টলিউডের জনপ্রিয় জুটি বললেই মাথায় আসে ‘কোয়েল মল্লিক’ (Koel Mallick) এবং ‘জিৎ’ (Jeet) -এর নাম। কোয়েলের প্রথম ছবি ‘নাটের গুরু’, বিপরীতে ছিলেন সেই সময়ের উঠতি অভিনেতা জিৎ। অন্যদিকে জিৎ তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ‘সাথী’ ছবির মাধ্যমে। এই দুই তারকার পর্দার রসায়ন এমনভাবে দর্শকের মনে দাগ কাটে যে, পরবর্তী কয়েক বছর টলিউড (Tollywood) কার্যত এই জুটির দখলে ছিল। একের পর এক হিট ছবি তাঁরা উপহার দেন, আর প্রতিটিই যেন হয়ে ওঠে ‘ব্লকবাস্টার’।
এই জনপ্রিয় জুটিকে ঘিরে কেরিয়ারের শুরুর দিকেই ছড়িয়েছিল প্রেমের গুঞ্জন। তাঁদের বন্ধুত্ব, পর্দার বাইরেও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, একসঙ্গে সময় কাটানো—সবকিছুই জনমনে প্রশ্ন তুলেছিল, তবে কি বাস্তবেও প্রেম? কিন্তু সময়ের সঙ্গে সব গুজব থেমে গিয়েছে। আজ দু’জনেই আলাদা পরিবারে, সুখী দাম্পত্যে, নিজের মতো জীবন বেছে নিয়েছেন—তাতে কোনো দ্বিধা নেই। তবে তাঁদের পর্দার বাইরের সমীকরণ বরাবরই থেকে গেছে শ্রদ্ধা আর বন্ধুত্বের জায়গায়।
এক সাক্ষাৎকারে জিৎ স্বীকার করেছিলেন, কোয়েল তাঁর পারিবারিক বন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সহকর্মী হওয়ায় তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া নিখুঁত। এমনকি শুটিং সেটে কোয়েলের সঙ্গে সময় কাটানোও তাঁর কাছে ‘মজার’। কোয়েল ভুল করলেও জিৎ নাকি সেটা সেটে প্রকাশ্যে বলতেন না, বরং ব্যক্তিগতভাবে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সামলে নিতেন। কোয়েল নিজেও বরাবরই জিৎ-এর সম্পর্কে বলেছেন যে, তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যের।
তাঁরা একে অপরকে এতটা ভালো চেনেন যে, অনেক সময় আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজনই পড়ে না। কোয়েলের চোখে জিৎ একজন ‘জ্ঞানের গুরু’। যদিও তাঁদের প্রথম কাজ থেকেই জিৎ যেন হয়ে উঠেছেন কোয়েলের কেরিয়ারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই প্রসঙ্গে একবার জিৎ বলেছিলেন, “আজকের ‘জিৎ’ যে জায়গায় আছে, তার পেছনে প্রায় পুরো কৃতিত্বটাই কোয়েলের। কোয়েল না থাকলে, ‘জিৎ’ কোনোদিনই সুপারস্টার হতে পারতো না!”
আরও পড়ুনঃ “হয়তো আমি এখনও যোগ্য হয়ে উঠতে পারিনি…” — ১৪ বছর ধরে অভিনয় করেও বড়পর্দায় সুযোগ না পাওয়ার হতাশা সুমনের গলায়!
এই জুটির শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘শেষ থেকে শুরু’ বিপুল দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল, যদিও তারপর থেকে আর একসঙ্গে কাজ করেননি তাঁরা। বর্তমানে দুই সন্তানের মা, কোয়েল অনেকটাই বেছে কাজ করছেন। অন্যদিকে জিৎ একজন সফল প্রযোজক ও অভিনেতা হিসাবে ধারাবাহিকভাবে নতুন ছবি উপহার দিয়ে চলেছেন দর্শকদের। তবে ‘জিৎ-কোয়েল’ নামটা আজও টলিউডের এক চিরসবুজ অধ্যায়, যা নতুন প্রজন্মকেও আকর্ষণ করে অনায়াসে।