বাংলার ছোট পর্দার (Bengali Television) অত্যন্ত এক পরিচিত মুখ, অভিনেত্রী ‘সোহিনী সান্যাল’কে (Sohini Sanyal)। একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি। জানলে অবাক হতে হয়, যেখানে কম বয়সে মায়ের চরিত্র পেয়ে অভিনেত্রীরা খারিজ করে দেন। সেখানে বয়সের তুলনায় অনেক আগেই তিনি মায়ের চরিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন, কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে এক কঠিন বাস্তবতা। সেই গল্প অনেকেরই অজানা, তবে কি সেই অতীতের অধ্যায়?
এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জীবন ও কেরিয়ারের বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন সোহিনী। সোহিনী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর মায়ের চিকিৎসা খরচ ছিল দৈনিক প্রায় এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি। সেই সময় কোনওরকমে সংসার চালিয়ে, মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করাটাই ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। জীবনের এই কঠিন সময়ে অভিনয়ই হয়ে ওঠে তাঁর একমাত্র হাতিয়ার। নায়িকার চরিত্রের প্রস্তাব এলে ফিরিয়ে দেন।
বরং ছোটবেলাতেই নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হন। শুধুমাত্র আর্থিকভাবে নিজেকে স্থিতিশীল করাই ছিল তার লক্ষ্য। কাজের চাপে নিজের ব্যক্তিগত জীবন বা শারীরিক আরাম-আয়েশের দিকেও কখনও নজর দেননি সোহিনী। একের পর এক ধারাবাহিকে কাজ করে গেছেন, ছুটি নেওয়ার কথা ভাবেননি কখনও। কারণ তাঁর কাছে সময় মানে ছিল টাকা, আর সেই টাকাই ছিল মায়ের বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা।
আর তাই একদিকে যখন পর্দায় হাসিমুখে ‘মা’ হয়ে উঠেছেন, বাস্তবে তখন তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে নিজের মায়ের বেঁচে থাকার জন্য। মায়ের অসুস্থতা, তাঁর যন্ত্রণা, এসব কাছ থেকে দেখেছেন সোহিনী। একজন মেয়ের পক্ষে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হয়তো এই প্রিয় মানুষটির কষ্ট দেখেও কিছু করতে না পারা। তাই একসময় মা হারানোর পর অভিনেত্রী মনে করেন, হয়তো মৃত্যুই মায়ের মুক্তি। সেই অসহ্য যন্ত্রণার জীবন থেকে স্বর্গীয় শান্তিই হয়তো শ্রেয়।
আরও পড়ুনঃ টিআরপি-তে ফের ‘ফুলকি’র রাজত্ব! সিংহাসন দখলে রাখল পরশুরাম! কামাল করল চিরসখা, টিআরপিতে দারুণ চমক!
তাঁর চোখে, আত্মার যন্ত্রণা হয়তো শরীরের যন্ত্রণার চেয়ে কম। আজকের সোহিনী সান্যাল শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রী নন, তিনি একজন লড়াকু মেয়ে। মায়ের প্রতি দায়িত্ব, ভালোবাসা আর আত্মত্যাগের এক জীবন্ত উদাহরণ। তাঁর জীবন কাহিনি প্রমাণ করে দেয়, পর্দার পিছনে কখনও কখনও থাকে নিঃশব্দ এক সংগ্রাম, যেটা দর্শকরা দেখতে পান না। কিন্তু সেই যুদ্ধই একজন শিল্পীকে সত্যিকারের মানুষ করে তোলে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।