লোকেশ ঘোষ (Lokesh Ghosh) যিনি এক সময় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন, তার ঝুলিতে একের পর এক হিট সিনেমা ছিল—লোফার, আসল-নকল, রাখী-পূর্ণিমা, শ্রীমান ভূতনাথ। তবে আজকের দিনে বড় পর্দায় তার উপস্থিতি আর নেই। তাঁর মা ছিলেন বিখ্যাত নায়িকা এবং বাবা ছিলেন সফল প্রযোজক। রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের মতো অনেক অভিনেতার সঙ্গে তিনি স্ক্রিন ভাগ করেছেন, তবে এখন তাঁর সিনেমা জগতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
কিভাবে অভিনয় জগতে পা রাখলেন অভিনেতা লোকেশ ঘোষ?
লোকেশ ঘোষের সিনেমার জীবন শুরু হয়েছিল পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরে। প্রথম ছবি ছিল ‘মুখ্যমন্ত্রী’, যেখানে অভিনেতা হিসেবে তিনি সুযোগ পান, যখন প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায় চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন। যদিও এই সুযোগটি ছিল খুবই নির্দিষ্ট এবং ভাগ্যের পরিসরে, লোকেশ শুরুর দিকে সিনেমার জগতে প্রবেশে নানা বাধার সম্মুখীন হন। এক সময় লরির দালালি করতেন তিনি, এবং পরিবারের শাসন-ব্যবস্থা থেকে নিজস্ব লড়াইয়ে এই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন।
লোকেশের ছোটবেলা ছিল একেবারে শান্তিপূর্ণ নয়। দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস স্কুল থেকে কলকাতার সেন্ট জ়েভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা শেষ করার পর, তার অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু তার বাবার আত্মাভিমান তার শখ পূর্ণ করতে বাঁধা সৃষ্টি করে। তিনি নিজে সিদ্ধান্ত নেন, বাবা থেকে কোনও সাহায্য নেবেন না। কিন্তু বাবার সহানুভূতির অভাব তাকে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক সময় পরিচিতদের কাছে কাজ না পাওয়ার যন্ত্রণায় ফেলেছিল। একমাত্র অঞ্জন চৌধুরীই তাকে সুযোগ দেন।
সময় বদলেছে, সিনেমার গল্প বলার ধরনও বদলেছে। এখনকার বাংলা সিনেমা মাল্টিপ্লেক্সের দিকে চলে যাচ্ছে এবং সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমাগুলোর গুরুত্ব অনেকটাই কমেছে। এই পরিস্থিতিতে অভিনেতার ক্যারিয়ার কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। তবুও লোকেশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং নিজের ছবি প্রযোজনা করছেন। পারিবারিক পটভূমি ছিল কোটিপতির, কিন্তু বাবা থেকে কোনও সাহায্য না পেয়ে নিজের পথে হাঁটছেন তিনি।
আরও পড়ুন: জিতুর সঙ্গে বিচ্ছেদের এক বছর পার! জীবনে নতুন শুরু করলেন অভিনেত্রী নবনীতা দাস
লোকেশ ঘোষ সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁর বাবার উপার্জিত এক পয়সাও তিনি পাননি। তার দাবি, তার দিদি সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছে এবং তাকে নিজেকে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে নিজের জীবন সংগ্রাম চালাতে হয়েছে। এর পরেও তিনি সিনেমার জগতে ফিরে আসতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।