অবশেষে ১৮ ফেব্রুয়ারি বহু প্রতিক্ষিত ৭৫ হাজার টাকার টিকিটের কনসার্ট হয়ে গেল। মাথায় সেই গেরুয়া পাগড়ি। কিন্তু বিতর্ক হল না কোনও। যেমনটা হয়ে ছিল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকেই। সেইসব বিতর্ককে গুলি মেরে উড়িয়ে দিলেন শিল্পী। বললেন গেরুয়া তো সন্ন্যাসীদের রং, স্বামী বিবেকানন্দ এই রং পরতেন।
আর সেই কনসার্ট দিন থেকেই একের পর এক ধামাকা দিয়ে চলেছেন বাঙালির গর্বের ছেলে অরিজিৎ। কনসার্টের একের পর এক ক্লিপ ভাইরাল হচ্ছে। তাতে তাঁর গানতো রয়েইছে। কিন্তু বার বার উঠে আসছে মানুষ অরিজিৎ আর শিল্পী অরিজিতের বহু দিক। সম্প্রতি নিজের মাকে হারিয়েছেন অরিজিৎ। কিন্তু করোনার সময় নিজের মায়ের দরকারে পাশে পেয়েছিলেন অনেককে।
সেদিন কনসার্টে তাঁদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে হাত জোড় করে ধন্যবাদ জানান। আর যেটা নিয়ে সবথেকে বেশি কথা হচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রি বড্ড বেশি প্রতিযোগিতার যুগ। একজন তখনই ওপরে থাকবে যখন অন্যজন তাঁর নীচে থাকবে। এটাই শেখানো হয়। আর এই তথাকথিত শেখানো নিয়মগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখানো যেন অরিজিতের একটা অভ্যেস হয়ে গিয়েছে।
সেদিন কনসার্টে সামনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলার আরও এক শিল্পী। তিনি আবার শুধু শিল্পী নন, বহু বাঙালির আবেগ। তাঁর গানের ভাষা সবাই বুঝতে না পারলেও আবেগকে ঠিকই বুঝতে পারে। বাংলার রক গানের হাত ধরেছেন তিনি। একা টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।
আশা করি বুঝতেই পেরেছেন কার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের ফসিলসের রুপম ইসলামের কথা। কিন্তু শুধু বাংলা রক গানকে ধরে রুপম ইসলাম জাতীয় স্তরে পৌঁছাতে পারেননি, যেটা অরিজিৎ পেরেছে। কিন্তু সেদিন অতর্কিতে একটা গান গেয়ে ওঠেন অরিজিৎ। ফসিলসের গান। তারপর শুরু হয় জ্যামিং।
ওপারে গান গাইছেন রুপম, আর এপারে গিটার বাজাচ্ছেন অরিজিৎ। বাঙালি এদিন যে মুহূর্তের দর্শন পেয়েছে তা একটা ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে। এক শিল্পীর অপর শিল্পীকে সন্মানদান। শিল্প তো তাই শেখায়।
আর এর পরই আরও একটা বোম ফেলে দিলেন রুপম ইসলাম ও অরিজিৎ সিং মিলে। সেখানেও দেখা যাচ্ছে রুপম ইসলাম কথা বলছেন এবং অরিজিৎ সিং মন দিয়ে গিটারে তাঁরই একটা গানের টিউন বাজিয়ে যাচ্ছেন। ভিডিওটি ছিল আদতে একটি অ্যানাউন্সমেন্ট, যে এবার তাঁদের দুজনের একসঙ্গে একটা গান। আর বাকিটা আপনারাই ভেবে নিন! এই অ্যালবামটা ঠিক কী হতে চলেছে! শুধুমাত্র ভিডিওতে একসঙ্গে দেখেই তাঁদের অনুরাগীরা পাগল হয়ে গিয়েছে। এবার অপেক্ষা শুধু একটা মাস্টারপিসের।