এক সময় ছিল, যখন দুর্গাপুজো মানেই নতুন জামার গন্ধ, সারা বছরের প্রতীক্ষা যেন সেই মুহূর্তেই ফুরোতো। মোড়ে মোড়ে দোকানের ঝলমলে আলো, বাবা-মার সাথে জামা কিনতে যাওয়ার সেই উত্তেজনা—সবটাই যেন ছিল ছোট্ট জীবনের বড় প্রাপ্তি। সময় বদলেছে, অভ্যাস বদলেছে। এখনকার প্রজন্ম চাইলেই পেয়ে যায় নতুন পোশাক, নতুন গ্যাজেট। অথচ সেই চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যেকার ছোট্ট ব্যবধানেই ছিল এক অদ্ভুত আনন্দ।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সন্তানের মধ্যে শৃঙ্খলা, ধৈর্য আর সাধনাশীলতা তৈরি করাটা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। বাবা-মা হিসেবে এই সময়ে দাঁড়িয়ে সন্তানের ভিত মজবুত করে তোলা একটা বড় দায়িত্ব। তারা যেন শুধু আধুনিক হয়ে না ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠে—এই চাওয়া থেকেই আজকাল অনেক মা-বাবাই পুরনো অভ্যাসগুলিকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন নতুনভাবে। ঠিক যেমন করছেন এক টলিউড অভিনেত্রী, যাঁর অভিনয় যেমন সাবলীল, মা হিসেবে তাঁর চেষ্টাও ঠিক ততটাই প্রশংসনীয়।

বর্তমানে তিনি শুধুই একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নন, তিনি একজন মা। কোয়েল মল্লিক এখন দুই সন্তানের মা—একটি ছেলে এবং সদ্যজাত কন্যাসন্তান। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ছেলেকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কোয়েল জানিয়েছেন, তিনি চেয়েছেন ছেলের পড়াশোনার ভিত মজবুত হোক। নিজে যেভাবে ছোটবেলায় অংক করতে গিয়ে কাঁদতেন, সেই অভিজ্ঞতা যেন তাঁর ছেলেকে না হয়। তাই ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি উৎসাহ বাড়াতে নানা উপায়ে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন ছেলেকে।
শুধু পড়াশোনাই নয়, ছেলেকে কোয়েল শিখিয়ে চলেছেন ছোট ছোট অভ্যাসের মাধ্যমে জীবনের বড় শিক্ষাও। তিনি বলেন, ছোটবেলায় আমরা যেমন শুধুমাত্র দুর্গাপুজো কিংবা বড় কোনও উৎসবে নতুন জামা পেতাম, সেই অভ্যাসই ফিরিয়ে আনছেন ছেলের ক্ষেত্রেও। তিনি চান, ছেলে কবির বুঝুক, প্রত্যেক জিনিসের একটি সময় এবং প্রয়োজন থাকে। হঠাৎ করেই কিছু চাইলেই পেয়ে যাওয়া নয়, বরং অপেক্ষার আনন্দটাই আলাদা।
আরও পড়ুনঃ “নায়িকার চরিত্র ছেড়ে দেওয়া সব থেকে বড় ভুল ছিল, এখন সবাই আমাকে খলনায়িকা বানিয়ে দেয়!” আক্ষেপের সুর একদা বাংলা টেলিভিশনের ‘নায়িকা’ মিশমির, তাকে ফের নায়িকা চরিত্রে দেখতে চান?
টলিউডের কুইন হলেও, কোয়েল মল্লিকের মা হিসেবে ভূমিকা একেবারে সাধারণ মানুষের মতোই। তাঁর মতে, সন্তানকে ছোট থেকেই শৃঙ্খলা, মূল্যবোধ এবং ধৈর্যের পাঠ দেওয়া প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মকে শুধুমাত্র স্বচ্ছলতা নয়, সেই স্বচ্ছলতার সঠিক ব্যবহার শেখানোই একজন মা-বাবার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। কোয়েলের এই খোলামেলা বক্তব্য নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা হতে পারে অনেকের কাছেই। কারণ, আজকের দিনে শুধুই সফল হওয়া নয়, ভালো মানুষ হয়ে ওঠাও ততটাই জরুরি।