জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“দর্শকের ধৈর্য কমেছে, প্রথম দিনেই ছক্কা না মারলে ফক্কা!” “বউ কথা কও চলেছিল তিন বছর, এখন ছ’মাসেই শেষ”—ছোটপর্দা নিয়ে মানালী দে-র হতাশা! ‘বউ কথা কও’য়ের মতো ধারাবাহিক কি আর সম্ভব নয় এই সময়ের বাংলায়? কী মতামত অভিনেত্রীর?

বাংলার ঘরে ঘরে সন্ধেবেলা মানেই টেলিভিশনের পর্দায় বাংলা ধারাবাহিক (Bengali Serial)। কখনও পারিবারিক কাঁটাছেঁড়া, কখনও বা রোম্যান্সে মোড়া সম্পর্কের টানাপোড়েন—এইসব কাহিনি ঘিরেই আবর্তিত হয় বাংলার নিত্যদিনের পর্বগুলি। তবে আজকাল যেন এই ধারাবাহিকগুলো হঠাৎই শুরু হয়ে, তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাচ্ছে। একসময় যেখানে ধারাবাহিক তিন-চার বছর অবধি অনায়াসে চলত, এখন তা ছ’মাস টিকলেই যেন অনেক। কেন এমন হচ্ছে? দর্শকের অভ্যেসে কি বড়সড় বদল এসেছে? এই প্রসঙ্গেই অভিনেত্রী ‘মানালী দে’ (Manali Dey) এবার মুখ খুললেন।

ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দুই জায়গাতেই সমান জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী কিছুদিন আগেই কাজ করেছেন ‘দুগ্গামণি ও বাঘ মামা’ ধারাবাহিকে। তাঁর কথায়, ‘‘আগে এত প্ল্যাটফর্ম ছিল না। ‘বউ কথা কও’ ধারাবাহিকে আমি কাজ করেছিলাম, সেটাই টানা তিন-চার বছর চলেছিল। এখন সেটা আর সম্ভব নয়।’’ তাঁর মতে, এখনকার দর্শক অনেক বেশি অপশন হাতে পাচ্ছেন, ফলে তাঁদের ধৈর্য কমেছে এবং গল্পের গভীরে ঢোকার আগেই তাঁরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

মানালী আরও বলেন, এখন দর্শক সমাজ মাধ্যমে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিওগুলি দেখার সময় যতটা মনোযোগ দেন, ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে ততটা দেন না। তাছাড়াও ধারাবাহিক শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই টিআরপির লড়াই শুরু হয়ে যায়। একেবারে প্রথম দিনেই সাফল্য না পেলে, ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ সঙ্কটে পড়ে। ‘‘ছক্কা মারতে হবে প্রথম দিনেই, না হলে ফক্কা!’’—সোজাসাপ্টা মন্তব্য তাঁর। আর তাই অনেক ধারাবাহিকই সবে মানুষের মনে পৌঁছতে না পৌঁছতেই বন্ধ হয়ে যায়।

এতে শুধু অভিনেতা বা পরিচালক নন, গোটা ইউনিটের ওপর চাপ পড়ে। কারণ, এই ধারাবাহিকগুলোর সঙ্গে বহু মানুষের রুটি-রুজির সংযোগ থাকে। তবে এর মধ্যেও মানালী থেমে থাকতে চান না। তাঁর বক্তব্য, “আমি যদি কোনও কাজ ভাল করি, তাহলে পরের বার আরও ভাল করার ইচ্ছা জাগে। আর যদি কাজ মনমতো না হয়, তাহলেও সেটাকে শিক্ষা হিসেবে নিয়ে পরের কাজটা ভালো করার চেষ্টা করি।”

তিনি মনে করেন, ধারাবাহিক যত দিনই চলুক না কেন, নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করাই শিল্পীর কাজ। তাই গল্প সংক্ষিপ্ত হলেও, সৎ ও মন ছুঁয়ে যাওয়া কাজ করলে সেটাই বড় প্রাপ্তি। বর্তমানে বাংলা ধারাবাহিক জগতে এত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, যে শিল্পীদের মানসিকতা, দর্শকের রুচি এবং প্রযোজকদের চাপ—সবমিলিয়ে তৈরি হচ্ছে এক নতুন চ্যালেঞ্জ। এই নতুন পরিস্থিতিকে কীভাবে সামলাবে বাংলা টেলিভিশনের ইন্ডাস্ট্রি? উত্তর সময়ই দেবে।

Piya Chanda