জি বাংলার ‘ফুলকি’ (Phulki) ধারাবাহিকে ক্রমশ জটিল হচ্ছে ফুলকির অতীতের রহস্য। একদিকে স্বপ্নে মায়ের ঘুমপাড়ানি গানে মায়ের হাতছানি, আর রাজবাড়িতে বড় রানী মাকে দেখে ফুলকির মনের মধ্যে উচাটন। অন্যদিকে ওই রাজবাড়িতেই ধানুর বিয়ে ঠিক হয়, যেখানে পড়তে পড়তে লুকিয়ে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর অতীতের গল্প। আবার সংশোধনাগারে থাকা রুদ্র জানতে পেরে যায় যে ফুলকি হচ্ছে ওই রাজবাড়ির উত্তরাধিকারী। সব মিলিয়ে ফুলকির অতীত এবার সবার সামনে আসার অপেক্ষায়।
আজকের পর্বের শুরুতেই দেখা যায় রাজবাড়ি থেকে ফিরে এসে সবাই ধানুর বিয়ে নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে চারিদিকে খুশির আবহে ফুলকির মন এখনও পড়ে আছে বড় রানীর দিকেই। ফুলকিকে এমন চুপচাপ দেখে সবাই জানতে চায় তাঁর কি হয়েছে? রোহিত জানায় বাড়ি ফেরার আগে হাজার বারণ করা সত্ত্বেও ফুলকি সেই বড় রানীর ঘরে গেছিলো দেখা করতে, তার পর থেকেই এমন করছে। ফুলকি সবাইকে বলে বড় রানীকে দেখে তাঁর খুব কষ্ট হচ্ছে, না জানি কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি প্রতিদিন।
জেঠিমণি বলেন, সারা বাড়িতে রাজকীয়তা থাকলেও ওই একটা অন্ধকার দিক রয়ে গেছে। ফুলকি এবার বলে রানীকে সে ঘুম পাড়ানি গান গাইতে শুনেছে, আর এই কথা শুনে লাবণ্য বলে হয়ত তিনি নিজের সন্তানকেও হারিয়েছেন। এই সব কথার মাঝেই রোহিত জানায় কাল কিছুদিনের জন্য তাঁকে দিল্লি যেতে হবে একটা ওয়ার্কশপ আছে বক্সিং নিয়ে তাই। প্রথমে ফুলকি কিছুটা হতাশ হয়ে গেলেও পরে বলে তাঁর সেখানে যাওয়াতে যদি কেউ কিছু শিখতে পারে তাহলে অবশ্যই যাওয়া উচিৎ।

অন্যদিকে দেখা যায় সংশোধনাগারে রুদ্রের সঙ্গে তাঁর বোন দেখা করতে এসেছে, সে রুদ্রকে জানায় যে ধানুর রাজমহল এস্টেটের বড় কুমারের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। এই কথা শুনে রুদ্রর মাথায় বাজ পড়ে, একদিকে সে জানে যে ফুলকি ওই রাজবাড়ির উত্তরাধিকারী আর অন্যদিকে ধানুও পাকাপাকি ভাবে সেখানে ঢুকে পড়ছে। রুদ্র ভাবে কোনও ভাবে যদি ফুলকি জানতে পেরে যায় যে সে ওই রাজবাড়ির রাজকন্যা তাহলে তো আবার জিতে যাবে সে, আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনা সে।
চিৎকার করে বোনকে জানিয়ে দেয় যত তাড়াাড়ি সম্ভব তাঁকে যেন এখন থেকে বের করে দরকার হলে একদিনের মধ্যে। এরপর পর দিন সকালে ফুলকি রোহিতের ব্যাগ গুছিয়ে দেয় দিল্লি যাওয়ার জন্য কিন্তু মন খারাপ করতে থাকে এটা ভেবে যে বাড়িতে একটা বিয়ে হচ্ছে আর রোহিত থাকবে না। ফুলকির মন খারাপ বুঝতে পেরে রোহিত তাঁকে আশ্বাস দেয় যে তাড়াতড়ি ফিরে আসবে সে কাজটা মিটলেই। তমাল এসে জানায় বাইরে গাড়ি অপেক্ষা করছে রোহিতকে এক্ষুনি বেরোতে হবে নাহলে ঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারবে না।
এরপর রোহিত চলে যেতেই ফুলকি ঘরে বসে নিজেকে বোঝাতে থাকে যে শক্ত থাকতে হবে এই সময়ে তাঁকে, মন খারাপ করলে চলবে না। ফুলকির মনে হয় একবার রোহিতকে ফোন করে কথা বলবে। সেই মতন ফোন হাতে নিতেই লক্ষ্য করে মায়ের অনেকগুলো মিসডকল। মাকে ফোন করতেই ফুলকি জানতে পারে আগের দিন রাতে তাঁর বাবা ওই রাজমহল এলাকায় মাল ডেলিভারি দিতে গিয়ে আর ফেরেননি তাই তাঁর মা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। ফুলকি বুঝতে পারে নিশ্চয়ই আবারও তাঁর বাবার উপর ওই ছিনতাইবাজের হামলা হয়েছে।
ফুলকি সবাইকে জানায় যে সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের দিন যখন সে বাবার সাথে ওই এলাকায় গেছিলো তখন একবার হামলা হয়েছিলো। ফুলকি বলে সে বারবার বারণ করেছিল বাবাকে যে ওই রাস্তা দিয়ে না যেতে। লাবণ্য, তমাল আর বিহালকে সঙ্গে করে ওই রাস্তা দিয়ে ফুলকি তাঁর বাবাকে খুঁজতে বেরিয়ে পরে। কিছুদূর যেতেই দেখতে পায় তাঁর বাবার গাড়ি দাড়িয়ে আছে কিন্তু বাবা নেই শুধু পড়ে আছে তাঁর ফোন। ফুলকি এবার নিশ্চিত হয়ে যে তাঁর বাবার নিশ্চয়ই কোনও বিপদ হয়েছে, কান্নায় ভেঙে পড়ে ফুলকি। ফুলকি বলে সবই তো ঠিক চলছিল তাহলে হটাৎ করে কি হয়ে গেল?
আরও পড়ুনঃ “আমি চাই মানুষ আমাকে আমার কাজের মধ্যে দিয়ে মনে রাখুক! আমি আমার স্ট্রাগল বেচে কাজ জোটাবো না!” অকপট সুদীপ্তা ব্যানার্জি!
একদিকে ধানুর বিয়ে অন্যদিকে রোহিত নেই আর বাবাব বিপদ কি করে সামলাবে সে? লাবণ্য সান্তনা দেয় যে তাঁর বাবাকে খুব তাড়াতড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে। পুলিশ স্টেশনে এফাইয়ার করতে গেলে পুলিশ ফুলকিদের করা অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং ছোটখাটো ব্যাপার বলে উড়িয়ে দিতে যান, কিন্তু ছোট রানী মা এসে বলেন ফুলকিরা তাঁদের আত্মীয় তাই তাদের যে কোনও সমস্যা রাজবাড়িরও সমস্যা। পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে ফুলকির বাবাকে খুঁজতে। বাড়ি ফিরতেই ধানু ফুলকিকে জানায় রুদ্র সুপ্রিমকোর্টে মামলা করেছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে। ফুলকি বলে সে রুদ্রকে শাস্তি পাইয়েই ছাড়বে।