টলিউড অভিনেত্রী দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায় সম্প্রতি তার প্রাক্তন সম্পর্কে একটি ইউটিউব ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যা ঘিরে এখন চরম বিতর্ক চলছে। সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি এমন কিছু অভিযোগ এনেছেন, যা তার ভক্তদের পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রির অনেককেই চমকে দিয়েছে। একসময় এই সম্পর্ক ছিল সকলের কাছে স্বপ্নের মতো, কিন্তু বিচ্ছেদের পর যেন একের পর এক কালো অধ্যায় সামনে আসতে শুরু করেছে।
দেবচন্দ্রিমার কথায়, তার প্রাক্তন শুধু ‘নাটক’ করেন এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন আমি নাকি মিথ্যে রটাচ্ছি, উনি নির্দোষ। আমি পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আমি কারোর বা কোনও সাংবাদিকের ফোন ধরিনি, বরং আপনি নাটক করছেন।” তিনি আরও বলেন, তার প্রাক্তন সম্পর্কের শুরুতে ভালোবাসার নাটক করলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কটি একপাক্ষিক হয়ে যায়। তার পোষ্যদের দেখিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করা হতো, যা তিনি মেনে নিতে পারেননি। “আমাদের পোষ্য বে-কে দেখিয়ে বে-র কথা দিয়ে মেয়েদের সাথে কথা শুরু করে, সারা বছর বে-র কথা মনে থাকে না। শুধু ওর মৃত্যুবার্ষিকীর দিন ঘটা করে স্ট্যাটাস আপডেট করে রাস্তার কুকুরদের খাওয়ায়, এটা ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়!”

দেবচন্দ্রিমা জানান, তার প্রাক্তন কখনোই তাকে যথাযথ সম্মান দেননি, বরং সম্পর্কটাকে নিজের সুবিধামতো ব্যবহার করেছেন। “আমি তার কাছে ছিলাম শুধু একটা দামি শোপিস, যার যত্নটুকুও করা হতো না।” তিনি আরও বলেন, “যখনই কোনও সম্পর্কে গেছে, আমাকে তাদের সামনে ছোটো করে সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে। প্রথমে বলে, ‘তুমি ইউটিউব করো না কেন?’ তারপর যখন তারা করতে যায়, তখন সমস্তভাবে বাধা দেয় যাতে নিজের চ্যানেল বন্ধ না হয়ে যায়।”
দেবচন্দ্রিমা আরও জানান, তার প্রাক্তন সম্পর্কের মধ্যে সবসময় টাকা ও স্বার্থ জড়িয়ে রাখতেন। অভিনেত্রী বলেন, “আপনি আবার হিসেব দিচ্ছেন কত টাকা খরচ হয়েছে আমাদের পেছনে। আমরা সেই হিসেব দিলে আপনি কি টাকা পাঠাবেন? আমার যে টাকা দিয়ে আপনি দেশ-বিদেশ ঘুরেছেন, ব্লগ বানিয়ে টাকা কামিয়েছেন, সেই টাকা তো ফেরত দিলেন না! নাকি দেওয়ার ভয়ে বিচ্ছেদটা করলেন?” তিনি আরও জানান, “দিনের পর দিন বাড়িতে মিথ্যে বলে আমি গ্রামে যেতাম মাচা শো করতে, যাতে আপনাকে ঘুরতে নিয়ে যেতে পারি বিদেশে।” অর্থাৎ, দেবচন্দ্রিমা নিজেই তার প্রাক্তনের জন্য অনেক কিছু করেছেন, অথচ সেই সম্পর্ক থেকে কোনো সম্মান পাননি।
দেবচন্দ্রিমার অভিযোগ এখানেই থেমে নেই। তিনি জানান, তার প্রাক্তন সম্পর্কে থাকা অবস্থায় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়েছে। করা ভাষায় দেবচন্দ্রিমার বলেন “যে লক্ষ্মী দিনের শেষে টাকা দেয়, আপনি উল্টে তারই গায়ে হাত তোলেন! আমি তো একসময় আত্মরক্ষার জন্য হাত তুলতে বাধ্য হয়েছিলাম, নাহলে হয়তো আজ বেঁচে থাকতাম না।” তিনি আরও বলেন, তার কাছে যদি যথেষ্ট প্রমাণ থাকত, তাহলে তিনি সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নিতেন। “কিরণের কাছে অনেক প্রমাণ আছে, আমার কাছে যদি থাকতো, আমি হাত দুটো ভেঙে দিতাম।”
আরও পড়ুনঃ বউ নয়, শ্বেতা মা হয়ে উঠেছে! “আমি ওর সন্তান হয়ে গেছি!” শ্বেতাকে প্রশংসায় ভরালেন রুবেল!
তিনি আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনেন, যা তার অভিনয় ক্যারিয়ারের সঙ্গে জড়িত। দেবচন্দ্রিমা বলেন, “সাঁঝের বাতির দুটি পর্বে আমার একদিক দিয়ে শুট হয়েছিল, অন্যদিক দেখানোই যায়নি। কারণটা আপনি বেশ ভালো করে জানেন!” অর্থাৎ, তিনি ইঙ্গিত করেছেন যে, তার ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যার প্রভাব তার কাজের উপরও পড়েছিল। ভিডিওর একেবারে শেষে দেবচন্দ্রিমা তার প্রাক্তনকে হুঁশিয়ারি দেন এবং তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেন। “এত কিছুর পরেও যদি কিরণ কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তবে আমি নেব। বাঁচতে হলে ক্ষমা চেয়েও একটা ভিডিও বানান!”
দেবচন্দ্রিমার এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর, এখন সকলের নজর তার প্রাক্তনের প্রতিক্রিয়ার দিকে। তিনি কি সত্যিই ক্ষমা চাইবেন, নাকি নতুন করে শুরু হবে আরও এক পর্ব? আপাতত, এই বিতর্ক টলিপাড়ায় সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।