টলিউডে বহু অভিনেতা‑অভিনেত্রীর পরিচয় শুধু বড় পর্দা বা ছোট পর্দার চরিত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। অনেকে অভিনয়ের বাইরেও স্বতন্ত্র শখ, ভ্রমণ, সমাজসেবার মতো নানা দিকের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, যা তাদের ব্যক্তিত্বকে আরও রঙিন করে তোলে। দর্শকরা প্রায়ই অভিনেতার ভক্ত হলেও তাঁরা তাঁর ব্যস্ততা, ইন্ডাস্ট্রির বাইরে জীবন কেমন — সে দিকটা সম্পর্কে কমই জানেন। তাই অনেক সময় পর্দার বাইরে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কেমন—এটি নিয়েই মানুষের কৌতূহল থাকে।
জনপ্রিয় বাংলা অভিনেতা বাদশা মৈত্র বাংলা থিয়েটার থেকে শুরু করে টেলিভিশন ও বাংলা ছবিতে দীর্ঘ কর্মজীবন গড়ে তুলেছেন। মুর্শিদাবাদে জন্ম নিয়ে তিনি থিয়েটারের মঞ্চেই তাঁর অভিনয়ের প্রথম শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং এরপর ডিডি বাংলা‑র ধারাবাহিক জন্মভূমি‑তে অভিনয়ের মাধ্যমে পেশাদার জীবনে পা রাখেন। ধীরে ধীরে বিখ্যাত ধারাবাহিকে এবং পরবর্তীতে চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।
টলিউডের আঁতরে বাদশা মৈত্রকে প্রাঞ্জল, সংলাপের দক্ষ ও সহায়ক চরিত্রের জন্য মনে রাখা হয়। বহু ধারাবাহিক এবং ছবিতে তাঁর উপস্থিতি দর্শকের কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে, যেখানে তিনি চরিত্রের আবেগ‑মনোভাব খুবই স্বাভাবিকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। দর্শকেরাও তাঁকে খালি অভিনয় শিল্পী হিসেবে নয়, বরং সহানুভূতিশীল ও জীবনকে গভীরভাবে অনুভব করা মানুষ হিসেবে চিনে থাকে।
অভিনয়ের বাইরেও বাদশা মৈত্রের জীবন আলাদা এক রকম রঙ ধারণ করে। সম্প্রতি একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন যে জঙ্গল‑ভ্রমণ ও ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি তাঁর বড় শখ। প্রকৃতির কাছে থাকা‑থাকাই তাঁর মনের বিশ্ব, এবং মাঝে মাঝে নানা বন্যপ্রাণী ও মনোরম বনভূমিতে দিনের পর দিন কাটানোর অভিজ্ঞতা তাঁর কাছে অমূল্য। এই শখ তাঁকে টিভি‑চলচ্চিত্রের বাইরে প্রকৃতির অগাধ নয়নে করে তোলে, যেখানে বাঘ, শকুনের মতো প্রাণীর মাঝেই তার ঘোরাঘুরি। এই অভিজ্ঞতার গল্পগুলো নিজের জীবনের গল্পের মতোই ব্যস্ততার মাঝে শান্তির সরল অঙ্গ হিসেবে রয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ ‘যে চরিত্রই করুক, সবাই অভিনেতার নাম শঙ্কর চক্রবর্তী জানত…এখন চরিত্রকে চেনে, অভিনেতাকে নয়!’ বর্তমানে সাতদিনে পরিচিতি তৈরি হচ্ছে, দু’বছর টিকছে না! ছোটপর্দায় পরিচিতির বদলের সংজ্ঞা নিয়ে অকপট কুশল চক্রবর্তী!
বাদশা মৈত্র শুধু অভিনয়ই করেন — তিনি দর্শকের মতোই জীবনকে অনুভব করেন, কাজ করেন, ভ্রমণ করেন এবং পরিবেশ‑প্রকৃতির সান্নিধ্য অনুভব করেন। তাঁর জীবন এক প্রহেলিকার মতো, যেখানে টলিউডের আলো‑ছায়া, থিয়েটার‑স্ক্রিন, বন্যপ্রাণী‑গভীর অরণ্য সবই মিলে এক অসাধারণ রঙিন গল্প তৈরি করেছে।
