তিনি এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনের দাপুটে, ছকভাঙা অভিনেত্রী। তিনি বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ। চূড়ান্ত নোংরা কটাক্ষ, অবহেলা, অবজ্ঞাকে দূরে সরিয়ে শুধুমাত্র নিজের প্রতিভাকে সম্বল করে দর্শকদের ভালোবাসা কুড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। গায়ের রং থেকে শুরু করে প্রেম জীবন সবকিছু নিয়েই তীব্র কটাক্ষের ভাগীদার হয়েছেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু থেমে যাননি তিনি। সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে নিজের প্রতিভা, নিজের ভালোবাসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কার কথা বলছি। তিনি আর কেউ নয়, তিনি হলেন ‘রাঙা বউ’ খ্যাত অভিনেত্রী শ্রুতি দাস। জি বাংলার ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিক দিয়ে তাঁর পথ চলা শুরু হয়েছিল। এরপর স্টার জলসার পর্দায় ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। বর্তমানে এই অভিনেত্রীকে দেখা যাচ্ছে রাঙা বউ ধারাবাহিকে।
‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকের সেট থেকেই শুরু হয়েছিল পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে অভিনেত্রী শ্রুতি দাসের প্রেমের সম্পর্ক। তাঁদের প্রেমের সম্পর্কটা তাঁদের কাছে ছিল আর পাঁচটা সাধারণ প্রেমের সম্পর্কের মতোই। কিন্তু তাঁদের সেই প্রেমের সম্পর্ককে হজম করতে সময় লেগেছে বহু মানুষের। না নায়িকা-পরিচালক প্রেম করেছেন বলে নয়, ভীষণ রকমের অসম বয়সী ছিল শ্রুতি ও স্বর্ণেন্দুর প্রেম। তাঁদের দুজনের মাঝে বয়সের পার্থক্য ছিল বিস্তর। এই নিয়ে কম কটাক্ষ সহ্য করতে হয়নি তাঁদের। এই সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রচুর লড়াই করতে হয়েছে তাঁদের দুজনকে।
অবশেষে চলতি মাসের ৯ই জুলাই চার হাত এক হয়েছে। আর তাঁদের বিয়েটা অনেকটা বোম পড়ার মতো পড়েছে টলিপাড়ায়। কাকপক্ষীও টের পায়নি যে তাঁদের বিয়ে হচ্ছে। একেবারে পরিবারিক ভাবে বিয়ে করেছেন তাঁরা। না উপস্থিত ছিলেন না ইন্ডাস্ট্রির কেউই। আর এর ফলে যে অনেকেরই মুখভার হয়েছে তা বিলক্ষণ জানেন শ্রুতি-স্বর্ণেন্দু।
এক মাসের পরিকল্পনায় বিয়ে করেছেন দুজনে। অভিনেত্রীর কথায় ‘আমরা দু’জন জীবনে কোনও কিছুই প্ল্যান করে করিনি। এক মাস আগেই সবটা ঠিক হয়। হঠাৎ করেই একদিন ও এসে আমায় বলল, ‘বিয়েটা করে নিলে কেমন হয়’? আমি হ্যাঁ বলে দিলাম। বাড়ির সবাইকে জানালাম, যে বিয়ে করতে চাই, তোমাদের আপত্তি নেই তো? ওরাও বলল যে নেই। এরপর ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে আপিল করি। ব্যস, বিয়ে করে নিই।’
অভিনেত্রীর কথায় এই বিয়েটা তাঁদের কাছে যুদ্ধ জয় করার মতো। বিয়ের রাত্রে চোখের পাতা এক করতে পারেননি। মনে হচ্ছিল যেন স্বপ্ন দেখছেন। যদিও এটা তাঁদের আইনত বিয়ে। সামাজিক বিয়েও করবেন পরে। শ্রুতি জানিয়েছেন, রেজিস্ট্রি বিয়ের দিন স্বর্ণেন্দু চেয়েছিলেন শ্রুতিকে সিঁদুর পড়াতে। আর সেই জন্যই সিঁদুর দান হয়। যদিও পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করবেন তারা বলে জানিয়েছেন দুজনেই। এখন আপাতত দুজনে দুই বাড়িতে থাকছেন। যাতায়াত করছেন। বিয়ে তো হল কিন্তু বৌভাত? হেসে অভিনেত্রীর উত্তর সেটে একসঙ্গে বসে দুজনে ভাত খেলাম হয়ে গেল বৌভাত!