৎ যে, তুমি ওই বিষাক্ত পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে সামলাবে।
সেটাই অনেকে করতে পারে না, ছেড়ে দেয়। তখন জানলা খুলে দিতেই গাছপালা ঢুকে পড়ে। মানুষ ভগবানের সবথেকে সুন্দর সৃষ্টি। ভগবানের সৃষ্টি কোনদিনও না খারাপ হয় না! তুমি পৃথিবীতে আসার পড়ে নিজেকে কীভাবে তৈরি করছো, সেটা শুধু তোমার হাতেই। তোমার মা-বাবা তোমাকে জন্ম দিয়ে বড় করে এই বিশাল জগতে ছেড়ে দিয়েছে, এবার তোমার দায়িত্ব যে তুমি নিজেকে কেমন তৈরি করবে। নিজেকে কি টক্সিক বানাবে, নাকি স্বচ্ছ থাকবে সেটা নিজের ওপর।
আরও পড়ুনঃ নিশার রাগে দানা বাঁধল প্রতিশোধের আ’গুন! ভিত পুজোর পরিকল্পনা বন্ধ করতে প্রস্তুত সে, কিন্তু বিপদ ঘিরে ধরেছে উজিকে! ‘জোয়ার ভাঁটা’য় আসানসোলের পুলিশের চোখ পড়ল উজির দিকে! এবার দিদিকে কীভাবে রক্ষা করবে সে?
আমার মধ্যেও তো টক্সিসিটি আছে, কিন্তু আমি সেটাকে প্রশ্রয় দিই না!” এই কথাগুলোর মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে তাঁর জীবনের দর্শন, নিজেকে চেনা আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব অন্য কারও নয়। সব মিলিয়ে, স্বস্তিকার এই মানসিক পরিণতিই তাঁকে আজকের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। নতুন অধ্যায় শুরু হওয়া কিংবা পুরনো স্মৃতিকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া, সব ক্ষেত্রেই তিনি মানুষের ভেতরের জটিলতাকে সহজ ভাষায় বুঝতে চান। অতিরঞ্জিত আবেগ বা দোষারোপ নয় বরং আত্মসমালোচনা আর আত্মসংযমই তাঁর পথচলার মূল ভিত্তি।
