টলিউডের বর্তমান পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। পরিচালকদের সংগঠন সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সমস্ত পরিচালক একযোগে শুটিং বন্ধ রাখবেন। কিন্তু বাস্তবে চিত্রটা পুরোপুরি ভিন্ন। অধিকাংশ ধারাবাহিকের শুটিং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চালিয়ে নেওয়া হয়েছে। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও প্রযোজকরা স্পষ্টভাবে শুটিং চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন শুটিং ফ্লোরে কাজ শুরু হয়েছে।
তবে এই অবস্থায় চলচ্চিত্রের পরিচালকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ধারাবাহিকের পাশাপাশি সিনেমার পরিচালকরাও শুটিং বন্ধ করছেন না। তাঁদের যুক্তি, ইন্ডাস্ট্রির স্বাভাবিক গতি বজায় রাখতে হলে শুটিং বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতির পরবর্তী সময়ে যখন ইন্ডাস্ট্রি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন কাজ বন্ধ করা মানে ক্ষতির মুখে পড়া।
অন্যদিকে, টেকনিশিয়ানদের ফেডারেশন তাঁদের দাবিতে অনড়। তাঁদের মতে, কাজের পরিবেশ, পারিশ্রমিকসহ একাধিক দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও কার্যকর কোনও সমাধান আসেনি। ফলে তাঁরা শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। এই কারণে টলিউডে একপ্রকার দ্বিধাবিভক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একদিকে পরিচালক, প্রযোজক ও চ্যানেল কর্তৃপক্ষ শুটিং চালিয়ে যেতে চাইছেন, অন্যদিকে টেকনিশিয়ানদের সংগঠন তাঁদের দাবি আদায়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
এমন জটিল পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্ত এবং বিভিন্ন সময়ে সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এবারও তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা করতে পারেন।
তবে যতই টানাপোড়েন থাকুক, বাস্তব চিত্র বলছে, অধিকাংশ শুটিং ফ্লোরেই আজ কাজ চলছে। পরিচালকদের একাংশ শুটিং বন্ধ রাখার পক্ষে থাকলেও, বাস্তব পরিস্থিতিতে তাঁরা অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেছেন। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও প্রযোজকদের সাপোর্ট পাওয়ার কারণে শুটিংয়ের কাজ স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ টলিউডে কর্ম বিরতি ঘোষণা পরিচালক সংগঠনের! অনিশ্চিত বাংলা বিনোদনের ভবিষ্যৎ
এই পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আলোচনা ও সমঝোতার ওপর। ফেডারেশন যদি তাঁদের দাবির বিষয়ে আরও জোর দেয়, তাহলে টলিউডে অচলাবস্থা আরও গভীর হতে পারে। তবে যদি আলোচনার মাধ্যমে কোনও সমাধান আসে, তাহলে এই সংকট থেকে ইন্ডাস্ট্রি দ্রুত বেরিয়ে আসতে পারে। এখন দেখার বিষয়, সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেন।