বর্তমানে বাংলা বিনোদন জগতের একজন খ্যাতনামা শিল্পী অভিনেতা ঋত্বিক মুখার্জী (Writwik Mukherjee)। তার অভিনয় মন জয় করে নিয়েছেন সকলের। নিজের অভিনয়ের দক্ষতায় এবং আত্মবিশ্বাসের জোরেই তিনি বাংলার বিনোদন জগতে প্রতিষ্টিত করতে পেরেছেন নিজেকে। বাঙালি মেয়েদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন ক্রাশ। জি বাংলার পর্দায় দুটি ধারাবাহিকেই তার অভিনয় ভীষণ পছন্দ করেছেন দর্শকরা।
আর পাঁচজনটা বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের মতোই বড় হয়েছেন তিনি। তবে স্নাতক পাশ করার পরই ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন ঋত্বিক। একজন বন্ধুর পরামর্শেই অভিনেতা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যুক্ত হন একটা থিয়েটারে। কিন্তু অর্থ কোথায়? আর যায় হোক বাবার থেকে টাকা চাওয়া যাবে না। এই কথা ভেবেই তিনি যুক্ত হন পার্ট টাইম জবে। কিন্তু তাতেও একেবারেই চলছিল না জীবন। সেই কারণে একপ্রকার বাধ্য হয়েই থিয়েটার ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
ভেবেছিলেন অভিনয় থেকে চিরবিদায় নেবেন ঋত্বিক। এই ভাবনা নিয়েই তিনি যুক্ত হন একটি কোম্পানিতে। একদিন তার একজন বন্ধু তাকে জানান একটি শর্ট ফিল্ম বানাতে চান তিনি। অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছাটা ফের চারা দিয়ে ওঠে। প্রায় ১৭ মাস কাজ করে ফের কোম্পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ঋত্বিক। অভিনেতার হওয়ার তাগিদে একজনের সুবাদে তিনি যুক্ত হন একটি জনপ্রিয় থিয়েটার গ্রুপে। তারই মাঝে হইচই এবং জি ৫এর মতো ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছেন তিনি।
রাস্তার ধারে সব্জি বিক্রি করে দিন চালিয়েছেন ঋত্বিক মুখার্জী (Writwik Mukherjee)
তবে সুদীর্ঘ ভবিষ্যৎ যখন হাতছানি দিচ্ছে তখনই সঙ্গ ছেড়ে দেয় ভাগ্য। চলে আসে করোনা। বন্ধ হয়ে যায় সব। জমানো সব টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল চার মাসে। অভিনেতা জানিয়েছেন তার কাছে ফোন রিচার্জ করারও টাকা ছিল না। ৩৭ দিন বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল ফোন। বাড়িতে বসে বসে অভিনেতাকে গ্রাস করতে শুরু করে ব্যর্থতা। বাধ্য হয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় চট পেতে সব্জি বিক্রি করা শুরু করেন ঋত্বিক। কিন্তু লোকডাউন খুলে যাওয়ার পরই লোকসানে চলতে শুরু করে তার সব্জির ব্যবসা।
আরও পড়ুনঃ জি বাংলায় আসছে নতুন ধারাবাহিক ‘সর্বহারা মেয়ে’, নায়িকার নাম জানলে অবাক হবেন আপনারা!
ভিড়ের রোল দাঁড়িয়ে থাকতেন, ছিল না ডায়লগ, প্রথমা কাদম্বিনী দিয়েই ছোটপর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন ঋত্বিক মুখার্জী
বাধ্য হয়ে একটি দাদার সঙ্গে ট্র্যাক হয়ে বাইরে বাইরে ফুলের টব রপ্তানি করতে চলে যায় ঋত্বিক। মাস খানেক পর যখন ফিরে আসেন তখন কমে গেছে মহামারীর প্রকোপ। একটি ধারাবাহিকের জন্য ডাক পান তিনি। স্টার জলসার প্রথমা কাদম্বিনীর হাত ধরেই টেলিভিশনের জগতে পা রাখেন ঋত্বিক। চরিত্রটি ছিল একজন কলেজ ছাত্রের। সেখানেই ভিড়ের মধ্যে বসে থাকতেন তিনি। ছিল না একটাও ডায়লগ। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে করে গেছেন লড়াই। যদিও সেই প্রয়োজন সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঋত্বিক বলেছেন তারা সেইসময় সুযোগ না দিলে আরও বেশি অর্থসংকটে ভুগতে হত তাকে। এরপরই তিনি সুযোগ পান এই পথ যদি না শেষ হয় ধারাবাহিকের। অভিনেতা জানিয়েছেন অনেকেই তাকে বলেছেন দেখতে ভালো নয়, বডি নেই কিভাবে নায়ক হবেন তিনি? কিন্তু তিনি পাত্তা দেয়নি কারুর কথায়। সততা এবং কঠোর পরিশ্রমই তাকে আজ পৌঁছে দিয়েছে জনপ্রিয়তার শিখরে।