বাংলা সিনেমার মহানায়ক (Mahanayak) এবং মহানায়িকা(Mahanayika) বলা হয় তাঁদের। বাংলা সিনেমা তাঁদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। তাঁদের মতো নায়ক-নায়িকা জুটি বাংলায় আর দ্বিতীয়টি আসেনি। তাঁদের জুটির ক্যারিশ্মায় আজও মুগ্ধ বাঙালি সমাজ। তাঁরাই বাংলা সিনেমার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জুটি। বুঝতেই পারছেন কাদের কথা বলছি। হ্যাঁ, উত্তম কুমার (Uttam Kumar) ও সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)। যাঁদের রসায়নে আজও বুঁদ বঙ্গ দর্শকরা।
এই জুটিকে দেখেই প্রেমের নতুন মানে বুঝেছিল বাঙালি। সম্পর্কের রসায়ন কেমন হওয়া উচিৎ তার উদাহরণ ছিলেন এই দুজন। তবে শুধুমাত্র অনস্ক্রিন নয় তাদের অফস্ক্রিন সম্পর্কও মুগ্ধ করত বাঙালিকে। বলা বাহুল্য উত্তম-সুচিত্রার রোমান্টিকতার আবেশে মজে ছিল দর্শকরা। অনস্ক্রিনের পাশাপাশি অফস্ক্রিনেও তাদের প্রেম নিয়ে আজও টলিউডে চর্চা চলে।
তাঁরা একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করতেন। বাস্তব জীবনেও একসঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন এই দুজন। এমনকি তাঁরা দুজন বাস্তবে ঘর বাঁধলে নিঃসন্দেহে খুশি হতেন তাঁদের ভক্তরা। কিন্তু বাস্তব জীবনে দুজনেই ছিলেন সংসারী। সংসার সন্তানদের টান উপেক্ষা করতে পারেনি কেউই।
উত্তম কুমার বাড়ি ছেড়ে সুপ্রিয়া দেবীর কাছে গিয়ে থাকলেও সংসারের টান অপেক্ষা করতে পারেননি সুচিত্রা সেন। জানা যায়, পর্দার বাইরে একে অপরের প্রতি আসক্ত ছিলেন তাঁরা। শোনা যায় রমার প্রেমে পড়েছিলেন উত্তম। যদিও গোটা জীবন খুব ভালো বন্ধু হয়েই থেকে যান দুজনে।পর্দায় তাঁদের অন্তরঙ্গ প্রেম কবে বাস্তবে পরিণত হয়েছিল তা বুঝতেই পারেননি কেউ।
উল্লেখ্য, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি সাক্ষাৎকারে উত্তম কুমার নিজেই সহ- অভিনেত্রী সুচিত্রার প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন। মহানায়ক জানিয়েছিলেন, তিনি মহানায়িকাকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু সুচিত্রা সরাসরি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
কিন্তু কেন সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মহানায়িকা? তিনি কি ভালবাসতেন না উত্তমকে? কিন্তু টলি পাড়ার গুঞ্জন যে অন্য কথা বলে! জানা যায় এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে উত্তমকে সুচিত্রা জানিয়েছিলেন, বিয়ে করে নিলে তো আর স্বামী-স্ত্রীর একঘেয়ে প্রেম কাহিনী দেখতে কেউ আসবে না। এরপরই নাকি অভিনয় দুনিয়া থেকে দূরত্ব বাড়ান সুচিত্রা সেন। একাকীত্ব আসে উত্তম কুমারের মধ্যে। তাদের মধ্যে নাকি তেমন দেখাও হত না, ফোনে অবশ্য কথাবার্তা চলত। ওই যে মনের টানটা রয়েই গিয়েছিল।