জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“গর্ভে ধারণ করলেই মা হওয়া যায়না, অনেকে ডাস্টবিনে বাচ্চা ফেলে আসে!” মা না হওয়ার আক্ষেপ নিয়ে মুখ খুললেন অপরাজিতা আঢ্য!

ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা, বিগত প্রায় তিন দশক ধরে বাংলার দর্শকদের কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় একজন অভিনেত্রী। কখনও মা, কখনও শ্বাশুড়ি মা, বোন, কিম্বা শুধু মাত্র একজন স্ত্রী এর ভূমিকায় তাঁর অভিনয় বরাবর মনে দাগ কেটেছে দর্শকদের। তিনি আর কেউ নন, সদা হাস্যময়ী অভিনেত্রী ‘অপরাজিতা আঢ্য’ (Aparajita Auddy)। অভিনেত্রী জীবনের বাইরে, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কেমন মানুষ? আজকের দিনে দাঁড়িয়ে জীবনে কি মা না হওয়ার আক্ষেপ রয়েছে?

অপরাজিতার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৯৭ সালে স্বপন সাহার ‘মনের মানুষ’ ও ‘শিমুল পারুল’ ছবির মাধ্যমে। উকিল পরিবারের মেয়ে তিনি, দেখতে অপরূপ সুন্দরী, তা সত্বেও মন দিয়ে ফেলেন বয়সে অনেক বড় সাউন্ড টেকনিশিয়ান ‘অতনু হাজরা’কে। এরপর দুজনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। অভিনেত্রী বলেন, একদিন অতনুর সাথে তাঁর বাড়ি যেতেই, শ্বাশুড়ি মা বললেন তাঁর ছেলেকে বিয়ে না করতে। কারণ একে তো সে বয়সে অনেকটা বড়, তাঁর উপর মধ্যবিত্ত পরিবার আর একতলা ছোট্ট বাড়ি।

অভিনেত্রী জানান তাঁর বড়লোকদের খুব ভয়, আর সেদিন মনে হয়েছিল এই জায়গাটায় বা এই মানুষটাই তাঁর সাফল্যের সিঁড়ি হতে পারে। তারপর একমাসের মধ্যে আইনি বিয়ে এবং সামাজিক বিয়ে সেরে ফেলেন। সেই সময়ে নিজের বাড়ি থেকে একদম মেনে নেয়নি এই সম্পর্ক। সবাই বলেছিল, “১৮ পেরোতে না পেরোতেই এই বুড়ো লোকটাকে বিয়ে করলে, দেখবে বাবার উকিল এসে তুলে নিয়ে যাবে।” অভিনেত্রী এসবে কোনদিনও কান দেননি, তবে কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব ভালোই পড়েছিল।

Aparajita Auddy, অপরাজিতা আঢ্য, Tollywood, skin care

সেই সময় তিনি সদ্য অভিনেত্রী হয়েছেন আর এমন লোককে কিভাবে বিয়ে করতে পারেন। কাজের অভাবে তিনি পড়াশোনায় মনোযোগ দেন। এরপর আলফা বাংলার হাত ধরে আবার অভিনয় ফেরেন তবে, মুখ্য চরিত্র আর মেলেনি। এই প্রসঙ্গে তিনি টোটা চক্রবর্তীর নাম নিয়ে বলেন, “টোটা ভালো হাত দেখতে পারতো, ওই আমায় বলেছিল ৩৭ বছরে আমি প্রধান অভিনেত্রী হব। সেই সময়ে খুব হেসেছিলাম, কিন্তু বেলাশেষে যখন এতো হিট করল আমার বয়স তখন ৩৭।”

এখনও সেই একতলা বাড়িতেই থাকেন স্বপরিবারে, কখনও মনে হয়না আলাদা থাকি? এই প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রী বলেন, আমি সজীব জায়গা ছাড়া বাঁচব না। আমরা একটা পরিবার আর শেষদিন পর্যন্ত একসাথেই থাকব। সবথেকে বড় কথা ওখানে আমার ঈশ্বর আছেন, যার কাছে আমার সকল দুঃখ কষ্ট আমি ভাগ করে নেই, চিঠি লিখি আর শান্তি করে পুজো করি। এটাই সব নেতিবাচক চিন্তা ধুয়ে যায়।” সুখী দাম্পত্য জীবনে কি নিজের সন্তান থাকা খুব প্রয়জন?

কখনও কি নিজের সন্তান না থাকার দুঃখ কাঁদায় অভিনেত্রীকে? অপরাজিতা এদিন বললেন, “সন্তান গর্ভে ধারণ করলে আর জন্ম দিলেই মা হওয়া যায়না। নিজের সন্তান থাকলেই যে তাঁকে সবটা দিয়ে ভালোবাসতে পারেন সবাই এমনটাও নয়, আমার যেমন মা-বাবার থেকে স্বামী ও শ্বাশুড়ি মায়ের ভালোবাসা বেশি পেয়েছি। নিজের সন্তানকেও অনেকে ডাস্টবিনে ফেলে আসে।” এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “গার্গীকে আমি জন্ম দেইনি ঠিকই, কিন্তু নিজের সন্তান থাকলেও সে ওর জায়গা নিতে পারত না।

গার্গী যেভাবে আমাদের আগলে রাখে, সেটা কেউ করতে পারত না। ও বলেছে বিয়েও করবে না আমাদের দেখতে হবে বলে। এছাড়াও বাড়িতে আমার অনেক বাচ্চা আছে আর ইন্ডাস্ট্রির সবাইও আমায় মা বলে ডাকে, তাই সন্তান না থাকার আক্ষেপ নেই।” অভিনেত্রী সত্ত্বার বাইরে অপরাজিতা এমনই এক মানুষ যাকে নিয়ে সমালোচনা হয় বারবার, কিন্তু তিনি নিজের ছন্দে ও নিজের নিয়মে জীবন বাঁচতে পছন্দ করেন। সবশেষে তাঁর কথা কাউকে কিছু প্রমাণ করার নেই, আমি আমার মতন।

Piya Chanda