জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘পুরুষ বন্ধু থাকলেই চরিত্রহীন?’ সমাজের ধ্যানধারণাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের!

অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত মানেই সাহসী পছন্দ, সাহসী বক্তব্য আর নিজের মতাদর্শে অনড় এক নারী। ইন্ডাস্ট্রিতে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন। কিন্তু সমাজ? আজও অনেক জায়গায় একই রকম রয়ে গিয়েছে—বিশেষ করে কোনও মহিলা একটু ব্যতিক্রমী হলেই তাঁর প্রতি রীতিমতো কটাক্ষ আসে। এবার সমাজের সেই চিন্তাধারাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করালেন ঋতুপর্ণা, তাঁর নতুন ছবি ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’ এবং একটি স্পষ্ট বার্তার মাধ্যমে।

নতুন ছবিতে অভিনেতা রাহুল বোসের সঙ্গে কাজ করছেন ঋতুপর্ণা। ছবির নাম ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’। এখানে তিনি এক জন বিবাহিত নারীর চরিত্রে অভিনয় করছেন, যার একজন পুরুষ বন্ধু রয়েছে। এই বন্ধুত্ব যে নিছকই বন্ধুত্ব, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। অথচ বাস্তব জীবনে এখনও সমাজ এইরকম সম্পর্ককে সহজভাবে নিতে পারে না। অভিনেত্রী বলেন, “একজন মহিলার একাধিক পুরুষ বন্ধু থাকলেই তাঁকে চরিত্রহীন বলা হয়, অথচ একজন পুরুষের একাধিক মহিলা বন্ধু থাকলে তা গৌরবান্বিত হয়। সমাজ বদলায়নি।”

Rituparna

শুধু ছবির প্রেক্ষিতেই নয়, নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই এই মন্তব্য করেছেন ঋতুপর্ণা। তাঁর কথায়, “আমাদের কাজের জায়গায় পুরুষদের আধিক্য। আমার অনেক সম্পাদক, চিত্রগ্রাহক, টেকনিশিয়ান বন্ধুরা পুরুষ। তা বলে কি তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখা যাবে না?” তিনি বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্বের কোনও লিঙ্গ হয় না। পুরুষ এবং মহিলার বন্ধুত্ব মানেই শারীরিক সম্পর্ক, এই ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি।

শুধু সম্পর্কই নয়, ঋতুপর্ণা নিজেকে নিয়েও অত্যন্ত স্পষ্ট। শরীর নিয়ে সমাজের ফতোয়াকে মানতে নারাজ তিনি। বললেন, “সব সময় আমাকে এক রকম লাগবে এমনটা কেন হবে? কখনও আমি রোগা, কখনও মোটা হতে পারি। এ নিয়ে এত ভাবার কী আছে?” যখন বিশ্বজুড়ে ফেস লিফ্‌ট, প্লাস্টিক সার্জারির চর্চা, তখন ঋতুপর্ণার এই নিজেকে ভালোবাসার বার্তাও প্রশংসনীয়।

Rituparna

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সাহসী চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’-এ বারবণিতার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তখন এমন চরিত্র করা এতটা সহজ ছিল না। একইভাবে এবার নির্মল চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’-তে এক অন্যরকম গল্পের মুখোমুখি হচ্ছেন দর্শক। রাহুল বোসকে নিয়ে বলেন, “ও খুব খুঁতখুঁতে, জামার ভাঁজও যদি ঠিক না থাকে, সেটি ফিরিয়ে দেয়।” শুটিংয়ের মধ্যেও প্রচারের নির্দেশ দিচ্ছেন অভিনেত্রী, যা প্রমাণ করে, আজও তিনি কাজের প্রতি কতটা নিষ্ঠাবান।

Rimi Datta

রিমি দত্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। কপি রাইটার হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় চার বছরের অভিজ্ঞতা।