৯ই জুন ছিল অন্তিম পর্ব ‘মিঠাই’এর। এই শেষটা মেনে নিতে না পারলেও নতুনকে স্বাগত জানিয়ে হাসিমুখে বিদায় জানালেন গোটা মিঠাই পরিবার। অতীতের কিছু টুকরো স্মৃতিকে মনে রেখেই বিদায় জানিয়েছেন জিনপ্রিয় এই ধারাবাহিককে। দর্শকদের কথায়, ‘মিঠাই সবসময় আমাদের ফ্যানদের মণিকোঠায় থেকে যাবে, থেকে যাবে “সিধাই” এর মতো কালজয়ী জুটি।” এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় দুই চরিত্র সকলের খুব কাছের হয়ে উঠেছিলেন। ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে প্রথমদিন থেকে গ্রামের মিষ্টি মেয়ে মিঠাই বাঙালির হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। নায়িকা মিঠাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী সৌমীতৃষা কুণ্ডু। ও নায়ক সিদ্ধার্থ মোদকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা আদৃত রায়।
অনস্ক্রিনে এই সিধাই জুটির কেমিস্ট্রি, দুষ্টু মিষ্টি মুহূর্ত, দারুণ অভিনয়ে বুঁদ হয়েছিল বাঙালি দর্শককুল। আর তাই তো এই ধারাবাহিকের অন্তিম লগ্নে দর্শকদের ব্যাকুলতা বিশেষভাবে প্রকাশ পায়। যেন আবেগের বিস্ফোরণ ঘটেছে। ধারাবাহিকের নায়িকা সৌমীতৃষার জন্য ভক্তদের অবিশ্বাস্য রকমের ভালোবাসা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। শেষ শুটিং-এর দিনে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। যেন দুঃস্বপ্নেও হয়ত তাঁরা ভাবেননি যে ‘মিঠাই’ বন্ধ হয়ে যাবে। তবে মিঠাই শেষেদিকেই খবর পাওয়া যায় সৌমীতৃষা আর নতুন কোনও ধারাবাহিকে নয়, বড়পর্দায় এন্ট্রি নিতে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মিঠাই থেকে শুরু করে নিজের আগামী ছবি ‘প্রধান’ নিয়ে নানান কথা বললেন সৌমী। দেবের বিপরীতে নায়িকার রোলে দেখা যাবে। সৌমীতৃষার সঙ্গে অনেক আগেই এই সিনেমায় আসার জন্য কথা হয়।
মিঠাই, দেব অভিনীত ছবির নাম ‘প্রধান’। একেবারে পারিবারিক ছবি এটি। দেব-সৌমীতৃষা ছাড়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অগাস্ট থেকেই শুরু ‘প্রধান’-এর শুটিং। আগামী শীতেই মুক্তি পাবে ছবিটি। প্রথম ছবিতেই দেবের বিপরীতে, যা ভেবে নায়িকা একদিকে খুবই আনন্দ পাচ্ছেন, আবার নার্ভাসও হচ্ছেন। সিনেমা নাকি সিরিয়াল কোনটা অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে দর্শকের আরও কাছে পৌঁছে দিতে পারে? কী মনে করেন সৌমী?
এই প্রশ্নের জবাবে সৌমী বলেন, “আসলে সবটাই নির্ভর করে কাজের প্রচার, চরিত্র এবং গল্পের ওপর। কখনও একটা সিরিয়াল হঠাৎ করে হিট হতে পারে। আবার একটা সিরিয়াল বছরের পর বছর চললেও দর্শকরা তা মনে রাখে না। কিন্তু একটা সিনেমা আগামী পাঁচ বছর দর্শকদের মনে থেকে যায়। এটা আসলে অনেকাংশই নির্ভর করে গল্পের উপস্থাপনার ওপর। আসলে আলাদা করে কোনও প্ল্যাটফর্ম অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কিছু দেয় না। নিঃসন্দেহে সিরিয়াল মানুষের অন্দরমহলে ঢুকে যায়। আবার একটা ভালো সিনেমাও কিন্তু পাঁচ বছর দর্শকরা মনে রেখে দেন।” দর্শকরা মিঠাইকে কি মনে রাখবেন? সেই উত্তরে সৌমী জানান, মন খারাপ হলে সকলের পুরনো সিনেমা চালিয়ে দেখি। কিন্তু পুরনো সিরিয়াল দেখি না। যদিও মিঠাইয়ের ক্ষেত্রে কী হবে তা তিনি জানেন না। আগামী ১০-১৫ বছর পরও দর্শকরা চাইলে জি ফাইভ চালিয়ে এই ধারাবাহিক দেখতে পারেন। এই ধারাবাহিকটা অনেকটা হ্যাপি গো লাকি। মিঠাই-এর কথায়, ‘অনেকের মনের ব্যাথার ওষুধ ছিল এই ধারাবাহিকটি’।
তাঁর আগামী আসন্ন ছবি ‘প্রধান’-এর চরিত্রটা ঠিক কতটা আলাদা মিঠাইয়ের থেকে? কতটা প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে তাঁকে? সৌমীতৃষা বলেন, এই চরিত্র মিঠাইয়ের থেকে আলাদা অবশ্যই। মিঠাই-এর থেকে আলাদা করতেও হবে এবং বিষয়টা তাই বেশ চ্যালেঞ্জিং। এখনও আলাদা করে কোনও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে না। সৌমী আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি যেরূপ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, সেখানে এই ‘প্রধান’ তাঁর জন্য আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি একসময় শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন, পৌঁছেছিলেন একশোতে। আবার এই নতুন প্রজেক্ট শুরু করছেন নিজেকে শূন্যে রেখেই। পরিচালক ও প্রডিউসার দুজনেই বলেন, এই প্রজেক্টের জন্য সৌমীতৃষা প্রথমদিন থেকে নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন।