তিনি বিশিষ্ট পরিচালক দীনেন গুপ্ত ও অভিনেত্রী কাজল গুপ্তের মেয়ে। তিনি অভিনেত্রী সোনালি গুপ্ত। পরবর্তীতে তাঁর বিয়ে হয় বাগবাজারের বিখ্যাত বসুবাড়িতে। আর ওই বাড়িতে বিয়ের পর তিনি হয়ে হন সোনালী গুপ্ত বসু। তাঁদেরই ঐতিহাসিক স্থাপত্য হল ‘বসুবাটী’।
সোনালী গুপ্ত জন্মইস্তক বাড়িতে অভিনয়ের পরিবেশ পেয়েছেন। সত্যজিৎ রায়, উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুচিত্রা সেন নামজাদা সমস্ত তারকাদের ভিড় ছিল তাঁদের বাড়িতে। বাবার পরিচালনাতেই প্রথমবার সিনেমার পর্দায় মুখ দেখান অভিনেত্রী সোনালি গুপ্ত।
বেশিরভাগ বাবা দীনেন গুপ্তর ছবি করলেও, অন্য পরিচালকদের ছবিও করেছেন তিনি কয়েকটা। তাঁর প্রথম ছবি ছিল ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’। এরপর তপন সিনহার ‘হারমোনিয়াম’ ছবির অফার আসে তাঁর কাছে। সেই সময় ‘হারমোনিয়াম’ ছবির জন্য একদম নতুন জুটি খুঁজছিলেন তপন সিনহা। যদিও সেই সময় পড়াশোনার জন্য অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছিলেন তিনি। এরপর ‘হারমোনিয়াম’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। যদিও বেশ ছোটই ছিল তাঁর চরিত্রটি। কিন্তু সুন্দর অভিনয় এবং লাস্যময়ী চেহারায় দর্শকদের মন জিতে নেন সোনালী দেবী।
উল্লেখ্য, এরপর তপন সিনহার ‘এক যে ছিল দেশ’ ছবিতে দীপঙ্কর দের ভাগ্নির চরিত্রে অভিনয় করে সবার নজর করেছিলেন সোনালী গুপ্ত। পর পর বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করার পর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন অভিনেত্রী। ‘সানাই’ ছবির শ্যুটিং চলছিল বাগবাজারের ‘বসুবাটী’তে। সেখানেই বসু পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্রের সঙ্গে প্রেম হয় সোনালী গুপ্তর। বাবা-মা দেরি করেননি। মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন। সোনালী গুপ্ত হয়ে যান বনেদি বাড়ির বউ। নাম বদলে হন সোনালী বসু।
সুদীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পর আবারও সিনেমায় ফেরেন সোনালি গুপ্ত বসু। ‘শজারুর কাঁটা’ ছবিতে ব্যোমকেশ বক্সীর স্ত্রী সত্যবতীর চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে। তবে অভিনয় ছাড়লেও দীর্ঘদিন একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়িয়েছেন তিনি। জড়িত বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে। যদিও অভিনয় জীবন ছাড়া নিয়ে তাঁর মধ্যে কোনরকম কোনও আক্ষেপ নেই। বরং সুখে সংসার করতে পেরেই খুশি তিনি। অল্প বয়সে তাঁর বিয়ে, এবং অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্তে সবথেকে বেশি খুশি হয়েছিলেন নাকি সুচিত্রা সেন। এমনটাই জানিয়েছিলেন সোনালী দেবী। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘এত অল্প বয়সে ও এত সুন্দর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, খুব খুশি হয়েছি আমি।’