টেলিভিশনের (Television) অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী অনুসূয়া মজুমদার (Anusua Mazumdar)। ‘কুসুমদোলা’, ‘কুন্দ ফুলের মালা’, ‘গাছকৌটো’, ‘অন্দরমহল’— চার-চারটে বাংলা মেগা ধারাবাহিকে একসময় একসঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। দক্ষ হাতে নিজের কাজ এবং সংসার সামলেছেন। একসঙ্গে চারটে মেগায় কাজ করার ক্ষমতা ক’জন রাখে? তবে অভিনেত্রীর আগোগোরাই মন্তব্য, কাজ করতে ভালোবাসেন তিনি। হেকটিক শিডিউল পছন্দ আগাগোড়া।
এক সময় একটি মাল্টিন্যাশনাল সংস্থার দায়িত্বপূর্ণ পদে চাকরি করতেন অনুসূয়া মজুমদার। সেই পদের দায়িত্ব সামলে, নাচ, থিয়েটার এবং অভিনয়ও করেছেন।নাটক থেকেই এই পর্দার জগতে পা দেন তিন। প্রথম সিনেমা ‘বৃত্ত’, যদিও তা মুক্তি পায়নি। নাট্যগোষ্ঠী ‘চেনা মুখ’-এ একসময় অভিনয় করতেন তিনি। সেখানেই তাঁর অভিনয় দেখে পরিচালক মৃণাল সেন ‘মহাপৃথিবী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দেন অভিনেত্রীকে। এরপর আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি অনুসূয়া মজুমদারকে। ‘কালরাত্রি’, ‘ভালো থেকো’, ‘চোখের তারা তুই’, ‘তাহাদের কথা’র মতো একাধিক ছবিতে কাজ করেছেন। ‘মাটি’, ‘গোত্র’ এবং ‘মুখার্জী দার বউ’ এর মতন হিট সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে দেখা মিলেছে তাঁর। দর্শকমহলে নিজের অভিনয়ের জন্য প্রচুর প্রশংসা এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক এক ইন্টারভিউ তে উঠে এলো বেশ কিছু অজানা তথ্য, ৩০ বছরেরও বেশি হয়ে গেল। বেশ কয়েক যুগ কাটিয়ে ফেলেছেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। ধানবাদ থেকে কলকাতার যাত্রাপথ, ধানবাদের মতো ছোট শহর থেকে এসে কলকাতায় মানিয়ে নেওয়া এতটাও সহজ ছিল না তার। ভয়ে ভয়ে থাকতেন শহরের মেয়েদের সঙ্গে পাল্লা দিতে। লাজুক ছিলেন তিনি। নাচ করতেন, গান শিখেছেন। অভিনয় শেখা হয়ে ওঠেনি, কিন্তু ইচ্ছেটা বরাবরই ছিল। স্কুলে কলেজেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতাম। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম অভিনয় খুব টানে। তবে মজার বিষয় এই তিনি কখনওই অভিনয়কে পেশা হিসাবে নিতে চাননি। কত্থক শিখতেন, আর সেটাকেই পেশা হিসাবে নেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।
জীবনে ক’টা বসন্ত পার করলেন ? এই প্রশ্ন করলেই তিনি বলেন,’না, সেটা তো বলা যাবে না।একদমই বলা যাবে না। কথায় আছে না, ডিপ্লোম্যাট ইজ় আ পার্সন হু অলওয়েজ় রিমেম্বরস আ ওম্যানস বার্থডে বাট নেভার হার এজ।’
আরো পড়ুন: টিআরপি ভালো তাও শেষ হয়ে যাচ্ছে জি বাংলার দারুণ জনপ্রিয় এই ধারাবাহিক!
জন্মদিনে উত্তেজনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জানান, জন্মদিন এখন তার কাছে অতটাও বিশেষ কিছু নয়। বছরের পর বছর এই ভাবে কাজের মধ্যে কাটিয়ে দিতে পারলেই খুশি। এই দিনে তো তিনি বেশি করে কাজ করেন। কোনও ছুটি নেই। সবার সঙ্গে থেকে উদ্যাপনের আনন্দই তো অন্য রকম অভিনেত্রী মনে করেন।
অল্প বয়সে বাবা কে হারিয়েc মা এর সঙ্গে কলকাতা আসে ইংলিশ নিয়ে পড়াশোনা করেন। বাড়িতে তেমন অভিনয় এর চল না থাকলেও দাদু পিসি থিয়েটার করেন। তার মা এর নিষেধ কোনো দিনই ছিল না।মায়ের বড় হওয়া বেঙ্গালুরুতে। ওখানেই বিয়ে হয়েছিল। দারুন গান গাইতেন। টেনিস খেলতেন। খুব অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন মা। শুধু মা নয় শ্বশুরবাড়িরও খুব উৎসাহ দিয়েছেন।নাটকের মঞ্চেই তার স্বামীর সঙ্গে তার আলাপ হয়। দীর্ঘ দিন মঞ্চে অভিনয় করেছেন একসঙ্গে। তারপর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, বিয়ে করেন তারা। কোনও অপূর্ণ ইচ্ছার কথা বললে তিনি বলেন , অপূর্ণ থাকা মানেই তো ক্ষোভ থেকে যাওয়া। জীবনে যতটুকু পেয়েছেন তাতেই খুশি অভিনেত্রী। যা পাননি,তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই।