গতকাল দুপুর ১২: ৫৯ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। দীর্ঘ কুড়ি দিনে মৃত্যুর সঙ্গে কঠিন লড়াই লরে, শেষ পর্যন্ত হেরে যেতে হলো তাকে। তবে এতদিন পর্যন্ত জানা যাচ্ছিল অভিনেত্রীর মৃত্যুর কারণ ব্রেন স্ট্রোক থেকে মৃত্যুর আগের দিন রাতের দশবার কার্ডিয়াক অ্যারিস্টের জন্য।
কিন্তু সম্প্রতি হাসপাতালের তরফ থেকে জানা গেছে যে‘ইউয়িংস সারকোমা’-র রোগী ছিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। তবে এই রোগকে হারিয়েই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেও এসেছিলেন তিনি। কিন্তু ক্যান্সার তার পিছু ছাড়েনি। আবার তৃতীয়বারের জন্য ফিরে এসেছিল এই মারণ রোগ। যে বেসরকারি হাসপাতালে অভিনেত্রী ভর্তি ছিলেন সেখান থেকেই জানানো হয়েছে যে তৃতীয় বার ক্যান্সার তার মাথায় ছড়িয়ে পড়েছিল। আর সম্ভবত সেই কারণেই একাধিকবার স্ট্রোক হয় অভিনেত্রীর।
প্রথমবার ১লা নভেম্বর স্ট্রোক হয় অভিনেত্রীর। তাকে ভর্তি করানো হয় শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং তার জন্য অস্ত্রোপচার করতে হয়। প্রথম থেকেই অভিনেত্রীর অবস্থা ছিল সঙ্কটজনক ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাকে। তারপরে বায়োস্পিতে দেখা যায় আগের সেই ‘ইউয়িংস সারকোমা’ থেকেই মস্তিষ্কে দেখা দিয়েছে ‘মেটাস্টেসিস’।
শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানান,‘ইউয়িংস সারকোমা’বলে একটি টিউমার হয় যা শরীরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এবং ধীরে ধীরে ‘মেটাস্টেসিস’ শুরু করে। এটা সাধারণত হারবে তার পাশে হয়ে থাকে। আগে একাধিকবার ঐন্দ্রিলা জানিয়েছে যে তার হাতে ব্যথা হত। ডাক্তার অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন যে এই টিউমারের কারণে হাতে ব্যথা হত অভিনেত্রীর। ডান হাতের উইং এ এই ‘ইউয়িংস সারকোমা’র টিউমার রয়ে গিয়েছিল। অভিনেত্রীর সোল্ডার থেকে মাথায় ছড়িয়ে পড়েছিল এই ক্যান্সারের কোষগুলি। আর সেই কারণেই পহেলা নভেম্বর হঠাৎই ব্রেন স্টোকে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী।
চিকিৎসক আরো জানান যে অভিনেত্রীর ফুসফুসে ওই একই ক্যান্সারের কোষ ছড়িয়ে ছিল। সেই সময়ে চিকিৎসা এবং সার্জারি, কেমোথেরাপি হয়ে ছিল। তবে এবারে এছাড়া সংক্রমণও হয়েছিল যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক চালানো হয়েছিল। এমনিতেই কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন কষ্টদায়ক যার জন্য অনেক রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। যার ফলে এই রোগীর জন্য ছোট সমস্যা বড় হয়ে দেখা দেয়। মেটাস্টেসিস, স্ট্রোক এবং ইন্টার সেরিব্রাল হেমারেজ ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর প্রধান কারণ বলে জানা গেছে।