লাজে রাঙা হলো কনে বউ গো। কনে বউ মানেই তার সিঁথি ভর্তি সিঁদুর থাকবে আর হাতে থাকবে শাঁখা-পলা। কপালে লাল টিপ যেনো চেয়ে থাকে। বাঙালি সধবা মেয়ে মানেই আমাদের মনে এই প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে। হিন্দু বাঙালি সমাজের এই রীতি যুগের পর যুগ ধরে চলছে। কেউ পাল্টা প্রশ্ন করেনি বা সেটা বদল করার চেষ্টাও করেনি।
যদিও এখন সিঁদুর, শাঁখা-পলা হাল আমলের ফ্যাশনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে তবে যারা ধর্মের একনিষ্ঠ ভক্ত তারা কিন্তু একে মন থেকেই মানে। তারা পাল্টা প্রশ্ন করে না বরং এটাই তাদের কাছে করণীয় আর বরণীয় বিষয় একটা। বরং বিবাহিত মেয়ের মাথায় সিঁদুর , হাতে শাঁখা-পলা থাকবে না এটা আজও ভাবলে আমাদের অবাক হওয়া ছাড়া গতি থাকে না।
তবে কখনও কি রমণীরা ভেবেছে কেনো বিয়ে করলেই এই সাজ আপন করে নিতে হয়? কেনো বিয়ের পর থেকে আমৃত্যু এই সাজ থাকে অঙ্গে আর সঙ্গে? যদিও এখন অনেক মেয়েরাই এই ছক ভেঙে শাঁখা-পলা পরে না কিন্তু বিশেষ বিশেষ দিনে এখনও বিবাহিত বাঙালি মহিলাদের হাতে এই বিশেষ সাদা ও লাল চুড়ি দেখা যায়।
এর কারণ হলো, মনে করা হয় সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য ও স্বামীর মঙ্গল কামনা করে মহিলারা হাতে শাঁখা পলা পরা ভালো। কিন্তু এই রীতি এলো কীভাবে আমাদের বাঙালি সমাজে?
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে বলা হয়েছে শঙ্খাসুর নামে এক মহাশক্তিশালী অসুর স্বর্গ্য-মর্ত্য জুড়ে প্রচণ্ড তাণ্ডব করলে স্বর্গের সব দেবতা বিষ্ণুর কাছে ছুটে যায়। কিন্তু শঙ্খ নামক এই অসুরের স্ত্রী ছিলেন তুলসী যিনি স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা করে বিষ্ণুর নামে প্রচণ্ড ধ্যান শুরু করেন। বিষ্ণু সাড়া দিলেও শঙ্খাসুরের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হলেন। শেষে নিহত শঙ্খাসুরের হাড় দিয়ে সাদা রঙের চুড়ি তৈরি করে তুলসীকে দিলেন যাতে স্বামীকে কাছে পাওয়ার অনুভূতি হয় তার।